বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্ক: বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণারত কিছু জীবাশ্মবিদরা সম্প্রতি চীনের দক্ষিণে একটি অতি বিরল, সংরক্ষিত ডাইনোসরের ভ্রূণের সন্ধান পেয়েছেন। সেটি একটি জীবাশ্ম হয়ে যাওয়া ডিমের ভিতর কুঁচকানো অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে।
তাদের মতে ভ্রূণটি এখনও ঠিকঠাক অবস্থায় রয়েছে যদিও সেটি প্রায় ৭২ মিলিয়ন বছর পুরোনো। ভ্রূণটির নামকরণ করা হয়েছে ‘বেবি ইংলিয়াং’। বং জিয়াংসি প্রদেশের গাঞ্জো শহরের শাহে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে ‘হেকাউ ফর্মেশন’ এর পাথরের নীচে পাওয়া গেছে। জীবাশ্মবিদদের মতে, ভ্রূণটি দাঁতবিহীন ঠোঁটযুক্ত থেরোপডের একটি প্রজাতির অন্তর্গত, যা ওভিরাপ্টোসোরস নামেও পরিচিত।
বিজ্ঞানীদের মতে ভ্রূণটি একটি বিশেষ ভঙ্গিমায় রয়েছে। যে ভঙ্গিমা দেখে মনে বিকাশের আগে ভ্রূণ পর্যায়ে তা পাখিদের থেকে খুব আলাদা নয়। প্রকৃতপক্ষে এটি অন্যান্য ডাইনোসরের তুলনায় পাখিদের বেশি স্মরণ করিয়ে দেয়। ভ্রূণের নমুনাটির মাথাটি তার শরীরের নীচে ছিল এবং উভয় পাশে পা থাকায় ডিমের ভোঁতা প্রান্তে কিছুটা কুঁকড়ে গেছে। সাধারণত এক একটি ওভিরাপ্টোরোসর মাথা থেকে লেজ পর্যন্ত প্রায় ১০.৬ ইঞ্চি লম্বা হতে পারে।
ভ্রূণের এই পুরো ভঙ্গিটি অনেকটা পাখির ভ্রূণের ‘টুকিং’-এর মতো। এই পদ্ধতিটি সফল হ্যাচিং নিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র দ্বারা নিয়ন্ত্রিত একটি ভ্রূণের গুরুত্বপূর্ণ ভ্রূণ বৈশিষ্ট্য। বেবি ইংলিয়াংকে এই অবস্থানে দেখে জীবাশ্মবিদরা ইঙ্গিত দিয়েছে যে এই বিশেষ অবস্থানটি কেবল আধুনিক পাখিদের মধ্যেই থাকতে পারে, এমনটা নয়। এটি প্রথম নন-এভিয়ান থেরোপড ডাইনোসরদের ভ্রূণের মধ্যেও দেখা যেতে পারে।
গোটা প্রজেক্টের সহ-লেখক এবং এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের মেরুদণ্ডী জীবাশ্মবিদ স্টিভ ব্রুসেট একটি বিবৃতিতে বলেছেন, “এই ডাইনোসরের ভ্রূণটি তার ডিমের মধ্যে আমার দেখা সবচেয়ে সুন্দর ও নিখুঁত জীবাশ্মগুলির মধ্যে একটি। এই ছোট্ট প্রসবপূর্ব ডাইনোসরটি দেখতে অনেকটা তার ডিমের ভেতর কুঁচকানো বাচ্চা পাখির মতো। এই মিল প্রমাণ করে যে আজকের পাখির বৈশিষ্ট্যগুলি তাদের পূর্বপুরুষ ডাইনোসরদের মধ্যেই প্রথম বিকশিত হয়েছিল।”