বাংলাহান্ট ডেস্ক : ছোট্ট গ্রামের পাশে নদীর উপর দুখানি বাঁশের সাঁকো। এই গ্রামে দল চেনা হয় ঝান্ডা দেখে নয়, কে কোন সাঁকো দিয়ে নদী পার হল তা দেখেই। অবাক লাগছে বুঝি? চাঞ্চল্যকর হলেও এমনটাই নিত্যদিন ঘটে চলেছে ফালাকাটার বড়ডোবা গ্রামে।
গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে মুজনাই নদী। এমনিতে নিরীহ হলেও বর্ষায় ফুলে ফেঁপে ওঠে মুজনাই। ফলে মুল ফালাকাটা থেকে বিচ্ছিন্ন বড়ডোবা হয়ে পড়ে এক বিচ্ছিন্ন ভুখন্ড। তুঙ্গে ওঠে মানুষের সমস্যা। বহুবছর ধরে সরকারকে জানিয়েও ফল হয়নি কিছুই। সেতু তৈরি হয়নি মুজনাইয়ের উপর। শেষমেষ ওই নদীর উপর দুখানি সেতু বেঁধেছে তৃণমূল এবং বিজেপি। তৃণমূল সমর্থকরা নদী পার হন তৃণমূলের বাঁধা সাঁকো দিয়ে আর বিজেপি সমর্থকরা বিজেপির। এই নিয়মের অন্যথা নেই বড়ডোবা গ্রামে। ফলে স্পষ্টতই চোখে ধরা পড়ে রাজনৈতিক মতানৈক্য এবং পারস্পরিক বিভেদ।
আলিপুরদুয়ারের ফালাকাটার এই গ্রামে বাম আমল থেকেই সেতুর দাবিতে চলে আসছে আন্দোলন। হয়েছ অনশনও। কিন্তু ফল মেলেনি কিছুতেই। সম্প্রতি ফালাকাটা পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে গ্রামটিকে। কিন্তু ‘পুরবাসী’ তকমা মিললেও অধিকার না মেলা অবধি নিজেদের পুরভোটের ভোটার ভাবতে কিছুতেই পারছেন না বড়ডোবার বাসিন্দারা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বর্ষাকালে নৌকার মাধ্যমে নদী পারাপার করলেও বাকি সময় ভরসা ওই বাঁশের সাঁকোই। যা শুধু অসুবিধারই নয় বিপজ্জনকও বটে। সেতু না থাকায় প্রতিদিন ভুগতে হয় ছাত্রছাত্রী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ সকলকেই। ভোটের আগে ভুরিভুরি প্রতিশ্রুতি মিললেও কাজের কাজের দেখা মেলেনি আজ অবধি। সার হয়েছে প্রার্থীদের কথাই। ফলে এবার ভোট নিয়ে কোনও চাঞ্চল্যই নেই এই গ্রামে। তবে উচ্ছাসের অভাব থাকলে কী হবে, প্রতিবারের মতই ‘জিতলে এই সেতু বানিয়েই ছাড়ব’ এহেন দাবি নিয়েই এবারও বডডোবাবাসীর দুয়ারে হাজির সব দলের প্রার্থীরাই। আদৌ কি সমাধান হবে এই সমস্যার? সেইদিকেই তাকিয়ে গ্রামবাসীরা।