অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রয়েছে উভয়পক্ষের সহমত! আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে মিলল বড় আপডেট

Published on:

Published on:

Big updates on India-America trade deals.

বাংলাহান্ট ডেস্ক: ভারত (India)-মার্কিন বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা ক্রমশই গতি পাচ্ছে। শুক্রবার বাণিজ্য সচিব রাজেশ আগরওয়াল জানান, “ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য আলোচনা ভালোভাবে এগোচ্ছে এবং বেশিরভাগ ইস্যুতেই উভয় পক্ষ সহমত হয়েছে।” তিনি আশাবাদী স্বরে বলেন, “আমার মনে হয় আমরা এখন চুক্তি সম্পন্ন করার খুব কাছাকাছি পৌঁছে গেছি।” যদিও আলোচনার সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বা চুক্তির বিশদ বিবরণ তিনি প্রকাশ করেননি।

চূড়ান্তের দোরগোড়ায় ভারত(India)-মার্কিন বাণিজ্য চুক্তি!

এর আগে একাধিক সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়েছিল, মালয়েশিয়ায় আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে ভারতের (India) প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও মার্কিন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে বৈঠক হতে পারে, যেখানে বাণিজ্য চুক্তি ঘোষণা করা সম্ভব। কিন্তু মোদী আসিয়ান সম্মেলনে যোগ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় সেই সম্ভাবনা আপাতত অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

Big updates on India-America trade deals.

আরও পড়ুন:বাংলাদেশের হাজার হাজার যুবককে দেওয়া হবে অস্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণ! হঠাৎ কেন এমন সিদ্ধান্ত ইউনূস সরকারের?

এদিকে বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, “মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে ভারতকে কোনও চুক্তি করতে বাধ্য করা যাবে না।” বার্লিন গ্লোবাল ডায়ালগে তিনি বলেন, “আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কথা বলছি, কিন্তু কোনও তাড়াহুড়ো করছি না। ভারত (India) দীর্ঘমেয়াদী লাভের কথা ভেবে সিদ্ধান্ত নেবে। যদি আমাদের উপর শুল্ক আরোপ হয়, আমরা তা মেনে নেব, তবে সেই সঙ্গে বিকল্প বাজারও খুঁজে নেব।” গোয়েল আরও জানান, ভারতীয় অর্থনীতির চাহিদা বৃদ্ধির ওপর সরকার বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে, যাতে দেশের ভিতরেই বাণিজ্য কাঠামো মজবুত করা যায়। একটি সাম্প্রতিক রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, সম্ভাব্য এই নতুন চুক্তি কার্যকর হলে ভারতীয় পণ্যের আমদানির উপর মার্কিন শুল্ক ৫০ শতাংশ থেকে নেমে ১৫-১৬ শতাংশের মধ্যে আসতে পারে। এটি কার্যকর হলে ভারতীয় রপ্তানিকারক সংস্থাগুলির জন্য তা একটি বড় স্বস্তির বার্তা হবে।

উল্লেখ্য, এর আগেও কৃষি ও দুগ্ধজাত পণ্য নিয়ে দিল্লি ও ওয়াশিংটনের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছিল। আমেরিকার দাবি ছিল, ভারত তাদের কৃষি পণ্যের জন্য পর্যাপ্ত বাজার খুলে দিচ্ছে না। একই সময়ে রাশিয়া থেকে ভারতের (India) তেল আমদানিতে ক্ষুব্ধ হয়েছিল আমেরিকা। সেই ক্ষোভের জেরেই তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতীয় পণ্যের উপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন। তবে ভারত সে সময়ও মাথা নত করেনি। বরং রাশিয়া থেকে তেল আমদানি অব্যাহত রেখেছিল। যদিও সম্প্রতি ট্রাম্প দাবি করেছেন, তাঁর সঙ্গে মোদীর কথা হয়েছে এবং ভারত রাশিয়া থেকে তেল কেনা কিছুটা কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

আরও পড়ুন:মোটা রিটার্নের লোভ! ভারতে “স্ক্যাম”-এর শিকার ৩০,০০০ মানুষ, খোয়ালেন ১,৫০০ কোটি টাকা

রিপোর্ট অনুযায়ী, বর্তমানে ভারতের (India) মোট তেল আমদানির ৩৪ শতাংশ আসে রাশিয়া থেকে এবং প্রায় ১০ শতাংশ আসে আমেরিকা থেকে। নতুন বাণিজ্য চুক্তি কার্যকর হলে, মার্কিন নন-জেনেটিকালি মোডিফায়েড কৃষি পণ্যের জন্য ভারতের বাজার খুলে যেতে পারে। পাশাপাশি, রাশিয়ার থেকে তেল আমদানি কিছুটা হ্রাস করারও সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে বলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিশেষজ্ঞদের ধারণা।

সব মিলিয়ে, ভারত (India)-মার্কিন বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে যে কূটনৈতিক দড়ি টানাটানি চলছে, তা এখন শেষ পর্যায়ে পৌঁছেছে বলেই ইঙ্গিত দিচ্ছে নয়াদিল্লি। এই চুক্তি বাস্তবায়িত হলে দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও গভীর হবে, এমনটাই আশা করছেন বিশেষজ্ঞরা।