বাংলা হান্ট ডেস্ক : বাংলাহান্টের খবরেই সিলমোহর। অবশেষে সমস্ত জল্পনার অবসান ঘটিয়ে ধ্বনি ভোটে সংসদ থেকে বহিষ্কৃত হলেন মহুয়া মৈত্র (Mahua Moitra)। শুক্রবার লোকসভা (Lok Sabha) কক্ষে মহুয়ার সাংসদ পদ খারিজ করার দাবিতে রিপোর্ট পেশ করে এথিক্স কমিটি। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই লোকসভা থেকে বহিস্কার করা হয় মহুয়াকে। আলোচনার জন্য বাড়তি সময়ের দাবি করলে সেটাও দেন স্পিকার। তবে মহুয়াকে নিজের সমর্থনে কথা বলার সুযোগ দেননি ওম বিড়লা।
যদিও তৃণমূল নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, এই প্রসঙ্গে মহুয়াকে নিজে বলার পর সুযোগ দিতে হবে। যদিও তৃণমূলের সেই আর্জি খারিজ করে দেন স্পিকার ওম বিড়লা। তিনি স্পষ্ট জানান, মহুয়া আগেই নিজের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ পেয়েছিলেন। আর কোনও সুযোগ তিনি পাবেননা। জানিয়ে দিলেন সংসদের মর্যাদাহানি হোক, এমন কোনও বিষয়ই মেনে নেওয়া হবে না। প্রয়োজনে অনেক কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে হয়। মহুয়া একাধিকবার উঠে দাঁড়ালেও তাকে বসিয়ে দেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, শুক্রবার বেলা ১২ টায় মহুয়া মৈত্রর বিরুদ্ধে রিপোর্ট পেশ করেন লোকসভার এথিক্স কমিটির প্রধান তথা বিজেপি (BJP) সাংসদ বিজয় সোনকার। রিপোর্ট জমা পড়া মাত্রই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সংসদ ভবনের আবহাওয়া। যে কারণে দুপুর দুটো পর্যন্ত স্থগিত রাখা হয় এই অধিবেশন। বলাই বাহুল্য যে মহুয়া ইস্যুতে সংসদে একজোট ‘ইন্ডিয়া’! হাজার বিতর্কের মাঝেও বেশ আত্মবিশ্বাসী রূপেই ধরা দিলেন মহুয়া মৈত্র।
আরও পড়ুন : ‘আপনারা জিতলেই আইন-শৃঙ্খলা শিকেয় ওঠে’, রাজ্যসভায় তৃণমূলকে তুলোধোনা সীতারমনের
এইদিন বিরোধী পরিসরেরও অনেককেই পাশে পেয়েছেন কৃষ্ণনগরের সাংসদ। বহরমপুরের কংগ্রেস সাংসদ অধীর রঞ্জন চৌধুরীর প্রশ্ন, ‘এত তাড়াহুড়ো কেন? এত তাড়াহুড়ো করে রিপোর্ট পড়া কি সম্ভব? আত্মপক্ষ সমর্থনে সুযোগ দেওয়া হয় মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্তকেও। মহুয়াকে কেন বলার সময় দেওয়া হবে না?’ পালটা জবাবে বিজেপি সাংসদ হিনা গাভিত বলেন, ‘২০০৫ সালে কংগ্রেসের সরকার ছিল। একই দিনে রিপোর্ট পেশের দিনই সিদ্ধান্ত হয়েছিল। মহুয়া নিজেই হীরানন্দানিকে আইডি-পাসওয়ার্ড দেন। দুবাই, আমেরিকায় বসে মহুয়ার অ্যাকাউন্ট থেকে লগ-ইন করা হয়। দেশের সুরক্ষার প্রশ্নে নারী-পুরুষ কিছু হয় না।’
আরও পড়ুন : পেঁয়াজের দাম নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত কেন্দ্রের, এই দিন থেকে হু হু করে কমবে রেট! স্বস্তিতে আমজনতা
ওদিকে মহুয়াকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়ার প্রসঙ্গে বিজেপি সাংসদ অপরাজিতা সারেঙ্গী বলেন, ‘মহুয়াকে বলার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। তিনি সুযোগ পেলেও তখন কিছু বলেননি। ওয়াক আউট করে গিয়েছিলেন।’ সবে মিলিয়ে মহুয়া ইস্যুতে যেন রীতিমত ঝড় উঠেছিল লোকসভা কক্ষে। এবং অবশেষে এই বিষয়ে ভোটাভুটির মাধ্যমে প্রস্তাব পাশ করানো হয় লোকসভায়। মহুয়াকে সংসদ থেকে ‘এক্সপেল’ বা বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেন স্পিকার ওম বিড়লা।