বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আবারও প্রকাশ্যে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। রাতভর তৃণমূল কর্মীদের বাড়িতে চলল বোমাবাজি। এহেন ঘটনায় চরম উত্তেজনা ছড়িয়েছে শাসনের তেহাটা গ্রামে। বৃহস্পতিবার রাতে বোমা ছোঁড়া হয় স্থানীয় তৃণমূল কর্মী প্রভাষ ঘোষ, সঞ্জিত ঘোষ, দিলীপ ঘোষ, হাকিম মোড়লের বাড়িতে৷ এমনকি বেশ কয়েকটি বাড়িতে চলে ভাঙচুরও৷ রাতভোর এহেন বোমাবাজির জেরে রণক্ষেত্রের চেহারা নেই এলাকায়। ঘটনায় অভিযোগের তীর এলাকারই অপর এক তৃণমূল কর্মী মোতালেব আলির দিকে।
জানা যাচ্ছে, ২০১৯ সাল নাগাদ খুন হন তেহাটার তৃণমূল নেতা তথা মোতালেবের কাকা আব্দুল সামাদ আলি। সামাদ আলির মৃত্যুর পর থেকেই এলাকা ছাড়া ছিল সে। দীর্ঘদিন যাবৎ ওই গ্রামে দেখা মেলেনি মোতালেবের। সম্প্রতি মাস দুয়েক আগে আবার তেহাটার ফিরে আসে তৃণমূল কর্মী মোতালেব। স্থানীয় সূত্রে খবর, মোতালেব গ্রামে ফেরার পর থেকেই উত্তেজনা ছড়াতে শুরু করে এলাকায়।
আক্রান্ত তৃণমূল কর্মী দিলীপ ঘোষের দাবি, বৃহস্পতিবার রাত ১ টা নাগাদ বোমা পড়ে তাঁর বাড়িতে। এরপর তাঁকে বাড়ির দরজা খুলে দেওয়ার জন্য জোর করা হতে থাকে। মধ্যেও আবার চলে বোমাবাজি। বোমার আঘাতে ভেঙে যায় বাড়ির জানলার কাচ। কোনও ক্রমে একটি ঘরে লুকিয়ে প্রাণে বাঁচলেও ভাঙা কাচ থেকে তাঁর ভালোরকম আঘাত লাগে বলেই জানিয়েছেন তিনি।
স্থানীয় সূত্রে খবর, এলাকায় মাছের ভেড়ির দখল নিয়েই ওই গন্ডগোল। অভিযোগ এলাকায় একাধিক ভেড়ি থেকে তোলা তুলত মোতালেব এবং তার দলের ছেলেরা। আর সেই টাকার ভাগ বাটোয়ারা নিয়েই এই বোমাবাজি। বিষয়টি যদিও তৃণমূলেএ গোষ্ঠীকোন্দল বলে মানতে নারাজ স্থানীয় বিধায়ক হাজি নুরুল ইসলাম।
রামপুরহাট গণহত্যা কাণ্ডের রেশ কাটেনি এখনও। সেখানেও সামনে এসেছে তৃণমূল নেতাদের তোলাবাজির ঘটনা। বোমাবাজি চলে সেখানেও। বৃহস্পতিবার রাতের শাসনের ঘটনা যেন মনে করিয়ে দেয় রামপুরহাটের সেই ভয়াবহ ছবিটাকেই। এলাকায় শান্তি বজায় রাখতে মোতায়েন করা হয়েছে বিপুল পুলিশবাহিনী।
অন্যদিকে, মালদহতে বাড়ি থেকে বহু দূরে উদ্ধার তৃণমূল কর্মীর দেহ। বাড়ির প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে ভুট্টা ক্ষেতের মধ্যে থেঁতলানো অবস্থায় মেলে দেহটি। মৃত ওই তৃণমূল কর্মীর নাম নাসিম আলি।
বৃহস্পতিবার রাতে মেয়ের জন্য মাংস কিনে বাড়ি ফিরছিলেন মালদহের কালিয়াচকের বাসিন্দা বছর পঁয়ত্রিশের নাসিম। কিন্তু অনেক রাত হয়ে গেলেও বাড়ি ফেরেননি তিনি। শেষে বহু খোঁজাখুঁজির পর বাড়ি থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে বৈষ্ণবনগরে মেলে তাঁর মৃতদেহ। ভারী কোনও জিনিস দিয়ে মাথায় আঘাত করেই তাঁকে খুন করা হয়েছে বলেই প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান।
দেহটি উদ্ধার করে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। তৃণমূল কর্মী হলেও কারও সঙ্গে নাসিমের সেই অর্থে বিবাদ ছিল না বলেই পরিবার সূত্রে খবর। ঘটনার তদন্ত করছে পুলিশ। তবে ওই যুবকের মৃত্যুর পর যে দুই মেয়ে এবং এক ছেলেকে নিয়ে অকুল পাথারে স্ত্রী, তা বলাই বাহুল্য।