বাংলাহান্ট ডেস্ক: বাংলাদেশের (Bangladesh) শীর্ষ দুই সংবাদপত্র ‘প্রথম আলো’ ও ‘ডেলি স্টার’-এর কার্যালয়ে চালানো ব্যাপক লুটপাটের ঘটনায় ধৃত এক সন্দেহভাজনের জেরায় চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস হয়েছে। তদন্তকারী সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার তেজগাঁওয়ের কুনিপাড়ার এক বাসিন্দাকে চৌদ্দগ্রাম, কুমিল্লা থেকে গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বীকার করেছেন, তিনি উক্ত ঘটনায় এক লক্ষ তেইশ হাজার টাকা লুট করেছিলেন। তাঁর কাছ থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকা উদ্ধার করা গেলেও বাকি টাকা তিনি ঢাকার মহম্মদপুর এলাকা থেকে একটি টেলিভিশন ও রেফ্রিজারেটর কিনেছেন। পুলিশ ইতিমধ্যে এসব জিনিস বাজেয়াপ্ত করেছে।
অগ্নিসংযোগের আড়ালে বাংলাদেশের (Bangladesh) দুই সংবাদমাধ্যমের অফিসে দেদার লুটপাট
গত বৃহস্পতিবার রাতে ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদির মৃত্যু সংবাদকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে বিক্ষোভের সূচনা হয়। উত্তাল পরিস্থিতিতে ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনাসহ বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় নেমে আসেন। এ সময় ঢাকায় ‘প্রথম আলো’ ও ‘ডেলি স্টার’-এর অফিসে ব্যাপক তাণ্ডব ও লুটপাট চালানো হয়। হামলাকারীরা কার্যালয়ে প্রবেশ করে কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ক্যাশ কাউন্টারের অর্থ ও মূল্যবান সরঞ্জাম লুট করে এবং ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটায়।
আরও পড়ুন:সম্প্রীতির কবির সমাধির পাশেই ভারতবিদ্বেষী হাদির কবর! ক্ষোভ প্রকাশ নজরুলের পরিবারের
এই তাণ্ডবের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের অনেকে আগে থেকেই বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্ত ছিলেন; কেউ মাদক কারবারের সাথে জড়িত, আবার কেউ আগুন ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনার সাথে যুক্ত। পুলিশের দাবি, হামলার ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে অতিরিক্ত ৩১ জন সন্দেহভাজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। ‘প্রথম আলো’ রবিবার আনুমানিক ৩০০ থেকে ৪০০ অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলা দায়ের করেছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূসের ‘প্রেস উইং’ এই লুটপাটের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছে। সংবাদমাধ্যমের ওপর এই হামলা গণতন্ত্র ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতার জন্য একটি গুরুতর হুমকি বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়। প্রাথমিক তদন্ত অনুযায়ী, এই হামলায় দুই সংবাদপত্রের মোট ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৩২ কোটি টাকা বলে অনুমান করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন: ক্রমশ বাড়ছে উত্তেজনা! ভারতের এই মোক্ষম পদক্ষেপে ঝটকা খেল বাংলাদেশ
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার তদন্ত আরও জোরদার করা হয়েছে এবং ফুটেজ ও সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে আরও গ্রেফতারীর আশা করা হচ্ছে। এই হামলা ও লুটপাট কেবল সংবাদপত্রের সম্পত্তির উপরই আঘাত নয়, বরং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় মতপ্রকাশের স্বাধীনতার উপরও এক বড় ধরণের আক্রমণ বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।












