বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সাম্প্রতিক সময়ে বাংলায় একের পর এক দুর্নীতি মামলায় ক্রমশ জেরবার তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress)। প্রাথমিক টেট থেকে শুরু করে এসএসসি, কয়লা এবং গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার শাসক নেতা মন্ত্রীসহ অন্যান্য একাধিক আধিকারিক আর এবার তৃণমূল নেতা সহ মোট ১০ জন প্রভাবশালী ব্যক্তির বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ সামনে আনল বিজেপি (Bharatiya Janata Party)। একইসঙ্গে সেই সকল তথ্য কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে পাঠানো হবে বলেও খবর মিলছে।
বর্তমান সময়ে একের পর এক দুর্নীতি মামলায় কোণঠাসা শাসক দল। ইতিমধ্যেই পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেফতার করেছে তদন্তকারী সংস্থা। এছাড়াও অন্যান্য একাধিক নেতা মন্ত্রীদের দিকে নজর রয়েছে তাদের। এর মাঝে বর্তমানে মোট ১০ জন প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক তথ্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে পাঠাতে চলেছে বিজেপি। এ সকল লোকেদের বিপুল হারে সম্পত্তি বাড়ার পিছনে সোনা পাচার এবং মাদক পাচারের মতো বেআইনি কারবারের যোগাযোগ রয়েছে বলে অভিযোগ সামনে এসেছে। এমনকি, এসকল প্রভাবশালীর মধ্যে তৃণমূল নেতা রয়েছেন বলেও দাবি বিজেপির।
এদিন বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু বলেন, “মালদা জেলায় মোট ১০ জনের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর তথ্য আমাদের হাতে রয়েছে। এরা কিছু সময়ের মধ্যেই কোটি কোটি টাকা সম্পত্তির মালিক হয়েছেন।” সম্পূর্ণটাই বেআইনি কারবারের মাধ্যমে হয়েছে বলে দাবিও করেন বিজেপি সাংসদ। একইসঙ্গে তিনি বলেন, “আমাদের হাতে থাকা সকল তথ্য কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের হাতে তুলে দেওয়া হবে।”
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে মালদা জেলায় মাদক এবং সোনা পাচারের পাশাপাশি জাল নোট এবং অন্যান্য একাধিক বেআইনি কাজকর্মের খবর সামনে এসেছে। এক্ষেত্রে সম্প্রতি এক মাছ ব্যবসায়ীর কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি উদ্ধার করে সিআইডি। এছাড়াও বর্তমানে ইয়াবা ট্যাবলেট থেকে ফেন্সিডিল পাচার হয়ে চলেছে ভারত-বাংলাদেশ এবং মায়ানামার সীমান্ত দিয়ে। এই সকল কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত মোট ১০ জনের নামই এবার কেন্দ্রের কাছে পাঠাতে চলেছে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। এই বিষয়ে সিআইডির পাশাপাশি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকেও তদন্তে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়েছে বিজেপি।
সম্পূর্ণ ঘটনা প্রসঙ্গে খগেন মুর্মু বলেন, “কয়েক মাস পূর্বে যে ফল বিক্রি করতো, তার এখন বিলাসবহুল বাড়ি। নার্সিংহোমে কাজ করে কমিশনের টাকা পাওয়া লোকটি এখন সেখানকার মালিক। অল্প দিনের মধ্যেই কোটি কোটি টাকা সম্পত্তি করে নিয়েছে এরা। এর মধ্যে তৃণমূল নেতাও রয়েছে। এমন ১০ জনের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গিয়েছে। সকলেই সোনা এবং মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত। আমরা এই সকল তথ্য কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের হাতে তুলে দেব।”
অপরদিকে মাদক এবং সোনা পাচারে তৃণমূল যোগ প্রসঙ্গে বিরোধীদের সকল দাবি উড়িয়ে দিয়েছে ঘাসফুল শিবির। এদিন তৃণমূল নেতা আব্দুর রহিম বক্সী বলেন, “এখন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাকে সরিয়ে বিজেপি নিজেই তদন্ত করা শুরু করে দিয়েছে। তবে আমি বলতে চাই, ওদের নিজেদের দলে এমন অনেক নেতা রয়েছে, যারা কয়েক দিনের মধ্যেই কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। ক্ষমতা থাকলে এদের বিরুদ্ধে তদন্ত করুক।”