বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গত বছর থেকে নিয়োগ দুর্নীতি (Recruitment Scam) ইস্যুতে তোলপাড় রাজ্য। ঘোর কেলেঙ্কারি হয়েছে শিক্ষাক্ষেত্রে, অভিযোগ এমনটাই। টাকার পরিবর্তে নিয়োগ থেকে শুরু করে যোগ্য প্রার্থীদের বদলে ‘অযোগ্য’ প্রার্থীদের চাকরি, মোটের ওপর একাধিক অভিযোগে সরগরম গোটা রাজ্য। এরই মধ্যে সামনে আরেক কাহিনী। বাংলার স্কুলে চাকরি করছেন ভিন দেশের নাগরিক। একজন বাংলাদেশি (Bangladeshi Citizen), হ্যাঁ এবার ঠিক এমনই অভিযোগ তুলে মামলা দায়ের হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court)।
গতকাল হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Justice Abhijit Ganguly) এজলাসে ওঠে মামলাটি। সমস্ত অভিযোগ শুনে সেই ‘বাংলাদেশি’ শিক্ষককে এবার খুঁজে, সোজা আদালতে ধরে আনার নির্দেশ দিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। প্রসঙ্গত আদালতে মামলা দায়ের হয়েছিল দক্ষিণ দিনাজপুরের এক স্কুলের প্রাথমিক শিক্ষক উৎপল মণ্ডল নামক এক ব্যক্তির নামে।
অভিযোগ ছিল, ওই শিক্ষক নথি জাল করে চাকরি পেয়েছেন। তিনি ভারতের নাগরিকই নন! বাংলাদেশের নাগরিক ওই ব্যক্তি। এই অভিযোগ নিয়েই কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার গঙ্গারামপুরের বিমল চন্দ্র সরকার নামের এক বাসিন্দা।
মামলাকারীর আইনজীবীর দাবি, উৎপল মণ্ডল ২০১২ সালে বেআইনিভাবে ওপার বাংলা থেকে এদেশে অনুপ্রবেশ করেন। তারপর একপ্রকার জোর করেই তার মক্কেলের জমিতে পরিবারকে নিয়ে বসবাস শুরু করেন। মঙ্গলবার আদালতে বিমলবাবুর আইনজীবী আরও জানান, উৎপলের বাবা অয়ন মণ্ডল অনাধিকার প্রবেশ মামলায় গ্রেফতারও হয়েছিলেন।
অভিযোগ, পরে বিমল চন্দ্রবাবু জানতে পারেন উৎপল প্রাথমিকে শিক্ষিক হিসেবে চাকরি পেয়েছেন। এরপর তথ্য জানার অধিকার আইনে আবেদন করলে ঝুলি থেকে বেরোয় বেড়াল। জানা যায় ওই শিক্ষক চাকরি পাওয়ার জন্য যে নথি দাখিল করেছে, তার সবটাই ‘ভুয়ো’।
এরপর দেরী না করে বিষয়টি নিয়ে দক্ষিণ দিনাজপুরের স্কুল পরিদর্শকের দফতরকে অবগত করেন। তবে তাতে কিছুই লাভের লাভ না হওয়ায় আদালতের দ্বারস্থ হন তিনি। সব শুনে এদিন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়, উৎপলকে আগামী ৪ জুলাই আদালতে হাজির করানোর কড়া নির্দেশ দেন। অভিযুক্ত যাতে ওই দিন আদালতে হাজির থাকে সেই ব্যবস্থা করতে হবে দক্ষিণ দিনাজপুরের পুলিশ সুপারকে। নির্দেশ বিচারপতির।
অন্যদিকে, উৎপলের বেতন ও স্কুলে ঢোকার উপরও নিষেধাজ্ঞাও জারি করেছে হাইকোর্ট। মামলার শুনানিতে সিবিআই অবস্থান জানতে চেয়েছে উচ্চ আদালত। আগামী ৪ জুলাই এই মামলার পরবর্তী শুনানি।