বাংলা হান্ট ডেস্ক : এমনিতেই দেশ জুড়ে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরোধিতার ঝড়। কোনও ভাবেই দেশে আইন প্রণয়ন করা যাবে না তাই তো ইন্ডিয়া গেট থেকে শুরু করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসি বিরোধী স্লোগান ক্রমশই উস্কে উঠছে। যদিও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী পাকিস্তান থেকে আসা সংখ্যালঘুদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন এবং বিরোধীদের তোপ দেগে কেন পাকিস্তানে নির্যাতিতদের বিরুদ্ধে স্লোগান তোলা হচ্ছে? এমন প্রশ্ন তোলেন।
দেশের বিভিন্ন মহল এমনকি এই দুই আইনের বিরোধিতায় মুখ খুলেছে, এবার সেই তালিকায় যুক্ত হলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিত বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর স্ত্রী এস্থার দুফ্লো। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নাগরিকের মৌলিক অধিকারে সরকারি হস্তক্ষেপ বলে মন্তব্য করলেন এই দুই নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ। সরাসরি নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন ও জাতীয় নাগরিক পঞ্জি নিয়ে মোদী সরকারকে কটাক্ষ করে এনআরসি ও সিএ ন্যূনতম সরকার বা সর্বোচ্চ সুশাসনের লক্ষণ নয় বলে আক্রমণ করেন এই দুই অর্থনীতিবিদ।
যেহেতু নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে দেশের যুব সম্প্রদায় এবং পড়ুয়ারা পথে নেমে আন্দোলন বিক্ষোভ করেছেন সেই পরিপ্রেক্ষিতে বলতে গিয়ে অভিজি বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং এস্থার দুফ্লো নিজেদের ব্যক্তিগত মতামত পোষণ করেছেন। আর এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে যুব সম্প্রদায়ের হতাশার প্রসঙ্গেই মন্তব্য করেছেন তাঁরা। যেহেতু সারা জীবন আপনি যে দেশে কাটালেন হঠাত্ সেই দেশের নাগরিক বলে আপনাকে গণ্য করা হবে না তা হলে আপনি কে? এই প্রশ্ন তুলেই নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন ও নাগরিক পঞ্জি দুটোই মানুষের মৌলিক অধিকারে হস্তক্ষেপ বলে মন্তব্য করেছেন তাঁরা।
একই সঙ্গে এই দুই আইন নিয়ে অবশ্যই পুনর্বিবেচনার জন্য প্রয়োজন রয়েছে বলেও জানান তাঁরা। এই দুই আইন আসলে মধ্যবিত্তের কাছে একটা বড় চ্যালেঞ্জ কারণ অভিবাসীদের সমস্যা নিয়ে জর্জরিত হয়েছে গোটা দেশ তাই অভিবাসীরা মধ্যবিত্তদের চাকরির ওপর থাবা বসাতে পারে বলে মনে করা হলেও সেই ধারণা একেবারেই ভুল বলে জানিয়েছেন তিনি।
তাই এই সমস্যার মোকাবিলা এখনই করা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন নোবেল জয়ী দম্পতি। অন্যদিকে যাঁরা দেশের অগ্রগতির শরিক হতে চায় তা হলে তাদের জন্য কেন দরজা খোলা হবে না? সমস্ত ধর্ম এবং জাতির ঊর্ধ্বে উঠে পাকিস্তানে অত্যাচারিত আহমদিয়া ও শ্রীলঙ্কার তামিলদের বুকে টেনে নেওয়ার বিষয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অভিজি বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়।