বাংলাহান্ট ডেস্ক : নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ প্রোমোটার অয়ন শীলকে গ্রেফতার করেছে ইডি। তারপরে তদন্ত যত এগিয়েছে উঠে এসেছে শ্বেতা চক্রবর্তী নামে এক রহস্যময়ী নারীর নাম। আর শ্বেতার সম্পর্কে খোঁজ খবর নিতে গিয়েই দুঁদে আধিকারিকরা জানতে পেরেছেন একই পঞ্চায়েতে কর্মরত ছিলেন অয়ন শীল (Ayan Shil) আর শ্বেতা চক্রবর্তী। এমনকি, তারা নিজেদেরকে মামা-ভাগ্নী হিসেবে পরিচয়ও দিতেন।
সূত্রের খবর, বলাগড়ের ডুমুরদহ নিত্যানন্দপুর-১ গ্রাম পঞ্চায়েতে একশ দিনের কাজের স্কিল টেকনিক্যাল পার্সন হিসেবে কাজ করতেন নৈহাটির শ্বেতা। সেই পঞ্চায়েতেই অয়ন শীল নির্বাহী সহায়ক বা অ্যাসিস্ট্যান্ট এক্সিকিউটিভ পদে কর্মরত ছিলেন। শ্বেতা ২০১৮ সালে চাকরি ছেড়ে দেওয়ার পরে ২০২০ সাল থেকে আর চাকরি করতেন না অয়নও। তার আগেই অবশ্য কাজে অনিয়মিত হওয়ায় শোকজ করা হয়েছিল তাঁকে।
পঞ্চায়েতের উপপ্রধান শ্যামাপ্রসাদ রায় বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, অনেকসময়েই অয়নের গাড়িতে যাতায়াত করতেন শ্বেতা। তিনি আরোও বলেন, “এমনও হয়েছে দিনের পর দিন অফিসে আসেননি অয়ন। অথচ বেতন তুলেছেন। বিষয়টি জানিয়ে অয়নকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য বলাগড়ের বিডিওকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। এরপরেই বিডিও তাঁকে শোকজ করেছিলেন।”
তবে, নিয়োগ দুর্নীতির সঙ্গেই যে শুধুমাত্র অয়নের নাম জড়িয়েছিল এমনটা নয়, বছর তিনেক আগে
অয়নের প্রতিবেশী বলরাম দাস অয়নের ছেলের জন্মদিনের ক্যাটারিংয়ের কাছ করতে গিয়েও প্রতারিত হয়েছিলেন। এক লক্ষ ১২ হাজার টাকার চুক্তি হলেও মাত্র কুড়ি হাজার টাকা দিয়েছিলেন অয়ন। একই ভাবে, এবিএস টাওয়ার তৈরির সময় অয়নের বন্ধু বিশ্বনাথ মোদক তাঁকে কুড়ি লাখ টাকা দিলেও এখনও তিনি অয়নের থেকে তিন লাখ টাকা পান।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে ব্যান্ডেলের তৃণমূল নেতা শ্রীকুমার চট্টোপাধ্যায় আত্মহত্যা করেছিলেন। তিনি সুইসাইড নোটে অয়নের নাম লিখেছিলেন বলেও জানা যায়। অভিযোগ, চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে বিভিন্নজনের কাছ থেকে তিনি দু’কোটি টাকারও বেশি তুলে অয়নকে দিয়েছিলেন। সুইসাইড নোটেও সেকথার উল্লেখ ছিল। ফলে, সব মিলিয়ে বোঝা যায়, পঞ্চায়েতে চাকরি করার সময়েই নিয়োগ দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছিলেন অয়ন।