বাংলা হান্ট ডেস্কঃ একসময় তিনি ছিলেন ‘লাল’, এরপর ‘সবুজ’ হয়ে বর্তমানে ‘গেরুয়া’ রুদ্রনীল ঘোষ (Rudranil Ghosh)। লোকসভা নির্বাচনের আবহে আবার তাঁর দল ছাড়ার জল্পনা শোনা গিয়েছিল। যদিও সেই সকল জল্পনায় ইতি টেনেছিলেন তিনি নিজেই। এবার বাংলা হান্টের (Bangla Hunt) কনক্লেভে মুখোমুখি হয়ে একাধিকবার দলবদলের কারণ থেকে শুরু করে রাজ্য রাজনীতির নানা ইস্যু নিয়ে মুখ খুললেন এই অভিনেতা-রাজনীতিবিদ।
ভোটের আবহে সম্প্রতি বাংলা হান্ট এবং আর প্লাসের যৌথ প্রযোজনায় একটি কনক্লেভের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়েছিলেন বিজেপির (BJP) জনপ্রিয় নেতা রুদ্রনীল। প্রথমেই তাঁকে দলবদল নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। লাল, সবুজ ছেড়ে বর্তমানে গেরুয়া শিবিরের অংশ তিনি। এরপর কোন রঙ?
রুদ্রনীল বলেন, ‘আমি মানুষের রঙে ছিলাম, আছি, থাকব। যে যে রাজনৈতিক দলগুলো মানুষের ভালো থাকার কথা বলে নিজেরাই নিজেদের আদর্শ থেকে সরে গিয়ে নিজেরাই নিজেদের পথ চলার রঙ পাল্টেছে, আমি সেখান থেকে ছেড়ে বেরিয়ে এসেছি। আমি বেরিয়ে এসেছি কিছু অহংকারের রঙ থেকে, যার রঙ ছিল লাল। আমি বেরিয়ে এসেছি মানুষের পাশে আছি বলে মানুষের অধিকার যারা চুরি করেছে, যার রঙ ছিল সবুজ। আমি এই মুহূর্তে বিগত ৪-৫ বছর ধরে যে রঙটাকে জেনেছি, দেখেছি, পড়াশোনা করেছি, বোঝার চেষ্টা করেছি সারা ভারতবর্ষের মানুষের কথা শুনে, সেই রঙটায় ছিলাম, আছি এবং থাকব’।
আরও পড়ুনঃ আসানসোলে বিরাট চমক বিজেপির! এই হেভিওয়েট নেতাকে দাঁড় করালো পদ্ম-শিবির, চাপে শত্রুঘ্ন?
গেরুয়া শিবিরের অংশ হলেও এদিন সাক্ষাৎকারে রুদ্রনীল স্বীকার করে নেন বিজেপি তৃণমূলের থেকে পিছিয়ে রয়েছে! এই নিয়ে বিজেপির একজন নেতার সঙ্গে তাঁর ঝামেলা হয়েছে বলেও জানান তিনি। তবে ঠিক কীভাবে তৃণমূল এগিয়ে রয়েছে সেকথাও জানান এই ‘নেতা কাম অভিনেতা’।
রুদ্রনীল বলেন, তৃণমূল ২৪ ঘণ্টা মানুষের পাশে থাকার দাবি করছে। এদিকে বিজেপিও এক কথা বলছে। তবে আমি বিজেপিকে বলি তারা মিথ্যে কথা বলছে। কারণ বিজেপি ২৪ ঘণ্টা মানুষের পাশে থাকে না, তৃণমূল থাকে। এখানে ভারতীয় জনতা পার্টি পিছিয়ে রয়েছে।
কীভাবে পিছিয়ে রয়েছে সেটা ব্যাখ্যা করে রুদ্রনীল বলেন, ‘সারা দিনের মধ্যে ৫-৬ ঘণ্টা একজন মানুষের ব্যক্তিগত সময়। যেমন তিনি বাথরুমে যাবেন, বিজেপির কোনও কর্মী সেই সময় তাঁর সঙ্গে থাকেন না, কিন্তু তৃণমূল থাকে। কারণ তখন মানুষ জামাকাপড় ছেড়ে যায়। আর জামাকাপড়ের পকেটে থাকে টাকা, সেই টাকা তৃণমূলের দরকার। মানুষ যখন ঘুমোতে যায় তখনও বিজেপির কেউ মানুষের পাশে থাকে না, তৃণমূল থাকে। ঘুমিয়ে পড়লেই…কোমরে থাকা আটআনা, চারআনা, সিকি, মাদুলি সব ঝেড়ে দিচ্ছে’।
এদিন গরু পাচার মামলা নিয়েও তৃণমূলকে খোঁচা দেন রুদ্রনীল। অনুব্রত মণ্ডলের জেলবন্দি থাকার কথা উল্লেখ করে বিজেপি নেতা জানান, কয়েকদিন আগে বীরভূম-বোলপুরে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে তিনি দেখেন, সেখানকার গরুরা হাসছে। কথার সূত্রে উঠে আসে বীরভূমের তৃণমূল প্রার্থী শতাব্দী রায়ের প্রসঙ্গও।
দীর্ঘ রাজনৈতিক আলোচনা, বিরোধীদের আক্রমণ, নানান ইস্যু নিয়ে সরব হওয়ার পর সাক্ষাৎকার শেষের আগে নিজের লেখা দু’লাইনের একটি কবিতাও পড়ে শোনান রুদ্রনীল। অভিনেতা বলেন, ‘ভাবছো তুমি লাটাই তোমার, তোমার হাতেই সুতো/একলা হলে তাকিয়ে দেখো, চুরি হয়েছে তোমার জুতো!’।