বাণিজ্য উত্তেজনায় বিরতি? চিন–আমেরিকা রুদ্ধদ্বার আলোচনায় বড় সিদ্ধান্ত

Published on:

Published on:

বাংলাহান্ট ডেস্ক: বরফ গলছে চিন-আমেরিকা (China-America) সম্পর্কের। দক্ষিণ কোরিয়ায় রুদ্ধদ্বার বৈঠকে সামিল হলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। শুল্কযুদ্ধের জেরে দুই বৃহৎ অর্থনীতির সম্পর্কে যে জটিলতা তৈরি হয়েছিল, সেই অবস্থার মধ্যেই বৃহস্পতিবার প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে হয় এই বৈঠক। বৈঠক শেষে ট্রাম্প ঘোষণা করেন, বিরল খনিজ নিয়ে চিনের সঙ্গে এক বছরের একটি চুক্তি হয়েছে। এই চুক্তি অনুসারে, চিন বিরল খনিজ সমৃদ্ধ পণ্য আমেরিকায় রপ্তানি করবে। পাশাপাশি, ট্রাম্প জানান চিনের উপর আরোপিত শুল্ক ৫৭ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৪৭ শতাংশ করা হবে। এই পদক্ষেপে বাণিজ্যযুদ্ধ কিছুটা হলেও প্রশমিত হবে বলে আশা বিশেষজ্ঞদের।

বরফ গলছে চিন-আমেরিকা (China-America) সম্পর্কের

সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ট্রাম্প বলেন, “আমাদের অসাধারণ বৈঠক হয়েছে। ফেন্টানাইল উৎপাদন রোধে আমরা দু’জনেই একমত। প্রেসিডেন্ট জিনপিং আরও কড়া অবস্থান নেবেন বলে জানিয়েছেন। পাশাপাশি, তারা মার্কিন সয়াবিন ক্রয়ও শুরু করবেন।” তিনি আরও জানান, বৈঠকের সমস্ত বিষয় এখনই প্রকাশ করা হবে না, তবে শিগগিরই বিস্তারিত ঘোষণা করা হবে। ট্রাম্প জানিয়েছেন, আগামী এপ্রিল মাসে তিনি চিন (China-America) সফরে যাবেন এবং তার পর জিনপিংও আমেরিকা সফরে আসবেন।

আরও পড়ুন:২৪ নভেম্বর থেকে সুপ্রিম কোর্টের শীর্ষ আসনে বিচারপতি সূর্য কান্ত, তাঁরই এজলাসে নিষ্পত্তি ৩৭০ ধারা থেকে পেগাসাস মামলার

শুল্ক কমানোর পাশাপাশি আমেরিকা (China-America) থেকে সয়াবিন আমদানি পুনরায় শুরু করার বিষয়ে সম্মতি দিয়েছে বেজিং। যা মার্কিন কৃষি খাতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বার্তা। উল্লেখ্য, দুই দেশের মধ্যে এই দ্বন্দ্বের মূলে রয়েছে বিরল খনিজ। অত্যাধুনিক প্রযুক্তি, প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ও ইলেকট্রনিক ডিভাইস তৈরির জন্য এই খনিজ অপরিহার্য। আধুনিক সামরিক সরঞ্জাম থেকে শুরু করে স্মার্টফোন, ব্যাটারি প্রযুক্তি— সব ক্ষেত্রেই বিরল খনিজের ভূমিকা অপরিসীম।

চিন (China-America) ২০২৫ সালে জারি করা নির্দেশিকায় জানায়, ০.১ শতাংশের বেশি বিরল খনিজ রয়েছে এমন কোনও পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে সরকারের অনুমতি প্রয়োজন। বিদেশি সামরিক কাজে এই খনিজ রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয়। এমন পরিস্থিতিতে আমেরিকা বড় চাপে পড়ে। কারণ বিশ্বের বিরল খনিজ উৎপাদন ও প্রক্রিয়াকরণ প্রায় পুরোপুরি চিনের হাতেই। বিশ্বে মোট ৪৪ মিলিয়ন মেট্রিক টন বিরল খনিজই মজুত রয়েছে চিনে, দ্বিতীয় স্থানে ব্রাজিল (২১ মিলিয়ন মেট্রিক টন) এবং তৃতীয় স্থানে ভারত (৬.৯ মিলিয়ন মেট্রিক টন)। বিশ্বজুড়ে ৭০ শতাংশ বিরল খনিজ উত্তোলন এবং ৯০ শতাংশের বেশি প্রক্রিয়াকরণ নিয়ন্ত্রণ করে বেজিং।

Big decision in China-America closed-door talks.

আরও পড়ুন: আগেই হারিয়েছেন চাকরি! এবার চাকরিহারা শিক্ষক, শিক্ষাকর্মীদের জন্য জারি হল কড়া নির্দেশিকা

এই পরিস্থিতিতে ট্রাম্প–জিনপিং বৈঠক ও বিরল খনিজ চুক্তি দুই দেশের (China-America) সম্পর্কের ক্ষেত্রে বড় মোড় ঘোরানো উদ্যোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে। বাণিজ্যযুদ্ধ কোমর ভাঙা পরিস্থিতির মধ্যে এই চুক্তি বিশ্ববাজারে কিছুটা স্থিতিশীলতা আনবে বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক অর্থনীতিবিদরা। তবে চুক্তি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ভূরাজনৈতিক প্রতিযোগিতা কীভাবে প্রভাব ফেলবে, তা নিয়ে এখনই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বিভিন্ন মহলে।