বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আরজি কর কাণ্ডের ক্ষত এখনও দগদগে। এক বছরও কাটেনি সময়, ফের খাস কলকাতায় তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগ (Kasba Rape Incident) তোলপাড় রাজ্য। কসবার ল’কলেজের (Law College) ক্যাম্পাসের মধ্যেই ছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন ৩ জন। আর এই ঘটনার গভীরে যেতে গিয়েই যেন কেঁচো খুঁড়তে বেরিয়ে আসছে কেউটে!
কসবা কাণ্ডে কেঁচো খুঁড়তে কেউটে? Kasba Rape Incident
নির্যাতিতার অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার হওয়া অভিযুক্তদের মধ্যে একজন সংশ্লিষ্ট কলেজের প্রাক্তন ছাত্র ও কর্মী। বাকিরা কলেজের পড়ুয়া বলে জানা গিয়েছে। কসবা গণধর্ষণ কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্রের তৃণমূল যোগের তত্ত্ব সামনে এসেছে। যা নিয়ে সরগরম রাজ্য-রাজনীতি। এবার সেই ‘গুণধর’ ছাত্রকে নিয়ে নিয়ে মুখ খুললেন আইনেরই এক পড়ুয়া অমৃত ভট্টাচার্য। বাংলাহান্টকে দেওয়া সাক্ষাতকারে (Banglahunt Exclusive) বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছেন ওই পড়ুয়া। ফাঁস করেছেন একাধিক ঘটনা।
অমৃত বলেন, ‘ মনোজিৎ কোনোভাবেই যোগ্য নয়। তার যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন অমৃত। বলেন, ‘কোন পলিটিকাল এজেন্ডার মারফত ও এই কলেজে এসেছে এবং বর্তমানে সে কীভাবে পড়াশোনা করছে এবং আদৌ পড়াশোনার যোগ্য কি না’। অমৃতর অভিযোগ, ‘জুনিয়র স্টুডেন্টরা নোংরামি দেখতে দেখতে কলেজে আসা বন্ধ করে দিচ্ছে। আর পাঁচ বছর পর এই ল’ কলেজে কেউ ভর্তিই হবে না।’
নিজের অভিজ্ঞতার কথা ভাগ করে অমৃত বলেন, ‘সাউথ ক্যালকাটা ল’ কলেজে আমার আসা যাওয়া কম্পিটিশনের নামে এবং তার একটা বিশাল দাদাগিরি। বাইরের কলেজের ছেলে-মেয়েরা আসছে, তাদের সামনে সে একেবারে নেতা। তাকে গিয়ে ধরে বলতে হবে যে এই এই ব্যাপার। তাহলে সে সেমিনারে ঢুকতে দেবে, নয়তো নয়।’
আরও পড়ুন: দিল্লিতে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক, বাংলাদেশ নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত, নতুন করে গুটি সাজাবে ভারত?
অভিযুক্ত মনোজিৎকে ‘দালাল’ আখ্যা দিয়ে অমৃত বলেন, ‘ও দালালি করে বাইরের কলেজের ছেলে-মেয়েদের ঢুকতে দেবে যদি তৃণমূল করি। আমার ক্ষেত্রে আমি তৃণমূল করি না তাই ঢুকতে দেবে না।’ বিস্ফোরক অভিযোগ করে অমৃত বলেন, ‘কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে যে সমস্ত আইনের কলেজ আছে, এর মধ্যে যে কী কী চলছে তা কোনও সংবাদমাধ্যম বা প্রেস জানে না’।
কী কী চলছে? আমাদের সাংবাদিক প্রশ্ন করতেই অমৃত বলেন, ‘কী কী চলছে বলতে ওপেনলি মহিলাদের বলা হচ্ছে, তুমি তো মেয়ে তুমি প্রাকটিস কেন করবে। বার কাউন্সিল জানে জিনিসগুলো। বার কাউন্সিল কিছু বলতে পারছে না।’ মহিলা আইনজীবীরাও সুরক্ষিত নন বলে অভিযোগ করেন অমৃত।
পড়ুয়ার অভিযোগ, ‘কলেজে পস কমিটি (POS Committee) বলে কিছু নেই। যে রেপ করছে সেই পস কমিটিতে। যে মেয়েদের বাজে প্রস্তাব দিচ্ছে সেই পস কমিটিতে। পস কমিটি রিপোর্ট দিচ্ছে না। কোনও কিছুর বিনিময়ে যাবতীয় কুকর্ম চলছে, অর্থাৎ লেনদেন কুকর্ম চলছে বলেও বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছেন ওই পড়ুয়া। ইন্টার্নশিপ দিয়ে দেওয়া এই সমস্ত কাজ করতেন মনোজিৎ! একই সাথে ওই পড়ুয়া এও বলেন, “Executive Function যা থাকে তৃণমূলের সেটা দিয়ে তারা সুপারিশ করতে পারে। মনোজিৎ হয়ত সেই সুপারিশটা করে দিত এবং তার বিনিময়ে হয়তো সে তার শরীরের চাহিদা মিটিয়েছে।” অমৃত বলেছেন জুনিয়রদের থেকে পাওয়া অভিযোগের জেরেই তিনি এই বিষয়ে জানতে পেরেছেন।