বাংলা হান্ট ডেস্ক: দেশে (India) ফের ইন্টারনেটের (Internet) দুনিয়ায় আধিপত্য অর্জনের লড়াই শুরু হতে চলেছে। শুধু তাই নয়, ইতিমধ্যেই এই যুদ্ধের তারিখ ঠিক করেছে টেলিকম বিভাগ। এমতাবস্থায়, বিড়লা-মিত্তাল থেকে শুরু করে আদানি-আম্বানির মতো অভিজ্ঞ ধনকুবেররা এই লড়াইতে অংশ নেবেন। জানা গিয়েছে যে, টেলিকম বিভাগ পরবর্তী নিলামের তারিখ ২০ মে নির্ধারণ করেছে। পাশাপাশি, ওই বিভাগ শুক্রবার আবেদনের আমন্ত্রণ জানিয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। জানিয়ে রাখি যে, সরকার ৯৬,৩১৭.৬৫ কোটি টাকার বেস মূল্যে মোবাইল ফোন পরিষেবার জন্য ৮ টি স্পেকট্রাম ব্যান্ড নিলাম করবে। এদিকে, দেউলিয়া হওয়ার প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাওয়া কিছু কোম্পানির হাতে থাকা স্পেকট্রামের পাশাপাশি, এই বছর মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়া ফ্রিকোয়েন্সিগুলিও নিলামে রাখা হবে।
কোন স্পেকট্রামগুলির নিলাম করা হবে: চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা টেলিকম অপারেটরদের অন্তর্বর্তী বরাদ্দের অনুমতি দিয়ে এই নিলামগুলি অনুমোদন করেছিল। এক্ষেত্রে ৮০০, ৯০০, ১৮০০, ২১০০, ২৩০০, ২৫০০, ৩৩০০ MHz এবং ২৬ GHz ব্যান্ডের সমস্ত উপলব্ধ স্পেকট্রাম নিলামের জন্য রাখা হবে। ২০ মে হতে চলা এই নিলামে যে ১০ GHz রেডিওওয়েভ বিক্রি হবে তা আগের তুলনায় অনেক কম। কারণ টেলিকম কোম্পানিগুলি তাদের বেশিরভাগ ব্যান্ডউইথের প্রয়োজনীয়তা মেটাতে গত নিলামে অনেক ভলিউম কিনেছিল। এমতাবস্থায়, স্পেকট্রাম কিনতে ইচ্ছুক কোম্পানি আগামী ২২ এপ্রিল পর্যন্ত আবেদন করতে পারে। ১৩ এবং ১৪ মে মক নিলাম অনুষ্ঠিত হবে এবং ২০ মে থেকে রিয়েল সেল শুরু হবে বলেও জানা গিয়েছে।
যদিও, এই ইন্ডাস্ট্রির সাথে যুক্ত থাকা বিশেষজ্ঞরা অনুমান করছেন যে, এই নিলাম কিছুটা ধীরগতির হবে। এর গুরুত্বপূর্ণ কারণ হল টেলিকম প্লেয়ারদের 5G সম্পর্কিত বেশি এয়ারওয়েভের প্রয়োজন হয় না। নিলামে ভারতী এয়ারটেল এবং ভোডাফোন-আইডিয়ার দ্বারা কিছু নির্দিষ্ট কেনাকাটা দেখার সম্ভাবনা রয়েছে। সেক্ষেত্রে কিছু সার্কেলে তাদের এয়ারওয়েভ আপডেট করা যাবে। এছাড়াও, আদানি গ্রুপ লোয়ার স্পেকট্রাম ব্যান্ডগুলিতে কিছু এয়ারওয়েভ কিনতে পারে বলেও বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
আয় হয়েছিল ১৯ বিলিয়ন ডলার: এদিকে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর বলেছিলেন যে মোট ১০,৫২৩.৮ MHz স্পেকট্রাম নিলাম করা হবে। এমন পরিস্থিতিতে, রিজার্ভ প্রাইস যথাযথ সূচক ব্যবহার করে নির্ধারণ করা হবে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেছেন যে, বিদ্যমান টেলিকম পরিষেবা প্রদানকারীরা টেলিকম পরিষেবায় ব্যাঘাত রোধ করতে অন্তর্বর্তী সময়ের মধ্যে নিলাম-নির্ধারিত মূল্য পরিশোধ করে স্পেকট্রাম ব্যবহার চালিয়ে যেতে পারে। অনুমান করা হচ্ছে যে, আসন্ন নিলাম মুকেশ আম্বানির নেতৃত্বাধীন রিলায়েন্স জিও, ভারতী এয়ারটেল এবং নগদ সঙ্কটের মধ্যে থাকা ভোডাফোন আইডিয়াকে সাহায্য করবে। উল্লেখ্য যে, এয়ারওয়েভগুলিতে ১১ বিলিয়ন ডলার খরচ করার পরে, ২০২২ সালের টেলিকম স্পেকট্রাম নিলামে জিও ছিল সবচেয়ে বড় ক্রেতা। সেবছর কেন্দ্রীয় সরকার নিলামের মাধ্যমে ১৯ বিলিয়ন ডলার আয় করেছিল।
কোন কোন কোম্পানিকে স্পেকট্রাম রিনিউ করতে হবে: বিশেষজ্ঞদের মতে, টেলিকম শিল্পে উচ্চ পর্যায়ের প্রতিযোগিতার কারণে কোম্পানির মার্জিন বিরূপভাবে প্রভাবিত হচ্ছে এবং অতিরিক্ত এয়ারওয়েভের জন্য তাদের বিডের আকার প্রভাবিত হচ্ছে। এয়ারটেলকে জম্মু ও কাশ্মীর, উড়িষ্যা, বিহার, ইউপি (পূর্ব), পশ্চিমবঙ্গ এবং আসামে তার এয়ারওয়েভগুলি রিনিউ করতে হবে। পাশাপাশি, ভোডাফোন-আইডিয়াকে পশ্চিমবঙ্গ এবং পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে লাইসেন্স রিনিউ করতে হবে।
আরও পড়ুন: গুগলের থেকে ডেটা চুরি, ধরা পড়ল চালাক চিনের চিটিংবাজি! মুখ পুড়ল ড্রাগনের
জেফরিজের মতে, এয়ারটেল এবং ভোডাফোন-আইডিয়াকে যথাক্রমে প্রায় ৪,২০০ কোটি এবং ১,৯৫০ কোটি টাকার এয়ারওয়েভ রিনিউ করতে হবে। যেখানে মার্কেটে প্রথম স্থানে থাকা রিলায়েন্স জিওর এই বছরের জন্য কোনো স্পেকট্রাম রিনিউ করার নেই৷ ৫ টি সার্কেলে ভারতী এয়ারটেলের টেলিকম স্পেকট্রামের মেয়াদ গত ৯ ফেব্রুয়ারি শেষ হয়েছে এবং অন্যটি মার্চে মেয়াদ শেষ হতে চলেছে। ভোডাফোন আইডিয়ার স্পেকট্রামও পশ্চিমবঙ্গ এবং ইউপি পশ্চিমে শেষ হয়ে গেছে।