ওলা-উবের পাবে কড়া টক্কর! শুরু হতে চলেছে ভারতের প্রথম সমবায় ট্যাক্সি পরিষেবা

Published on:

Published on:

Bharat taxi is set to give tough competition.

বাংলাহান্ট ডেস্ক: শুরু হতে চলেছে ভারতের প্রথম সমবায় ট্যাক্সি পরিষেবা—’ভারত ট্যাক্সি’ (Bharat Taxi)।  ওলা ও উবেরের মতো বেসরকারি ক্যাব পরিষেবাগুলির আধিপত্যের যুগে এবার নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে চলেছে এই বহুজাতিক রাইড হেলিং অ্যাপগুলি। কারণ, কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্যোগে আসতে চলেছে একেবারে দেশীয়, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় গড়ে ওঠা ক্যাব পরিষেবা — ‘ভারত ট্যাক্সি’। এই পরিষেবা চালু হলে তা দেশের প্রথম সমবায় ভিত্তিক ট্যাক্সি পরিষেবা হতে চলেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারত ট্যাক্সির সূচনা হলে ওলা-উবেরের মতো সংস্থাগুলির একচেটিয়া বাজারে বড় ধাক্কা লাগতে পারে।

শুরু হতে চলেছে ‘ভারত ট্যাক্সি’ (Bharat Taxi) পরিষেবা

সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী ডিসেম্বর থেকেই বৃহৎ পরিসরে চালু হবে ভারত ট্যাক্সি (Bharat Taxi) পরিষেবা। তবে তার আগেই, নভেম্বর মাসে দিল্লিতে শুরু হচ্ছে এই প্রকল্পের পাইলট প্রোগ্রাম। প্রথম পর্যায়ে ৬৫০ জন চালক ও গাড়ির মালিক এই পরীক্ষামূলক উদ্যোগে অংশ নেবেন। অর্থাৎ, প্রাথমিকভাবে ৬৫০টি গাড়ি চালু করা হবে এই নতুন ক্যাব পরিষেবার অধীনে। সব কিছু ঠিকঠাক চললে ডিসেম্বর থেকেই ধীরে ধীরে অন্যান্য শহরেও পরিষেবাটি চালু হবে।

আরও পড়ুন:গডফাদার ছাড়াই সফল অক্ষয়, শাহরুখের অভিনয় ‘বিরক্তিকর’! চাঁচাছোলা নাসিরউদ্দিন

প্রকল্পের লক্ষ্য অনুযায়ী, ডিসেম্বরের মধ্যে প্রায় ৫,০০০ চালক এই উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হবেন। এরপর ২০২৬ সালের মধ্যেই ভারতের সমস্ত মেট্রো শহরে এই পরিষেবা চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে। দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য আরও বড় — ২০৩০ সালের মধ্যে প্রায় ১ লক্ষ চালককে এই প্ল্যাটফর্মের আওতায় আনা হবে। কেন্দ্রের দাবি, এই ভারত ট্যাক্সির (Bharat Taxi) ক্যাব পরিষেবা কেবল শহরেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং জেলা সদর এবং গ্রামীণ এলাকাতেও সাধারণ মানুষ এটি ব্যবহার করতে পারবেন।

এই উদ্যোগের মূল দায়িত্বে রয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রক এবং জাতীয় ই-গভর্নেন্স বিভাগ (NeGD)। দুই দফতর যৌথভাবে এই ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মটি তৈরি করেছে। এর পরিচালনার জন্য কেন্দ্র সহকারী ট্যাক্সি কোঅপারেটিভ লিমিটেডের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক (MoU) স্বাক্ষর করেছে। ভারত ট্যাক্সি (Bharat Taxi) পরিষেবার সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হল — এটি কোনও বেসরকারি সংস্থা নয়, বরং একটি সমবায় সংস্থা, যেখানে চালকরাও গাড়ির মালিকদের সঙ্গে যৌথ মালিকানা পাবেন। ফলে তাঁদের আয় এবং লাভের একটি ন্যায্য অংশ প্রত্যেকের কাছে সরাসরি পৌঁছবে।

Bharat taxi is set to give tough competition.

আরও পড়ুন:পাঁচ মিনিটেই ধৃত পাঁচজনকে শণাক্ত নির্যাতিতার, দুর্গাপুর ধর্ষণ কাণ্ডে ‘মাস্টারমাইন্ড’ কে?

ভারত ট্যাক্সির (Bharat Taxi) কাজকর্ম তদারকি করতে একটি বিশেষ কাউন্সিল গঠন করা হয়েছে। এই কাউন্সিলের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন আমুল ব্র্যান্ডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর জয়েন মেহতা। তাঁর পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন সমবায় কমিটির আরও আটজন বিশিষ্ট সদস্য এই কাউন্সিলের অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। সরকারের এই উদ্যোগে আশার আলো দেখছেন অনেক চালক ও ট্যাক্সি মালিক। তাঁদের মতে, ওলা-উবেরের মতো অ্যাপ সংস্থাগুলিতে কমিশন এবং অতিরিক্ত চার্জের চাপে যেভাবে চালকদের আয় কমে গিয়েছিল, এই নতুন সমবায় পরিষেবা সেই পরিস্থিতি বদলে দিতে পারে। ‘ভারত ট্যাক্সি’-তে চালকরা কেবল পরিষেবার অংশীদার নন, তাঁরা এই সংস্থার সহ-মালিকও।

সরকারি মহলের বক্তব্য, এই নতুন মডেল ভারতীয় চালকদের আত্মনির্ভর করে তুলবে এবং একই সঙ্গে দেশীয় ডিজিটাল রাইড হেলিং প্ল্যাটফর্মের পথপ্রদর্শক হিসেবেও কাজ করবে। ডিসেম্বরেই দেখা যাবে, ওলা-উবেরের আধিপত্যে ‘ভারত ট্যাক্সি’ (Bharat Taxi) কতটা পরিবর্তন আনতে পারে ভারতীয় ট্যাক্সি বাজারে।