হয়ে যান সতর্ক! Treasure NFT-তে বিনিয়োগ করলেই হবে বিপদ, সাবধান করে কী জানাল পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ?

Published On:

বাংলা হান্ট ডেস্ক: বর্তমান সময়ে যুগের সাথে তাল মিলিয়ে অনেকেই “খুব সহজে” অনলাইন ইনকামের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছেন। আর সেই কারণেই ক্রমশ রমরমা বৃদ্ধি পাচ্ছে ইনভেস্টমেন্ট অ্যাপগুলির। যদিও, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই প্রলোভনের শিকার হয়ে বহুজন নিজেদের অজান্তে পা দিয়ে ফেলেন প্রতারণামূলক স্কিমে। ঠিক এই আবহেই বর্তমানে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে TreasureNFT। অল্পদিনের মধ্যেই এই সংস্থায় বিপুলসংখ্যক মানুষ লাভের আশায় নিজেদের কষ্টার্জিত অর্থ বিনিয়োগ করেছিলেন। যদিও, এবার সামনে এল চাঞ্চল্যকর বিষয়। শুধু তাই নয়, TreasureNFT-তে বিনিয়োগ করা অর্থ আদৌ ফেরত আসবে কিনা তা নিয়ে চরম দ্বন্দ্বে রয়েছেন বিনিয়োগকারীরা।

TreasureNFT-তে বিনিয়োগ করার আগে হয়ে যান সতর্ক:

ইতিমধ্যেই এই বিষয়টির পরিপ্রেক্ষিতে সবাইকে সতর্ক করেছেন বালুরঘাট থানার ইন্সপেক্টর-ইন-চার্জ বিরাজ মুখোপাধ্যায়। যেখানে তিনি পঞ্জি স্কিম সম্পর্কে সচেতন করেছেন। এমতাবস্থায়, স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন আসতে পারে যে পঞ্জি স্কিম আসলে কী? প্রথমেই জানিয়ে রাখি যে পঞ্জি স্কিম মূলত বিনিয়োগের এমন একটি কৌশল যেখানে পুরনো বিনিয়োগকারীদের টাকা ফেরত দেওয়া হয় নতুন বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে আসা অর্থের মাধ্যমে। অর্থাৎ সোজাভাবে বলতে গেলে, এহেন স্কিমের ক্ষেত্রে কোনও বাস্তব ব্যবসায়িক ক্ষেত্র বা উৎপাদনের উচ্চ থাকে না।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, এই স্কিমের নাম এসেছে এক ইতালিয়ান অসাধু ব্যবসায়ী চার্লস পঞ্জির নাম থেকে। ১৯২০ সালে তিনি আমেরিকায় ডাকটিকিট ব্যবসার আড়ালে একটি স্কিম শুরু করেন। যেখানে মাত্র ১০০ দিনেই বিনিয়োগের দ্বিগুণ রিটার্নের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। এর পাশাপাশি এটাও প্রচার করা হয়েছিল যে, কেউ যদি আরও মানুষকে অনুপ্রাণিত করে তাঁদের রেফারেন্সে বিনিয়োগ করেন সেক্ষেত্রে প্রথম ব্যক্তি রেফারেল কমিশন পাবেন। আর তারপর থেকেই এই স্কিমের জন্য রীতিমতো লাইন পড়ে যায় বিনিয়োগকারীদের।

বর্তমান সময়ে পঞ্জি স্কিম: যুগের সাথে তাল মিলিয়ে পঞ্জি স্কিম বিভিন্ন রূপে পরিবর্তিত হয়ে উপস্থাপিত হয়েছে। তবে, এখনও রেফারেল ভিত্তিক কমিশনই এই স্কিমের প্রধান লক্ষ্য রয়েছে। এদিকে, পঞ্জি স্কিম চেনার ক্ষেত্রে রয়েছে কিছু বিশেষ উপায়। যেগুলি অবশ্যই মাথায় রাখতে হয়। প্রথমত, কোনও স্কিম যদি অস্বাভাবিক রিটার্ন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় (যেমন কয়েকদিনেই টাকা ডবল) সেক্ষেত্রে সেটি পঞ্জি স্কিম হতে পারে। এর পাশাপাশি, কোনও প্রোডাক্ট বিক্রির জন্য সদস্য সংগ্রহ করা এবং সংশ্লিষ্ট প্ল্যাটফর্মে মেম্বার জয়েন করানোর প্রবণতা রয়েছে সেক্ষেত্রে সেটিও পঞ্জি স্কিম হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও যদি রেফারেল অথবা রিক্রুটমেন্ট কমিশনের প্রলোভন থাকে এবং ওই সংস্থার যদি কোনও প্রকৃত ব্যবসা বা উৎপাদনের সঠিক উৎস না থাকে তাহলে সেটিও পঞ্জি স্কিম হিসেবে বিবেচিত হয়।

আরও পড়ুন: ১৫০০০০০০০০০০ কোটির….শেয়ার বাজারে উঠবে ঝড়! ধামাকার জন্য প্রস্তুত টাটা গ্রুপের এই কোম্পানি

TreasureNFT থেকেও সতর্ক থাকুন: ইতিমধ্যেই TreasureNFT প্ল্যাটফর্মে বিপুল মানুষ মোটা অঙ্কের টাকা বিনিয়োগ করেছেন। পাশাপাশি অনেকেই এটা বিশ্বাস করছেন যে, TreasureNFT হল একটি NFT ভিত্তিক বিনিয়োগের প্রকল্প। অর্থাৎ, সেখানে ভালো অঙ্কের টাকা উপার্জন এবং কমিশনের সুযোগ থাকার বিষয়ে সবাই বিশ্বাসী থাকলেও বর্তমানে পরিস্থিতি অনেকটাই পাল্টে গিয়েছে। ইতিমধ্যেই বিনিয়োগকারীরা অভিযোগ করছেন যে, তাঁদের টাকা উইথড্রল করা যাচ্ছে না। শুধু তাই নয়, সংবাদ মাধ্যমের একাধিক রিপোর্ট অনুযায়ী, ওই প্ল্যাটফর্ম অচল হয়ে গিয়েছে বলেও দাবি করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: পরপর ব্যর্থ হচ্ছেন পন্থ! হারাবেন অধিনায়কত্ব? LSG-র ক্যাপ্টেন হওয়ার দৌড়ে রয়েছেন এই ৩ খেলোয়াড়

কী জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা: এমতাবস্থায়, সামগ্রিক দিক বিবেচনা করে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন যে, এই প্ল্যাটফর্মটিও আসলে একটি পঞ্জি স্কিমের মত কাজ করছে। আসলে, ক্রিপ্টোকারেন্সি থেকে শুরু করে NFT বা শেয়ার মার্কেট বিনিয়োগের ঝুঁকি থাকলেও পঞ্জি স্কিমে বিনিয়োগ করলে রীতিমতো প্রতারণায় পা দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তাই, এই সমস্ত প্ল্যাটফর্মে বিনিয়োগের আগে সমস্ত তথ্য ভালোভাবেই যাচাই করে এবং কোম্পানিটির আদৌ বৈধ লাইসেন্স রয়েছে কিনা সেই বিষয়ে প্রকৃত তথ্য জেনে তারপর এই বিনিয়োগ করা প্রয়োজন। এছাড়াও, রেফারেল সংক্রান্ত কোনও প্রলোভন থাকলে সেই প্ল্যাটফর্ম এড়িয়ে চলাই শ্রেয় বলে পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর

X