বাংলাহান্ট ডেস্ক: হিজাব বিতর্কে (Hijab Controversy) কাদা ছোড়াছুড়ির পালা শেষ হওয়ার নাম নেই। নিজে মুসলিম ধর্মাবলম্বী হয়েও মহিলাদের হিজাব, বোরখা পরার বিপক্ষেই রায় দিয়েছিলেন বাংলাদেশের বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন (Taslima Nasrin)। হিজাব, বোরখা মেয়েদের ‘ভোগের বস্তু’ বলে চিহ্নিত করে। এমনি বিষ্ফোরক দাবি করেছিলেন তিনি। এবার তাঁকে পালটা কটাক্ষে বিঁধলেন এআইএমআইএম প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়েইসি (Asaduddin Owaisi)।
এক সাক্ষাৎকারে তসলিমা বলেছিলেন, বোরখা হিজাবের মতো পোশাক মহিলারা স্বেচ্ছায় পরেন না। তাদের উপরে চাপিয়ে দেওয়া হয়। পুরুষদের নজর থেকে বাঁচার জন্য ঢেকেঢুকে রাখা হয় মেয়েদের, এমনি ভাষায় তোপ দেগেছিলেন তসলিমা। এবার পালটা ক্ষোভ ওগড়ালেন ওয়েইসি।
এক সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে নাম না করেই কড়া বার্তা দেন এআইএমআইএম প্রধান। তিনি বলেন, “আমি এখানে বসে এমন কোনো মানুষকে উত্তর দিতে বাধ্য নেই যিনি ঘৃণার প্রতীক হয়ে উঠেছেন। আমি এখানে বসে এমন কোনো মানুষকে উত্তর দেব না যিনি নিজে একজন শরণার্থী আর নিজের দেশে নিজেকে বাঁচাতে না পেরে ভারতে পড়ে রয়েছেন। আমি এখানে বসে তাঁকে নিয়ে কোনো কথা বলব না।”
ওয়েইসি আরো বলেন, “উদারনৈতিকরা নিজেদের পছন্দের স্বাধীনতা নিয়ে খুশি। তারা চায় সব মুসলিমরা তাদের মতোই হোক। ডানপন্থীরা চায় আমরা আমাদের ধর্মীয় পরিচয় বিসর্জন দিই, যেটা কিনা আমাদের সাংবিধানিক অধিকার।”
প্রসঙ্গত, হিজাব বিতর্ক নিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির সুরেই সুর মিলিয়েছেন তসলিমা। তাঁর কথায়, “আমার মতে একটি ধর্মনিরপেক্ষ দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধিকার রয়েছে পড়ুয়াদের জন্য ধর্মনিরপেক্ষ ইউনিফর্মের নিয়ম বহাল করা।” তাঁর মতে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি পড়ুয়াদের ইউনিফর্ম পরতে বলায় কোনো ভুল হয়নি। কারণ স্কুল, কলেজ ধর্মীয় পরিচয়, কুসংষ্কার দেখানোর জায়গা নয়।
তসলিমা বলেন, লিঙ্গসাম্য, ব্যক্তি স্বাধীনতা, মানবতাবোধের শিক্ষা দেওয়া উচিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। হিজাব, নিকাব ও বোরখা মহিলাদের ‘ভোগ্য বস্তু’তে পরিণত করে বলে মনে করেন তসলিমা। কারণ পুরুষরা মহিলাদের দেখলেই লালায়িত হতে পড়ে। তাই নিজেদের ঢেকে রাখতে শেখানো হয় মহিলাদের। এটা খুবই লজ্জাজনক, বক্তব্য তসলিমার।
লেখিকার স্পষ্ট বক্তব্য, “বিষয়টা ইসলাম কেন্দ্রিক কিনা সেটা নয়। সতেরো শতকের নিয়ম এই একুশ শতকে তো খাটতে পারে না, আর খাটবেও না। আমাদের এটা বুঝতে হবে যে বোরখা বা হিজাব কখনোই মহিলাদের পছন্দ হতে পারে না। যখন পছন্দ করার অধিকার কেড়ে নেওয়া হয় তখনি ওগুলো পরতে হয়। বেশিরভাগ সময়েই পরিবারের সদস্যরাই মহিলাদের জোর করে হিজাব বা বোরখা পরার জন্য।”