বাংলাহান্ট ডেস্কঃ দৈনিক সংবাদপত্র থেকে শুরু করে ইন্টারনেট, আজকের দিনে দাঁড়িয়েও জ্যোতিষীদের রমরমার নমুনা আমাদের চোখের সামনে প্রতিদিনই। শহর থেকে মফস্বল বাবাজীদের চোখ জুড়ানো হোর্ডিং দেখলে খুব সহজেই এই ব্যবসার পসারটি এই বিজ্ঞানের যুগেও কতখানি তা টের পাওয়াই যায়। এরই মধ্যে এল নতুন দশক হৈ হৈ করে ভবিষ্যৎ বানী হল, এই বছরটি দুরন্ত। সুখ, সমৃদ্ধি উপচে উঠবে অমুক অমুক রাশির, অমুক রাশির বিদেশ যাত্রার যোগ ইত্যাদি ইত্যাদি এরই মধ্যে এল করোনা, বাবাজীদের দশ গোল দিয়ে জানিয়ে দিল ভবিষ্যৎ ভবিষ্যৎবক্তাদেরও সুরক্ষিত নয়।
করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে অমুকসিদ্ধ, অমুক বশীকরণের অদ্বিতীয় জ্যোতিষীরা ( যাদের নিজেদের পেটানো ঢাকে কান পাতা দায়) বাঘ থেকে বিড়াল হয়ে গেলেন। কুহেলিকাময় ভাষায়, আরেহ ঐ তো অমুক পুরাণে এই ব্যাপারে লেখা ছিল, কিন্তু নামটা না ঠিক মনে পড়ছে না বলে পাশ কাটিয়ে চলে যাচ্ছেন। কেউ কেউ তো ওভার কনভিডেন্স সহকারে বলেই দিচ্ছেন, অন্ধকার কাটলেই সুদিন এল বলে, গড়গড়িয়ে চলবে ভাগ্যের চাকা। তবে ঠিক কবে এই অন্ধকার কাটবে সে সম্পর্কে মুখে কুলুপ সব্বার। কেউ কেউ আবার প্লুটো, বেস্পতি আর মকর রাশির একটা জগা খিচুড়ি পাতে ঢেলে দিচ্ছেন অনুগতদের।
আবার পঞ্জিকা দেখিয়ে কেউ কেউ বলছেন, গতবছর দুগ্গা গিয়েছেন ঘোড়ায় চড়ে আগামী বছর আসবেনও ঐ একই বাহনে। সুতরাং ‘ ইয়ে তো হোনা হি থা’। গত দুই শতাব্দীতে যতবার দুগ্গা ঠাকুর ঘোড়া চড়েছিলেন, ততবারই এমন মহামারি দেখা দিয়েছে এব্যাপারে কোনো পরিসংখ্যান তারা দেখাতে পারছেন না।
তবুও আমাদের জীবনে জ্যোতিষকে অস্বীকার করা চলে না৷ কয়েক হাজার বছরের পুরোনো এই শাস্ত্র মূলত মানুষের মানসিক উদ্বেগের ‘সেফটি ভালভ’। চরম অন্ধকারময় দিনে দাঁড়িয়েও অনাগত ভবিষ্যতে আশার আলো দিয়ে মানুষকে জীবনীশক্তি দেয় জ্যোতিষ।