বাংলা হান্ট ডেস্ক : বাংলাদেশের (Bangladesh) সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে জ্বলে উঠেছে প্রতিবাদের এক নতুন মশাল। বাংলাদেশের (Bangladesh) হিন্দুদের বিরুদ্ধে সংখ্যাগরিষ্ঠদের অত্যাচারের অভিযোগ বহুদিনের। তবে ৫ ই আগস্ট বাংলাদেশের (Bangladesh) সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের ঘটনা সহ্যের সমস্ত সীমা পার করে দেয়। আর তারপরেই বাংলাদেশের (Bangladesh) গেরুয়া বসনধারী সাধুরা প্রথমবার এক জোরদার প্রতিবাদ সমাবেশ করেন বাংলাদেশের রাস্তায়।
বাংলাদেশের (Bangladesh) সনাতনীদের নামে দেশদ্রোহিতার অভিযোগ
সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের এই সমাবেশের ভিড় দেখে মাথা ঘুরে যাওয়ার হয়েছিল অনেকেরই। চট্টগ্রামের লালদীঘির ঐতিহাসিক ময়দানের এই সভায় এত মানুষের জমায়েত দেখে বিস্মিত হয়েছিলেন অনেকে। এমনকি উদ্যোক্তারাও স্বীকার করে নিয়েছেন এত মানুষের ভিড় তাদের ধারণার বাইরে ছিল। পুলিশ প্রশাসনও আগাম জানতে পারেননি, লালদীঘি ময়দানে কত মানুষ জমায়েত হতে পারে।
কিন্তু এই মুহূর্তে এই সভা শিরোনামে উঠে এসেছে এক অন্য কারণে। অভিযোগ ওঠে চট্টগ্রামের লালদীঘির সভার পর সেখানে জাতীয় পতাকার অমর্যাদা করেছেন উপস্থিত হিন্দু সাধুরা। এই ঘটনার জেরে দেশদ্রোহিতার মামলা করে প্রধান দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র তথা চট্টগ্রামের পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস”কে।
এছাড়াও আরও ১৯ জনের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার মামলা দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগ গত শুক্রবার চট্টগ্রামের লালদিঘির সভা শেষে আশেপাশে টানানো সমস্ত জাতীয় পতাকা টেনে ছিঁড়ে ফেলা হয়েছিল। প্রসঙ্গত ওই সমস্ত পতাকা টানানো হয়েছিল কোটা বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময়। এদিন সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ওই সভায় অন্যতম বক্তা ছিলেন অভিযুক্ত অধ্যক্ষ চিন্ময়কৃষ্ণ দাস।
ওই সভা থেকে সেদিন তিনি আট দফা দাবি পেশ করার পাশাপাশি স্পষ্ট জানিয়ে দেন তাঁদের দাবি না মিটলে ঢাকার উদ্দেশ্যে তাঁরা লং-মার্চ করবেন। সেইসাথে এদিনের সভার দাঁড়িয়ে জোরালো কন্ঠে সরকার ও দেশের রাজনৈতিক দলগুলিকে কড়া হুশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন সনাতনীদের বাংলাদেশ থেকে তাড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে। শেষ রক্তবিন্দু থাকতে আমরা বাংলাদেশ ছেড়ে যাব না।
আরও পড়ুন : গুরুত্ব হারাচ্ছেন নবীন পট্টনায়েক! ক্ষমতায় আসার ৬ মাসের মাথায় বড় সিদ্ধান্ত ওড়িশা সরকারের
প্রসঙ্গত এই অভিযুক্ত চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ইসকনের সাধু হলেও ইসকনের দাবি চিন্ময় কৃষ্ণ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের স্বার্থে এই লড়াই তাঁর একান্ত ব্যক্তিগত। এর সাথে ইসকনের কোন সম্পর্ক নেই। একটি ভিডিও বার্তায় জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। পাশাপাশি সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের দাবি গত শুক্রবারের লালদিঘির সমাবেশের ভিড় দেখে ভয় পেয়ে গিয়েছে প্রশাসনের একাংশ সহ উগ্রই ইসলামপন্থী দলগুলি।
তাই ওই সভা নিয়ে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে, আর সনাতনীদের নামে দেশদ্রোহিতার মিথ্যা মামলা করা হয়েছে। এদিন চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হওয়ার পরেই প্রতিবাদে সরব হয়েছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। এই মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে শুক্রবার বাংলাদেশের হিন্দু সমাজকে আরো একবার পথে নামার আহ্বান জানিয়েছেন একাধিক সংগঠন। শুক্রবারের কর্মসূচি ঘোষণা করে জানানো হয়েছে সোমবারের মধ্যে যদি দেশদ্রোহীদের মামলা প্রত্যাহার না করা হয় তাহলে তাঁরা বড় কর্মসূচির ডাক দেবেন।