করোনা আবহেও মর্ত্যে আসছে ঘরের মেয়ে উমা। মহামারির মার ভুলে তাই ঘরের মেয়ের আগমনের তোরজোর শুরু করে দিয়েছে বাঙালি। ইতিমধ্যেই অনেকগুলি পুজো মন্ডপের কাজ শেষ। বেশ কয়েকটি পুজো মন্ডপ ইতিমধ্যেই উদ্বোধনও হয়ে গিয়েছে। সামাজিক মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়েছে ছবি। কিন্তু সবার থেকে আলাদা হয়ে এবার নজর কাড়ছে বেহালার বড়িশা ক্লাব।
রাতারাতি দেশজুড়ে লকডাউন ঘোষণার পর কাজ হারিয়েছিলেন কয়েক কোটি পরিযায়ী শ্রমিকর।শেষ সম্বল ফুরোলে তারা বাধ্য হয়েছিল অভুক্ত পেটে শহর ছেড়ে ভিটেবাড়ির দিকে পা বাড়াতে। চৈত্রের কাঠফাটা রোদে হাঁটতে হয়েছিল মাইলের পর মাইল। ক্ষুধা ও পথশ্রমে মারা গিয়েছেন অনেকেই। দুর্ঘটনাতেও প্রাণ হারিয়েছেন অগুনতি। ঠিক কতজন মারা গেছেন তার সংখ্যা জানা নেই দেশের শাসকদের। সেই মর্মভেদী কঠোর বাস্তবই ধরা পড়েছে বড়িশার মন্ডপে।
প্রতিমায় দুর্গার কোলে আছেন শিশু কার্তিক। দু’পাশে রয়েছে দুই মেয়ে – লক্ষ্মী ও সরস্বতী। আছেন গণেশও। তারা প্রত্যেকেই পিছনের দিকে চেয়ে আছেন। যেন অতীতের ভরা পেটের স্মৃতিতেই মেটাতে চাইছেন খিদে। দেবী দুর্গার হাতে অস্ত্র নেই আছে ‘ত্রাণ’ । সন্তানদের মুখে দু’মুঠো খাবার তুলে দিতে দেবী আজ ‘মাতৃরূপেন’।
থিম শিল্পী রিন্টু দাসের কথায়, এই থিমে দেবী পরিযায়ী শ্রমিক এবং একজন মা। যিনি নিজের সন্তানদের খাবার ও জলের সন্ধান করছেন।বাঙালি সংস্কৃতিতে দূর্গা দেবী নন, তিনি মা ও মেয়ে। দেবীত্ব বর্জন করে তিনি এখানে মানবী। ঘরের মেয়ে উমা আমাদের সব সুখ দুঃখের ভাগীদার। সেই ভাবনা থেকেই গড়ে উঠেছে এই থিম।