বাংলাহান্ট ডেস্ক: ফিরোজাবাদের এক তরুণ বদলে দিলেন গ্রামের কৃষির ভবিষ্যৎ (Success Story)। রাসায়নিক সার ব্যবহারের ফলে যখন গ্রামে ক্যানসারের মতো মারণ রোগ ছড়িয়ে পড়ছিল, তখন তিনিই প্রথম সাহস দেখিয়ে বিকল্প পথ বেছে নেন। তাঁর নাম বিপিন রাঠোর। এক সময় প্রাইভেট স্কুলে শিক্ষকতা করতেন তিনি। কিন্তু গ্রামের একের পর এক মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ায় যখন চিকিৎসকরা এর কারণ হিসেবে রাসায়নিক সার ব্যবহারের দিকে আঙুল তোলেন, তখন বিপিন নিজের জীবনের লক্ষ্যই বদলে ফেলেন।
বিপিনের অসামান্য সাফল্যের গল্প (Success Story)
বিপিন সিদ্ধান্ত নেন, আর নয় বিষাক্ত রাসায়নিক—এবার প্রকৃতির পথে ফিরে যেতে হবে। তিনি কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র থেকে গোমূত্র ও গোবর ব্যবহার করে কেঁচোচাষের মাধ্যমে জৈব সার তৈরির প্রশিক্ষণ নেন। এরপর নিজের জমিতে তিনটি বেড তৈরি করে ছোট পরিসরে সার উৎপাদন শুরু করেন। ধীরে ধীরে তাঁর উৎপাদন বাড়তে থাকে, আর স্থানীয় কৃষকদের মধ্যেও তাঁর তৈরি জৈব সার জনপ্রিয় হয়ে ওঠে (Success Story)।
বর্তমানে বিপিন রাঠোরের তৈরি জৈব সার ফিরোজাবাদের নানা অঞ্চলে বিক্রি হচ্ছে। তিনি জানান, প্রতি কিলো জৈব সার ২৫ টাকায় বিক্রি হয়। তবে যেসব কৃষক বৃহৎ পরিমাণে সার নেন, তাঁদের ক্ষেত্রে প্রতি কিলোর দাম ৭ থেকে ৮ টাকার মধ্যে রাখা হয়। এই সার ব্যবহার করে কৃষকরা তাঁদের জমিতে রাসায়নিকমুক্ত শস্য ও সবজি উৎপাদন করছেন (Success Story)।
বিপিন বলেন, “আমাদের গ্রামের মানুষ আগে বুঝতে পারতেন না, মাটির প্রাণ ধ্বংস হচ্ছে এই রাসায়নিক সারের কারণে। এখন আমি নিজে দেখছি, জৈব সার ব্যবহারে জমির উর্বরতা বাড়ছে, ফসলের গুণমানও উন্নত হচ্ছে।” তাঁর কথায়, “এখন আমার জীবিকা যেমন ভালো চলছে, তেমনি কৃষকদেরও সাহায্য করতে পারছি। এটি আমার কাছে সবচেয়ে বড় সাফল্য (Success Story)।”
আরও পড়ুন:‘ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে’, আদিনা মসজিদ নাকি আদিনাথ মন্দির? ইতিহাস বুঝিয়ে দেবাংশুর পাল্টা তরুণজ্যোতি
বর্তমানে বিপিনের প্ল্যান্ট থেকে নিয়মিতভাবে জৈব সার উৎপাদিত হচ্ছে, এবং স্থানীয় বাজার ছাড়াও আশপাশের জেলাগুলিতেও তিনি সরবরাহ করছেন। তাঁর এই উদ্যোগ শুধুমাত্র একটি ব্যবসা নয়, বরং পরিবেশ ও সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতার প্রতীক হয়ে উঠেছে (Success Story)।
বিপিন রাঠোরের সাফল্যের গল্প আজ ফিরোজাবাদের সীমা ছাড়িয়ে সারা উত্তর প্রদেশের কৃষকদের মধ্যে প্রেরণা জাগাচ্ছে। তাঁর বিশ্বাস, যদি প্রত্যেক কৃষক সামান্য উদ্যোগ নেন, তবে দেশকে বিষমুক্ত কৃষির পথে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। তাঁর একটাই বার্তা—“প্রকৃতির সঙ্গে যুদ্ধ নয়, সহযোগিতা করলেই মাটির প্রাণ ফিরবে (Success Story)।”