অপর্ণা-কৌশিকরা ‘উভজীবী’, নিজেদের বুদ্ধিজীবী তকমা দিয়ে পালটা মিছিলে গেরুয়া শিবিরের ‘প্রবুদ্ধ’রা

বাংলাহান্ট ডেস্ক: এবার বুদ্ধিজীবী বনাম বুদ্ধিজীবী। বাংলার বিভিন্ন রামনবমীর (Ram Nabami) মিছিলকে কেন্দ্র করে হাওড়া ও রিষড়ায় ঘটে যাওয়া ভয়ঙ্কর ঘটনাবলীর প্রতিবাদে সরব হয়েছিল বাংলার বুদ্ধিজীবী মহল। তাঁরা ছিলেন সমাজের বিশিষ্ট জন। তালিকায় ছিলেন অপর্ণা সেন (Aparna Sen), কৌশিক সেন (Koushik Sen), রেশমি সেন, ঋদ্ধি সেন, অনির্বাণ ভট্টাচার্য, সুমন মুখোপাধ্যায়, সুজন মুখোপাধ্যায়, সুরজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, অনুপম রায়, অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়ের মতো শিল্পীরা।

তাঁদের পাল্টা দিয়ে এবার পথে নামতে চলেছে আরেকদল বুদ্ধিজীবী। এঁরা হলেন গেরুয়া শিবিরের বিশিষ্ট মানুষজন, যাদের গালভরা নাম ‘প্রবুদ্ধ’। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের তরফে আগামী ১৩ এপ্রিল ‘বঙ্গ বিবেক’ মিছিল হতে চলেছে এই প্রবুদ্ধদের নিয়ে। সুবোধ মল্লিক স্কোয়্যার থেকে ধর্মতলার মেট্রো চ্যানেল পর্যন্ত যাবে এই মিছিল। নিজেদেরই বুদ্ধিজীবী বলে দাবি করে প্রবুদ্ধদের বক্তব্য, সনাতন সমাজের উপরে আঘাতের প্রতিবাদে হতে চলেছে এই মিছিল।

aparna kaushik
উল্লেখ্য, এই প্রবুদ্ধদের তালিকায় অন্যতম নাম বিজেপির তারকা সদস্য রুদ্রনীল ঘোষ। বুদ্ধিজীবীদের দেখাদেখি রামনবমীর মিছিলের উপরে হামলার প্রতিবাদ করে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছিল বিজেপির বিশিষ্টরাও। ওই বিবৃতিতে স্বাক্ষর ছিল রুদ্রনীলের। তাঁর মতে, অপর্ণা সেন, কৌশিক সেনরা ‘তথাকথিত বুদ্ধিজীবী’।

রুদ্রনীলের কটাক্ষ, সংখ্যালঘুদের শাসক দল যখন ভুল বোঝাচ্ছিল তখন মুখে কুলুপ এঁটে ছিলেন এই তথাকথিত বুদ্ধিজীবীরা। অথচ এখন যখন সংখ্যালঘুরা নিজেরাই বেরিয়ে আসতে চাইছে তখন এঁরা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। এখানেই থামেননি রুদ্রনীল। তাঁর প্রশ্ন, ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস, চাকরি দুর্নীতি নিয়ে কোনো কথা কেন শোনা যায়নি এই তথাকথিত বুদ্ধিজীবীদের মুখে? তাই এখনো চুপ করে থাকা উচিত তাঁদের।

rudranil
উত্তরে সংবাদ মাধ্যমের কাছে নাট্যব্যক্তিত্ব তথা অভিনেতা কৌশিক সেনের বক্তব্য, কোনো রাজনৈতিক নেতার মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁদের মতামত জানতে চাওয়া হয় সবসময়। কিন্তু তাঁর মতে, রামনবমী, ইদ, বড়দিনের মতো ধর্মীয় উৎসব পালনের থেকে আরো বেশি জরুরি শিশু পুষ্টি, মানুষের খাদ্য সমস্যার দিকে নজর দেওয়া। কিন্তু সেগুলো রাজনৈতিক দলগুলো দেখে না, কারণ তাতে তাদের কোনো সুবিধা নেই।

এরপরেই তিনি বলেন, তাঁদের পাঠানো খোলা চিঠিতে রামনবমীকে আক্রমণ করে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। বরং পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। রুদ্রনীল হয়তো বাংলা বোঝেন না বা দালালি করার জন্য বেশি বুঝতে চাইছেন, কটাক্ষ শানানোর সুযোগ ছাড়েননি অভিনয় জগতের সতীর্থ কৌশিক।

মুখ খুলেছেন কৌশিক পুত্র ঋদ্ধি সেন এবং অনির্বাণ ভট্টাচার্যও। ঋদ্ধি স্পষ্ট বলেন, ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসের সময়েও বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলেন তাঁরা। সমস্ত প্রমাণ রয়েছে। একই সুর অনির্বাণের কথাতেও। চাকরিপ্রার্থীদের ধর্নায় সপরিবারে গিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন কৌশিক সেন। তবে তাঁর মতে, সব বিষয় নিয়ে কথা বলা সম্ভব নয়। রুদ্রনীল যেহেতু তাঁর সিনিয়র, তাই কোনো রকম অপমানজনক মন্তব্য তিনি করতে পারবেন না।

Niranjana Nag

সম্পর্কিত খবর