অবৈধ দখল উচ্ছেদ ঘিরে রক্তাক্ত অসম, পশ্চিম কার্বি আংলংয়ে সংঘর্ষে নিহত ২, জারি ১৬৩ ধারা

Published on:

Published on:

Follow

বাংলাহান্ট ডেস্ক: অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদকে কেন্দ্র করে ভয়াবহ সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠল অসমের (Assam) পশ্চিম কার্বি আংলং জেলা। মঙ্গলবার দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় খেরোনি এলাকা। সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ঘটনায় অন্তত দু’জনের মৃত্যু হয়েছে এবং বহু মানুষ আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে ও কাঁদানে গ্যাসের সেল নিক্ষেপ করে। সংঘর্ষের জেরে এলাকায় তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়েছে।

অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ নিয়ে রণক্ষেত্র অসমের (Assam) পশ্চিম কার্বি আংলং

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রশাসনের তরফে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১৬৩ ধারার অধীনে বেআইনি জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একই সঙ্গে গুজব ও উত্তেজনা ছড়ানো ঠেকাতে কার্বি আংলং ও পশ্চিম কার্বি আংলং— এই দুই জেলায় অনির্দিষ্টকালের জন্য ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখার নির্দেশ জারি করা হয়েছে। অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা জানিয়েছেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে খেরোনি এলাকায় অতিরিক্ত নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হচ্ছে এবং প্রশাসন সার্বক্ষণিক নজরদারি চালাচ্ছে।

আরও পড়ুন:বাংলাদেশ সীমান্ত উত্তেজনার আবহে নৌসেনার শক্তি বৃদ্ধি, গার্ডেন রিচের তৈরি রণতরী অঞ্জদীপ হাতে পেল ভারতীয় নৌবাহিনী

এই সংঘর্ষের পেছনে রয়েছে দীর্ঘদিনের জমি-সংক্রান্ত বিরোধ। স্থানীয় আদিবাসী জনগোষ্ঠীর অভিযোগ, পশুচারণের জন্য সংরক্ষিত সরকারি জমি দীর্ঘদিন ধরে কিছু বিহারি পরিবার অবৈধভাবে দখল করে রেখেছে। এই জমি দখল মুক্ত করার দাবিতে গত প্রায় ১৫ দিন ধরে আন্দোলনে নেমেছেন আদিবাসীরা। তাঁদের অনশন ও বিক্ষোভের জেরে সোমবার থেকেই পরিস্থিতি ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

অভিযোগ, সোমবার আন্দোলনের সময় কার্বি আংলং অটোনোমাস কাউন্সিল (KAAC)-এর প্রধানের বাসভবন এবং খেরোনি বাজারের অন্তত ১৫টি দোকানে আগুন লাগানো হয়। এতে ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়েন ব্যবসায়ীরা। সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, এই ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকালে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী ও স্থানীয় বাসিন্দারা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখান। একই সময়ে আদিবাসী আন্দোলনকারীরাও অবৈধ দখলদার উচ্ছেদের দাবিতে খেরোনি বাজার এলাকায় জড়ো হন।

Bloodshed in Assam over eviction of illegal occupants.

আরও পড়ুন:ভারতকে ত্রিমুখী হামলার হুমকি পাক যুবনেতার, বাংলাদেশে সামরিক ঘাঁটির প্রস্তাব ঘিরে চাঞ্চল্য

দুই পক্ষ মুখোমুখি হতেই পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। প্রথমে বাক্‌বিতণ্ডা শুরু হলেও অল্প সময়ের মধ্যেই ইট-পাথর ছোড়াছুড়ি শুরু হয়। এলাকায় মোতায়েন নিরাপত্তা বাহিনী পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করলেও সংঘর্ষ আরও তীব্র আকার নেয়। মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পরিস্থিতি থমথমে ছিল বলে প্রশাসন জানিয়েছে। নতুন করে অশান্তি এড়াতে এলাকায় টহল বাড়ানো হয়েছে এবং সাধারণ মানুষকে শান্ত থাকার আবেদন জানানো হয়েছে।