বাংলাহাণ্ট ডেস্ক: কখনও শুনেছেন চুরি করতে এসে নিজেই পুলিশকে ফোন করে ডাকল চোর? এমনই অদ্ভুত একটি ঘটনা নিয়ে সোরগোল পড়ে গিয়েছে নেটপাড়ায়। চুরি করতে গিয়ে নিজেই পুলিশকে ফোন করে আসতে বলল ওই ব্যক্তি। ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে তাকে পাকড়াও করে নিয়েও গেল পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে বাংলাদেশের (Bangladesh) বরিশালে। এ হেন ঘটনায় অবাক খোদ পুলিশও।
বরিশালের পুলিশ আধিকারিকরা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, এমন ঘটনা তাঁরা নিজেদের চাকরি জীবনে এই প্রথম দেখলেন। আগে কোনওদিন এমন অদ্ভুত ঘটনা ঘটেনি। সেই গুণধর চোরের নাম ইয়াসিন খাঁ। মঙ্গলবার রাতে বরিশাল সদর উপজেলার চর কাউয়া ইউনিয়নের এ আর খান বাজারে গিয়েছিল সে। সেখানে ঝন্টু মিয়া নামের এক মুদির দোকানের তালা ভেঙে ভিতরে চুরি করতে ঢোকে ইয়াসিন। দোকানের জিনিসপত্র নিয়ে একাধিক ব্যাগেও ভরে ফেলে সে।
কিন্তু এতেই হয় বিপদ। চুরি করতে করতে কখন যে সকাল হয়ে গিয়েছে তা খেয়াল করেনি ইয়াসিন। তার সম্বিত ফিরলে বুঝতে পারে ভোরের আলো ফুটে গিয়ে বাজারে লোকজনের আনাগোনা শুরু হয়ে গিয়েছে। সে বোঝে, সেই সময় সেখান থেকে বাইরে বেরোলে ধরা পড়ার ভয় রয়েছে তার। একইসঙ্গে গণপিটুনি খাওয়ারও একটা সম্ভাবনাও রয়েছে। তাই আর দেরি না করে নিজেই ফোন করে বসে পুলিশকে। নিজের মোবাইল থেকে বাংলাদেশের জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯ ডায়াল করে সে।
ওই এলাকার বন্দর থানার ওসি মো. আসাদুজ্জামান জানান, ৯৯৯-এ ফোন করে ইয়াসিন জানায় যে সে খুব বিপদে পড়েছে। তাকে যেন পুলিশ গিয়ে উদ্ধার করে নিয়ে আসে। সে তার লোকেশনও পুলিশকে জানায়। এই ফোন পেয়ে সেখানে পৌঁছয় পুলিশ। তারা গিয়ে দোকানের ভিতর থেকে ইয়াসিনকে ‘উদ্ধার’ করে। পরে পুলিশকে সব কিছু জানায় ইয়াসিন। তার বক্তব্য শুনে রীতিমতো হকচকিয়ে যান পুলিশকর্মীরা।
এক পুলিশ আধিকারিক বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “আমার এতদিনের চাকরি জীবনে এমন ঘটনা এই প্রথম দেখলাম। ওই ব্যক্তি আমাদের কাছে স্বীকার করেছে যে সে একজন পেশাদার চোর।” ইয়াসিনের বাড়ি ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার ছিলারিশ গ্রামে। তবে এখন বরিশালের কালুশাহ সড়ক এলাকার একটি বাড়িতে পরিবার নিয়ে ভাড়া থাকে সে। ইয়াসিন জানিয়েছে, চুরির জিনিসপত্র ব্যাগে ভরতে গিয়ে সকাল হয়ে যায়।
তাই সেখান থেকে নিরাপদে বাইরে আসার জন্য জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করে সে। তবে পুলিশের কাছে গ্রেফতার হওয়ার পর বুধবার তাকে আদালতে তোলা হয়। বরিশালের আদালত তার জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। অন্যদিকে, ওই মুদি দোকানের মালিক ঝন্টু মিয়া জানান, বুধবার সকালে তার দোকানের কাছাকাছি আসে পুলিশ। এরপর তারা কিছু বা কাউকে খোঁজাখুঁজি শুরু করে। প্রথমে না বুঝলেও পরে দোকান থেকে ইয়াসিনকে বের করে আনার পর সবটা পরিষ্কার হয় তাঁর কাছে। এই ঘটনায় তিনিও চমকে গিয়েছেন।