‘আর সহ্য করা যাচ্ছে না, এত…’, ভোটের মাঝেই ফের বিস্ফোরক TMC বিধায়ক মনোরঞ্জন

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রাজ্যজুড়ে লোকসভা ভোটের (Lok Sabha Election 2024_ দামামা বেজে গিয়েছে। ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে প্রথম দফার ভোটগ্রহণ। এই আবহে ফের শিরোনামে উঠে এল তৃণমূলের (TMC) গোষ্ঠী কোন্দল। দলের মধ্যে ঘাপটি মেরে রয়েছেন ‘বিজেপির দালাল’রা, তাঁরা বিজেপির থেকে ভালোরকম ‘দক্ষিণা’ পেয়েছেন, সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে এমনই বিস্ফোরক দাবি করলেন বলাগড়ের তৃণমূল বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী (Manoranjan Bapari)।

চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনে হুগলি কেন্দ্র থেকে ‘দিদি নম্বর ওয়ান’ রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Rachana Banerjee) দাঁড় করিয়েছে তৃণমূল। রোদ, জল মাথায় নিয়ে রোজ প্রচার করছেন তিনি। শবিবার বলাগড় বিধানসভা এলাকায় সভা ছিল তাঁর। সেখানে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় বিধায়ক মনোরঞ্জন সহ আরও অনেকে। সেই সভার পরেই সমাজমাধ্যমে সরব হন বলাগড়ের বিধায়ক (Balagarh TMC MLA)।

   

মনোরঞ্জন লেখেন, ‘আর সহ্য করা যাচ্ছে না। এত অবহেলা অসম্মান সত্যিই মানুষের পক্ষে সহ্য করা কঠিন। সকাল থেকে শরীর খুব খারাপ ছিল। বার বার পায়খানায় যেতে হচ্ছিল। আজ বলাগড় বিধানসভায় আমাদের প্রার্থী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচারে আসার কথা। না গেলে মানুষের কাছে একটা খারাপ বার্তা যেতে পারে। তাছাড়া জেলা সভাপতি অরিন্দম গুইন ও প্রার্থীর এক নিজস্ব সহায়ক ফোন করে আমায় ডেকেছিল। তাই যেতে হল’।

আরও পড়ুনঃ সন্দেশখালির মহিলাদের বানানো পিঠেতে মজেছেন কুণাল! ‘রাত ১২টায় বানাতে ডাকবেন’! তোপ নেটিজেনদের

তৃণমূল বিধায়ক জানান, একতারপুরের বকুলতলায় জনগর্জন সভা ছিল। সময়মতো তিনি সেখানে পৌঁছে যান। দলীয় প্রার্থী রচনা তখনও সেখানে এসে পৌঁছননি। স্থানীয় এক নেতা সেই সময় বক্তব্য রাখছিলেন। এরপর জেলা সভাপতি বক্তব্য রাখার পর তাঁর পালা আসে। কিন্তু মনোরঞ্জনের অভিযোগ, তিনি মিনিট চারেক বক্তব্য রাখার পরেই একজন নেতা এসে তাঁকে বক্তব্য শেষ করার জন্য বলেন। অনেকেই বক্তব্য রাখবেন বলে বসে আছেন, তাই তাঁকে ছোট করে বলে শেষ করতে বলেন ওই নেতা।

বলাগড়ের বিধায়ক লিখেছেন, ‘এলাকাটা ওপার বাংলা থেকে আগত রিফিউজি মানুষ অধ্যুষিত। আমিও সেই মানুষ। আমি বলছিলামও সিএএ নিয়ে। যেটা নিয়ে আমার বিস্তর পড়াশোনা। অন্য কেউ এখানে এই নিয়ে তেমন কিছু জানে বলে আমার জানা নেই। রিফিউজি জীবনের ওপর কী ভয়াবহ বিপদ ঘনিয়ে আসছে মন দিয়ে শুনছিল সবাই। হঠাৎ সেই সময় আমাকে থামিয়ে দেওয়া, এর অর্থ কী?’

balagarh tmc mla manoranjan bapari

এরপরেই দলের একাংশকে নিশানা করে মনোরঞ্জন লেঝেন, ‘এর অর্থ অতি সোজা। আমার পুরো বক্তব্য শোনার পর ওই রিফিউজি মানুষরা আর কেউ বিজেপিকে ভোট দেবে বলে মনে হয় না। আমাদের দলের মধ্যে ঘাপটি মেরে বসে থাকা বিজেপির দালালদের সেটা মনঃপুত নয়। হয়তো এরা বিজেপির কাছ থেকে ভালো পরিমাণ দক্ষিণা পেয়ে বসে আছে। তাই ওঁদের প্রার্থী হেরে যায় সেটা করতে দিতে পারে না। তাই আমাকে পুরো বক্তব্য বলতে না দিয়ে মাঝপথে থামিয়ে দিল। আজ এটা হল এমন নয়। বারবার আমার সঙ্গে এমনটাই করা হয়। যা নিয়ে আমি আগেও লিখেছি’।

দীর্ঘ পোস্টের শেষে মনোরঞ্জন লিখেছেন, এবার থেকে আর ‘ওঁদের’ সঙ্গে কখনও থাকবেন না তিনি। অনেক হয়েছে আর নয়। এবার থেকে ফের ‘একলা চলা’ শুরু করবেন তিনি। তৃণমূল বিধায়ক লেখেন, ‘আর একটা কথা, ওঁরা আমাকে যে বক্তব্য রাখতে দেয়নি, কাল ওই একই জায়গায় আমি একলা মিটিং করে পুরোটা মানুষকে শোনাবো। এটা আমার একটা দায়বদ্ধতা উদ্বাস্তু রিফিউজি শরণার্থী মানুষদের কাছে দেখবো কাল কে আমাকে আটকাতে পারে!’

Sneha Paul
Sneha Paul

স্নেহা পাল, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তরের পর সাংবাদিকতা শুরু। বিগত ২ বছর ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর