বাংলা হান্ট ডেস্ক:আগেই সমস্ত বিদেশী এবং বেসরকারি আবহাওয়া সংস্থাগুলির তরফ থেকে নিশ্চিতভাবে জানানো হয়েছিল যে, বঙ্গোপসাগরে তৈরি হতে চলেছে একটি ঘূর্ণিঝড় নাম ‘বুলবুল’। ইতিমধ্যেই এই নিম্নচাপটি তৈরি হয়ে গেল উত্তর আন্দামান সাগরে।
তারপর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, নিম্নচাপ এখন ক্রমশ নিজের শক্তি বৃদ্ধি করবে। আগামী তিন দিনের মধ্যে অতি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়ে অন্ধপ্রদেশ উপকূলের দিকে ক্রমশ আছড়ে পড়বে এই ঘূর্ণিঝড়।
উত্তর অন্ধপ্রদেশের শ্রীকাকুলাম থেকে বাংলাদেশের বরিশাল পর্যন্ত উপকূলবর্তী অঞ্চলের দিকে নজর রাখছে আবহাওয়াবিদরা কারন তাদের ধারনা, যেকোনো সময় নিজের দিক পরিবর্তন করতে পারে এই ঘূর্ণিঝড়।
আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যেই অতি ভারী ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে এই নিম্নচাপটি, এমনটাই আশঙ্কা আবহাওয়া দপ্তরের। অবস্থান অনুযায়ী, এই ঘূর্ণিঝড় পশ্চিম উত্তর পশ্চিম দিকে রওনা হয়ে পরে উত্তর এবং উত্তর-পশ্চিম দিকে হয়ে এই ঘূর্ণিঝড় পৌঁছে যাবে পশ্চিমবঙ্গ উত্তর উড়িষ্যা এবং বাংলাদেশ উপকূলের দিকে।
এর জেরে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ পূর্ব মেদিনীপুর উত্তর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা জুড়ে অতি ভারী বৃষ্টির সর্তকতা জারি করল আবহাওয়া দপ্তর। হাওয়া অফিসের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, আগামী ১২ ঘণ্টায় সমুদ্রে বিশেষ করে পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর প্রচন্ড গতিতে বাতাস বইবে। এই হাওয়ার গতিবেগ ৫০ কিলোমিটার থেকে ৭০ কিলোমিটার পর্যন্ত থাকবে। ৭ তারিখ সকালে এর গতিবেগ আরও বেড়ে যাবে। সমুদ্র উপকূলবর্তী অঞ্চলে ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত গতিতে বইতে পারে হাওয়া।
ধীরে ধীরে নিজের শক্তি বৃদ্ধি করবে ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’। ৮ এবং ৯ই নভেম্বর সমুদ্রে আরও উত্তাল পরিস্থিতি তৈরী করবে ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’। ইতিমধ্যেই আবহাওয়া দপ্তরের তরফ থেকে লাল সর্তকতা জারি করা হয়েছে। ৮ নভেম্বর থেকে মৎস্যজীবীদের পশ্চিমবঙ্গ উড়িষ্যা বঙ্গোপসাগরে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। যারা গভীর সমুদ্রে ইতিমধ্যেই মাছ ধরতে গিয়েছেন তাদের কেও ফিরে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ইতিমধ্যেই আজ ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের জন্য জোরদার হল উত্তুরে হাওয়া। তার জেরে আজ কলকাতার তাপমাত্রা ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামল, তবে রাতে কিছুটা হলেও তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর।
বুলবুল এবার বাংলা বাংলাদেশ উপকূল অভিমুখে এগোবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। ধারণা করা যাচ্ছে, সোমবার এই ঘূর্ণিঝড় চলে আসবে বাংলার খুব কাছাকাছি। আবহাওয়াবিদের বক্তব্য, বুলবুলের মতিগতি কিছুটা গোলমেলে। প্রথমে ধারণা করা হয়েছিল, ওডিশা বাংলা বাংলাদেশ অভিমুখে থাকবে এই ঘূর্ণিঝড় তারপর ঘূর্ণিঝড়ের অবস্থান দেখে বলা হলো, ওড়িশা নয় ঘূর্ণিঝড়ের অভিমুখ হবে বাংলা বাংলাদেশ। বুলবুলের গতিপথ অনুযায়ী, এগোতে এগোতে আরও তীব্র ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে বুলবুল। সোমবারের মধ্যে চলে আসবে বাংলার একদম দোরগোড়ায়। তবে যেহেতু বুলবুলের মতিগতি খানিক গোলমেলে, সেক্ষেত্রে বুলবুল স্থলভাগে আরও আছড়ে পড়বে নাকি ধীরে ধীরে সরে যাবে তা এখনো সঠিকভাবে ধারণা করতে পারেননি আবহাওয়াবিদরা।