বাংলা হান্ট ডেস্কঃ একদা ৩৪ বছর রাজ্যে শাসন করা সিপিএম এবারের ভোটে শূন্য আসন পেয়েছে। এমনকি তাঁদের ভোট পার্সেন্টেজ ব্যাপক হারে হ্রাসও পেয়েছে। এছাড়াও একুশের বিধানসভা নির্বাচনে সিপিএমের অজস্র প্রার্থীর জমানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। বিধানসভা ভোটে ভরাডুবির পর থেকেই বামেরা এর কারণ খুঁজতে একের পর এক পর্যালোচনা বৈঠক করে চলেছে। বুধবার সন্ধ্যায় বাম কর্মীদের উদ্দেশ্যে ভোট পরবর্তী সময়ে দলের কর্তব্য নিয়ে বক্তব্য দেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। আর সেখানে তিনি একগুচ্ছ ভুলের স্বীকারোক্তি করেন।
ওই বক্তব্যে সূর্যকান্ত মিশ্র জানান যে, দেশের বর্তমান পরিস্থিতি হিসেবে বিজেপিই তাঁদের প্রধান শত্রু। তিনি এও জানান যে, বিজেপির বিরুদ্ধে তাঁরা যেই লড়াই চালাচ্ছে, সেই লড়াই আরও তীব্র করা হবে। এছাড়াও তিনি বলেন, তৃণমূল জিতে গিয়েছে বলে তাঁরা পাপ মুক্ত হয়েছে তা নয়, তৃণমূলের বিরুদ্ধেও তাঁরা সরব হবেন। সূর্যবাবু নিজের বক্তব্যে তৃণমূল আর বিজেপির মধ্যে সবথেকে বড় মিল কোথায় সেটা জানান। সূর্যবাবু বলেন, দুই দলই আদ্যন্ত কমিউনিস্ট বিরোধী।
সূর্যবাবু নিজের বক্তব্যে এটাও স্বীকার করে নেন যে, একুশের নির্বাচনে ‘বিজেমূল” স্লোগান দেওয়া ভুল ছিল। বিজেপি আর তৃণমূলের আঁতাত বোঝাতে ‘বিজেমূল” স্লোগানের ব্যবহার করেছিল বামেরা। তবে সেই স্লোগানের সঙ্গে যে বাস্তবের পরিস্থিতিতে কোনও মিল নেই, সেটা তিনি নিজের মন্তব্যে বুঝিয়ে দিয়েছেন। তিনি এটাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, এধরণের স্লোগানের ফলে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছিল।
উল্লেখ্য, একুশের বিধানসভা নির্বাচনে শাসক দল তৃণমূলের থেকেও বিজেপিকে বড় শত্রু হিসেবে মনে করেছিল বামেরা। তাঁদের মতে তৃণমূল ‘লেসার ইভিল”। কিন্তু ভোটের পরে চরম বিজেপি বিরোধিতা করার আত্মতুষ্টিতে ভোগে বামেরা। তাঁরা মেনে নেয় যে, বিজেপির বিরোধিতা করতে গিয়ে শাসক দল তৃণমূলকে ছেড়ে দিয়েছিল। আর এই কারণেই ভোটে এমন ভাবে বিপর্যস্ত হয়েছে তাঁরা।
বামেদের একাংশ কোনওমতেই বিজেপিকে বাংলার ক্ষমতায় দেখতে চেয়েছিল না। আর সেই কারণে তাঁরা ‘নো ভোট টু বিজেপি” অভিযানও চালিয়েছিল। সেই অভিযানে তাঁরা সফল হয়ে বাংলায় বিজেপিকে রুখে দিতে পারলেও, তাঁদের ঝুলি শূন্য হয়ে যায়। ৩৪ বছর রাজ্যের ক্ষমতায় থাকা বামেদের অবস্থা এমন হবে, সেটা হয়ত তাঁরা কোনদিনও আশা করতে পারেনি।