কাটামুন্ডু হাতে নিয়ে ২৫ কিমি হাঁটা, থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করে যুবক বলল ‘আমিই গলা কেটেছি”

বাংলাহান্ট ডেস্ক : সুপ্রাচীনকাল থেকেই চলে আসছে যে কোন খেলায় কে জিতবে কে হারবে সেই নিয়ে আগে থেকে অনুমান করে বাজি ধরা। কখনো বাজিতে রাখা হয় টাকা বা কখনো অন্য কোন জিনিস। হিন্দুদের মহাকাব্য মহাভারতেও দেখা যায় গৌরব এবং পাণ্ডবদের মধ্যে সর্বনাশা পাশা খেলায় বাজিদের সর্বস্ব খুইয়ে ফেলেন প্রথম পাণ্ডব যুধিষ্ঠির এবং তারই ফলস্বরূপ হয় কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ । প্রাণ হারান সমস্ত কৌরব বংশ সহ আরো লক্ষ্য লক্ষ্য মানুষ।

তবে মহাভারতের সেই কুরুক্ষেত্র থেকে শুরু করে এই একবিংশ শতাব্দীতেও মানুষ এখনো বাজি ধরে এবং এই বাজির বলিও হতে হয় কাউকে কাউকে। বাজি ধরার পর এমনই এক মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী হলো অসম। একটি ফুটবল ম্যাচে কে জিতবে সেই নিয়ে দুই দলের মধ্যে বাজি ধরাধরি চলছিল। কিন্তু কে জানত যে এই বাজি ধরার ফলাফল হবে কারোর মৃত্যু? একেবারে পড়শির মাথা কেটে কাটা মুন্ডু হাতে নিয়ে থানায় হাজির হলো পড়শী।

গত সোমবার ঘটনাটি ঘটেছে আসামের সনিৎপুর জেলায়। স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে একটি ছোট্ট ফুটবল ম্যাচের আয়োজন করা হয়েছিল সেই গ্রামে। সেই খেলায় কোন দল জিতবে সেই নিয়ে বাজি ধরেছিলেন দুই গ্রামবাসী এবং এর পরেই ঘটে বিপত্তি। বাজি ধরাকে কেন্দ্র করে খেলা শেষে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে বেধে যায় ঝগড়া। ঝগড়া থেকে মারামারি এবং শেষ পর্যন্ত এর পরিণতি হয় একজনের মৃত্যু।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সেদিন বলিয়া হেমব্রম এবং টুনিরাম মাদৃ নামে ২ গ্রামবাসীর মধ্যে ফুটবল ম্যাচকে কেন্দ্র করে লেগে যায় জোর ঝগড়া। এর আগে বোলিয়া নাকি প্রথমে টুনিরামের কাছে ৫০০ টাকা দাবি করে। টুনিরাম সেই ৫০০ টাকা দিতে না চাওয়ায় মারামারি লেগে যায়।

ফুটবল ম্যাচের শেষে একটি ছাগল পুরস্কার স্বরূপ জেতে টুনিরাম। টুনিরাম সেই ছাগলটিকে নিয়ে কসাইখানার দিকে যাচ্ছিল। সেই সময়ে সে বোলিয়াকেও তার সঙ্গে যেতে বলেছিল। কিন্তু বোলিয়া তার সাথে যেতে রাজি হয়নি। এতে মাথায় খুন চেপে যায় টুনিরামের। আর তারপরেই টুনিরাম একটি ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথা কেটে নেয় বোলিয়ার।

শুধু তাই নয় এর পরে এ যা ঘটে যায় তার রীতিমতো ভয়ংকর। সেই কাটা মুন্ডুটি নিয়ে টুনিরাম ২৫ কিলোমিটার হেঁটে থানায় পৌঁছয়। পুলিশের কাছে সমস্ত ঘটনা জানিয়ে আত্মসমর্পণ করে টুনিরাম এবং তার ধারালো অস্ত্র টিকেও , যা দিয়ে সে খুনটি করেছে , তা তুলে দেয় পুলিশের হাতে।

jpg 20220817 111749 0000

এই ভয়াবহ কান্ড দেখে হতবাক এবং আতঙ্কিত গ্রামবাসী। টুনিরাম এখন পুলিশের হেফাজতে রয়েছে তাকে জেরা চলছে। এবং স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছেন পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

Avatar
Soumita

আমি সৌমিতা। বিগত ৩ বছর ধরে কর্মরত ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমে। রাজনীতি থেকে শুরু করে ভ্রমণ, ভাইরাল তথ্য থেকে শুরু করে বিনোদন, পাঠকের কাছে নির্ভুল খবর পৌঁছে দেওয়াই আমার একমাত্র লক্ষ্য।

সম্পর্কিত খবর