বাংলাহান্ট ডেস্ক: বাংলাদেশে (Bangladesh) রাজনৈতিক অস্থিরতার আবহে অন্তর্বর্তীকালীন মহম্মদ ইউনূস (Mohammad Yunus) সরকারের অধীনে পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু তবুও ধর্মীয় সহনশীলতার প্রশ্নে দেশজুড়ে উদ্বেগ থেকেই যাচ্ছে। দুর্গাপুজোকে ঘিরে প্রতিবারের মতো এ বারও প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা সামনে এল কুষ্টিয়ার মীরপুর উপজেলায়। রবিবার রাতে দুষ্কৃতীরা হামলা চালায় স্বরূপদহ পালপাড়ার দুর্গামন্ডপে। পুজো কমিটি ও স্থানীয় প্রশাসনের সূত্রে জানা গিয়েছে, মন্ডপে থাকা প্রতিমার মধ্যে কার্তিকের হাত ও গলা, সরস্বতীর হাত ও মুকুট ভেঙে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সরস্বতীর বাহন রাজহাঁস এবং কার্তিকের বাহন ময়ূরও ভাঙচুর করা হয়েছে। ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে এলাকায়।
বাংলাদেশের ফের পুজোমন্ডপে ভাঙচুর (Bangladesh)
পুলিশ জানায়, রবিবার সন্ধে আটটা নাগাদ হালকা বৃষ্টি হচ্ছিল। বৃষ্টির কারণে রাস্তাঘাট ফাঁকা ছিল। সেই সুযোগেই হামলাকারীরা মন্ডপে ঢুকে ভাঙচুর চালায়। শুধু তাই নয়, নিরাপত্তার জন্য লাগানো আইপি ক্যামেরা এবং মেমোরি কার্ড খুলে নিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। ফলে ঘটনাস্থলের কোনো ভিডিও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। খবর পাওয়ার পরপরই পুলিশ ও র্যাফ ঘটনাস্থলে ছুটে যায় এবং তদন্ত শুরু করে (Bangladesh)।
বাংলাদেশের (Bangladesh) মীরপুর থানার ওসি মমিনুর ইসলাম জানান, এখনো পর্যন্ত কাউকে আটক করা যায়নি। এ ছাড়া পুজো কমিটির পক্ষ থেকে কোনো লিখিত অভিযোগও জমা পড়েনি। তবে পুলিশ সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত চালাচ্ছে বলে তিনি দাবি করেন। একই সঙ্গে তিনি স্বীকার করেন যে নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও দুষ্কৃতীরা পরিকল্পিতভাবে ক্যামেরা সরিয়ে নিয়ে গিয়েছে। কুষ্টিয়ার জেলা শাসক আবু হাসনাত বলেন, “দুষ্কৃতীরা দুই প্রতিমার ক্ষতি করেছে। এ ব্যাপারে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ ঘটনার পর ক্ষোভ প্রকাশ করেছে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়। পুজো কমিটির সেক্রেটারি শ্রীবাস কুমার দে বলেন, “আমরা পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করেছি। এখন এলাকাবাসীকে নিয়ে বৈঠক করব। তবে এখনো মামলা করার সিদ্ধান্ত হয়নি।” তিনি অভিযোগ করেন, প্রতিবারই এভাবে প্রতিমা ভাঙচুর হলেও যথাযথ শাস্তি না হওয়ায় অপরাধীরা বারবার সাহস পাচ্ছে (Bangladesh)।
আরও পড়ুন:বিয়ের ৫ বছর পর অবশেষে ‘সুখবর’, ৪০ পেরিয়ে সন্তান জন্ম দিতে চলেছেন ক্যাটরিনা! ফাঁস ডেলিভারি ডেট
বাংলাদেশে (Bangladesh) দুর্গাপুজোর সময়ে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা নতুন নয়। প্রতিবছর দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এ ধরনের খবর উঠে আসে। সরকার ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা জোরদারের আশ্বাস দেওয়া হলেও ঘটনাগুলি থামছে না। রাজনৈতিক পরিবর্তনের সময়েও এই সমস্যা বজায় থাকায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে উদ্বেগ বেড়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করলেও ধর্মীয় সম্প্রীতির প্রশ্নে তারা বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে।
কুষ্টিয়ার এই ঘটনার তদন্ত শুরু হলেও স্থানীয়দের আশঙ্কা, যদি দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তবে ভবিষ্যতেও একই ধরনের হামলা চলতেই থাকবে। বর্তমানে প্রশাসনের তৎপরতা ও সরকারের কঠোর অবস্থানই নির্ধারণ করবে, বাংলাদেশের (Bangladesh) সংখ্যালঘু সম্প্রদায় কতটা নিরাপদ বোধ করবে তাদের ধর্মীয় উৎসব পালনের সময়ে।