বাংলাহান্ট ডেস্ক : তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। বিজেপি (BJP) – সিপিএমের (CPM) বৈঠকের খবর প্রকাশ্যে আসতেই, চরম অস্বস্তিতে দুই শিবিরই। সিপিএমের পক্ষ থেকে একের পর এক সাফাই দেওয়া হচ্ছে। আর রহস্যের পরিবেশ সৃষ্টি করে সিপিএমের (CPM) অস্বস্তি আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে গেরুয়া শিবির। আর সেই কারণেই সিপিএম নেতা তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্যকে (Ashok Bhattacharya) বাড়িতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রেস বিবৃতি দিয়ে বলতে হল, ওই বৈঠকে কোনও রাজনৈতিক আলোচনাই হয়নি!
ঘটনাটি ঘটে গতকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার। এদিন বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্ত ও বিধায়ক শংকর ঘোষ-সহ ১০-১২ জন বিজেপি নেতা শিলিগুড়িতে অশোক ভট্টাচার্যর (Ashok Bhattacharya) বাড়িতে যান। চা-পানের সঙ্গে সেই আলোচনায় নানা প্রশ্ন উঠে আসে। সেখানেই বিজেপি বাংলা ভাগের প্রসঙ্গ তুলে সিপিএমের সাহায্য চায়। খবর সামনে আসার পরেই রাজনৈতিক মহলে চাঞ্চল্য শুরু হয়ে যায়। সংবাদ প্রতিদিন-এ প্রকাশিত খবর নিয়ে সব মহলেই তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। অশোক ভট্টাচার্য বলেন, ‘ব্যাপারটা মোটেই ওই রকম নয়। ওরা দীপাবলি উপলক্ষে এসেছিল। কিছু উপহারও ছিল। আমি বললাম এসেছ যখন চা খেয়ে যাও।’ চায়ের পেয়ালায় চুমুক দিয়ে নাকি রাজু জিজ্ঞাসা করেন, ‘বাংলার কী অবস্থা দাদা?’ অশোক হেসে হেসেই জবাব দেন, ‘যেমনই হোক, বাংলায় বিজেপির কোনও সুযোগ নেই।’ তারপর রাজুর প্রশ্ন, ‘ তাহলে বামেদের কি কোনও সুযোগ রয়েছে?’ শিলিগুড়ির প্রাক্তন মেয়র জবাব দেন, ‘আগামী দিনে কী হবে তা দেখতে থাকুন।’
বাংলা ভাগ নিয়ে বিজেপি সিপিএমের সাহায্য চেয়েছে! এই কথা শুনেই গম্ভীর হয়ে যান অশোকবাবু। বললেন, ‘বাংলা ভাগ করতে গেলে আগুনে হাত পুড়বে বিজেপির। ক্ষোভের আগুনে নিঃশেষ হবে গেরুয়া শিবির। বাংলার মানুষ রক্ত দিয়ে রুখবেন বঙ্গভঙ্গের চক্রান্ত।’ অশোক ভট্টাচার্য এই সাক্ষাৎকে সৌজন্য হিসাবে দেখাতে চাইলেও বিজেপির পক্ষ থেকে বিষয়টিকে মোটেই উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না। অবশ্য, শংকর এবং রাজু প্রকাশ্যে বলছেন যে না বৈঠকে বঙ্গভঙ্গ নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি। তাঁরা নাকি অশোকবাবুর প্রয়াত স্ত্রীর স্মরণসভায় আমন্ত্রণে আসা নিয়ে আলোচনা করেছেন। কিন্তু তাঁদের সঙ্গে যাওয়া বিজেপি কর্মী-নেতারা বলছেন, অনেক কথাই সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে হয়েছে। রাজনীতিবিদরা এক জায়গায় হলে সেখানে রাজনৈতিক আলোচনা তো হবেই।
অশোক ভট্টাচার্য ইতিমধ্যেই প্রতিবাদপত্র দিয়ে ঘটনার বিরোধিতা করেছেন। কিন্তু রাজনৈতিক মহল জানাচ্ছে বিজেপি তো অস্বীকার করছে না যে ববঙ্গভঙ্গ নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি। কারণ বিজেপির তো এটাই লক্ষ্য। আর তা সফল করতে সিপিএমের সাহায্য চাইবে এটাই তো স্বাভাবিক। ২০১৯-এর নির্বাচনে বিজেপি-সিপিএম হাতে হাত মেলাতেই সিপিএমের ৯০% ভোট গেরুয়া শিবিরে যায়। যে কারণে ১৯টি আসনও পেয়ে যায় বিজেপি।