বাংলা হান্ট ডেস্কঃ দোকানের নাম ‘চপ শিল্প’। ঠেলাগাড়ির এই দোকানেই সন্ধ্যে থেকে রাত পর্যন্ত তেলেভাজা বিক্রি করে প্রতিদিন প্রায় হাজার দুই টাকা রোজগার করেন MA পাশ করা বিশ্বজিৎ কর মোদক। বিরোধীদের কথায় সায় দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) আক্রমণ নয়, বরং তাঁর কথার বাস্তব রূপ তুলে ধরলেন এই যুবক।
পুরুলিয়ার বান্দোয়ানের ভিলেজ রিসোর্স পার্সেন বিশ্বজিৎ কর মোদক এলাকাতেই পতঙ্গ বাহিত রোগ দমন করার জন্য বাড়ি বাড়ি ঘুরে বেড়ান। আর কাজের ফাঁকে দোকান দিয়েছেন তেলেভাজার। স্নাতকোত্তর, টেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর ২০১৬ সালে ভিলেজ রিসোর্স পার্সেনের সঙ্গে যুক্ত হন। বছরে ১৩ দিনের এই কাজ করলে বেতন পেতেন ৪৮০ টাকা।
এরপর ২০১৭ থেকে ২০১৮-র প্রায় শেষে এই কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে ভিলেজ রিসোর্স পার্সেনদের পতঙ্গ বাহিত রোগ দমনের কাজে যোগ দেন তিনি। বেতন দৈনিক ১৫০ টাকা থেকে ২০২০ সাল বেড়ে দাঁড়ায় ১৭৫ টাকা।
তবে এভাবে চলতে থাকলেও, গত জুন মাস থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত মাসিক ভাতা বন্ধ হওয়ায় অভাবের সংসারে তাঁর স্ত্রী ঠোঙা বানিয়ে দৈনিক ১০০ থেকে ১৫০ টাকা রোজগার করতেন। কিন্তু তাতেও সংসার চালাতে সমস্যা হওয়ায়, তাঁর পরিবার তাঁকে ত্যাজ্যপুত্র করে দেয়। আর তারপরই তিনি বকেয়া ৪ মাসের ভাতা পান। এই অর্থ দিয়েই পুরানো ঠেলা গাড়ি কিনে প্রায় দুসপ্তাহ আগে চপের দোকান দেন।
সকালে মুড়ি, ঘুগনি, ডিম সেদ্ধ, ডিমের ওমলেট আবার বিকালে মাংসের ঘুগনি, আলুর চপ, ব্রেড চপ, ডিমের চপ, মাংসের চপ, ফুচকা পাওয়া যায় তাঁর দোকানে। আবার দৈনিক ১৫০ টাকায় একজন লোকও রেখেছেন তিনি। বিশ্বজিৎ কর মোদক জানান, ‘দিদির অনুপ্রেরণাতেই তেলেভাজার দোকান দিয়ে দৈনিক ৫০০ টাকা করে আয় করছি। এর ফলে সংসারে অভাবও নেই আর। বিরোধীদের কুৎসায় কান না দিয়ে, দিদির কথার বাস্তবতার প্রমাণ পেয়েছি’।