বাংলাহান্ট ডেস্ক: মেক্সিকোর একতরফা শুল্কবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত ঘিরে ভারত–মেক্সিকো (Mexico-India) বাণিজ্য সম্পর্কে নতুন করে টানাপড়েন শুরু হয়েছে। ভারতের একাধিক পণ্যের উপর আমদানি শুল্ক সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোর ঘোষণা করেছে মেক্সিকো। এই সিদ্ধান্তের পর দিল্লি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, বাণিজ্যিক স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হলে ভারতও উপযুক্ত পাল্টা ব্যবস্থা নিতে পারে। শনিবার কেন্দ্রীয় সরকারের এক আধিকারিক জানান, ভারত পরিস্থিতির উপর কড়া নজর রাখছে এবং প্রয়োজন হলে রফতানিকারীদের স্বার্থ রক্ষায় পদক্ষেপ করা হবে।
ভারতের (Mexico-India) ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপাল মেক্সিকো:
সরকারি সূত্রের খবর, আপাতত আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান চাইছে ভারত (Mexico-India)। তবে শুধুমাত্র কূটনৈতিক ভাষায় সীমাবদ্ধ না থেকে দেশের ব্যবসায়িক স্বার্থ সুরক্ষিত রাখাই এখন সরকারের অগ্রাধিকার। ওই আধিকারিক বলেন, “ভারত গঠনমূলক আলোচনার মাধ্যমে সমাধান খুঁজতে আগ্রহী। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নীতির পরিপন্থী কোনও সিদ্ধান্তে ভারতীয় শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হলে, তা মেনে নেওয়া হবে না।” তাঁর বক্তব্যে স্পষ্ট, দরকার হলে প্রতিক্রিয়াও জানাতে প্রস্তুত দিল্লি।
আরও পড়ুন:নিজের বিলাসবহুল জেটেই ভারতে এসেছেন মেসি! রয়েছে আলট্রা-লাক্সারি ফিচার্স, দাম কত জানেন?
আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী, শুল্কবৃদ্ধির সিদ্ধান্তের পর থেকেই ভারত মেক্সিকোর (Mexico-India) সঙ্গে একাধিক স্তরে আলোচনা শুরু করেছে। ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রক নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে মেক্সিকোর অর্থ মন্ত্রকের সঙ্গে, যাতে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিধি মেনে দুই দেশের পক্ষেই গ্রহণযোগ্য কোনও সমাধান বের করা যায়। সম্প্রতি ভারতের বাণিজ্য সচিব রাজেশ আগরওয়াল ও মেক্সিকোর উপ-অর্থমন্ত্রী লুইস রোসেন্ডোর মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকও হয়েছে। সরকার সূত্রে জানা গিয়েছে, এই আলোচনার পর আরও কয়েক দফা বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে।
মেক্সিকোর (Mexico-India) এই নতুন শুল্কনীতি আগামী ১ জানুয়ারি ২০২৬ থেকে কার্যকর হওয়ার কথা। মেক্সিকো সরকারের দাবি, দেশীয় শিল্প ও উৎপাদকদের সুরক্ষা দিতেই এই সিদ্ধান্ত। যদিও আন্তর্জাতিক মহলের একাংশ মনে করছে, এর নেপথ্যে রাজনৈতিক হিসাবও থাকতে পারে। বিশেষ করে প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নীতির সঙ্গে সাযুজ্য রেখে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে কি না, তা নিয়েও জল্পনা চলছে। নতুন শুল্কের আওতায় পড়ছে গাড়ির যন্ত্রাংশ, পোশাক, প্লাস্টিক, ইস্পাত, গৃহস্থলির সামগ্রী, খেলনা, বস্ত্র, আসবাব, জুতো, চামড়ার সামগ্রী, কাগজ, অ্যালুমিনিয়াম, কাচ, সাবান, সুগন্ধি ও প্রসাধনীর মতো বহু পণ্য।

আরও পড়ুন: মেসি বিতর্কে আসল দোষী আড়ালে? শতদ্রুকে সামনে রেখে তৃণমূলকে রক্ষা করা হচ্ছে, অভিযোগ শুভেন্দুর
সবচেয়ে বড় ধাক্কা আসতে পারে ভারতীয় অটোমোবাইল শিল্পে। মেক্সিকো ভারতের (Mexico-India) তৃতীয় বৃহত্তম গাড়ি রফতানি বাজার। নতুন শুল্ক কার্যকর হলে প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকার গাড়ি রফতানিতে সরাসরি প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। ফোকসওয়াগেন, হুন্দাই, নিসান এবং মারুতি সুজুকির মতো বড় সংস্থাগুলি এই শুল্কবৃদ্ধির ফলে সমস্যায় পড়তে পারে। আগে যেখানে গাড়ির উপর শুল্ক ছিল ২০ শতাংশ, তা বাড়িয়ে ৫০ শতাংশ করায় ভারতীয় শিল্পমহলে উদ্বেগ স্পষ্ট।












