বাবার অকালমৃত্যু, হয়নি বেশিদূর পড়াশোনা, ৪১ বছরে উচ্চমাধ্যমিক দিয়ে নজির গড়লেন BJP বিধায়ক

বাংলা হান্ট ডেস্ক: ‘শিক্ষার কোনও বয়স নেই’, একথা আমরা ছোট থেকেই শুনে আসছি। আর এমনটাই এবার দেখা গেল চোখের সামনে। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা যিনি দিলেন, তিনি আর পাঁচটা সমাজের লোকের থেকে আলাদা। সাধারণ মানুষ নন, তিনি জনপ্রতিনিধি। সুযোগ পেয়ে এবার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিলেন বনগাঁ দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক স্বপন মজুমদার (Swapan Majumder)। ছেলেবেলায় বাবার অকাল মৃত্যু। সেই কারণে ইচ্ছা থাকলেও পড়াশোনা বেশি দূর এগোয়নি। এবার সুযোগ পেয়েই উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় (Higher Secondary) বসলেন তিনি। বয়স যে কোনও কিছুর বাধা হতে পারে না, তা প্রমাণ করলেন স্বপনবাবু।

রবীন্দ্রমুক্ত বিদ্যালয় (Rabindra Mukta Vidyalaya) থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিলেন বনগাঁর এই বিজেপি বিধায়ক। তাঁর পরীক্ষার সিট পড়েছিল বনগাঁর কালীতলা বিশ্ববন্ধু শিক্ষা নিকেতনে। গত বছর তিনটি পরীক্ষা দিয়েছিলেন তিনি। চলতি বছরে দুটি পরীক্ষা বাকি ছিল। বুধবার ছিল এডুকেশন পরীক্ষা। এই নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি বাস্তব শিক্ষায় শিক্ষিত হতে চাই কাটমানির শিক্ষা বা তোলাবাজির শিক্ষায় শিক্ষিত হতে চাই না। ছোটবেলায় বাবার মৃত্যুর কারণে খুব বেশি পড়াশোনা করতে পারিনি, তবে ক্লাসে ফার্স্ট হতাম। পরবর্তীতে উচ্চশিক্ষিত হওয়ার স্বপ্নপূরণ করতে পরীক্ষা দিচ্ছি। পড়াশোনার কোনও বয়স হয় না। মাধ্যমিক আগে দিয়েছি, এবার উচ্চমাধ্যমিকের দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা দিচ্ছি।’ বুধবার স্বপনবাবু পরীক্ষা দিতে গেলে পরীক্ষা কেন্দ্রের বাইরে ভিড় জমান স্থানীয় বিজেপি (BJP) কর্মী-সমর্থকেরা।

উল্লেখ্য, নির্বাচনের সময়ে দেওয়া শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট ভুয়ো বলে দাবি করেছিল তৃণমূল (TMC)। সে নিয়ে কলকাতায় হাইকোর্টের দ্বারস্থ হতে দেখা যায় শাসকদলের নেতাদের। সেই কারণেই কি যোগ্যতার সার্টিফিকেট পেতে এত ব্যস্ত বিধায়ক, প্রশ্ন শাসক দলের।

এই নিয়ে বনগাঁ পুরসভার চেয়ারম্যান গোপাল শেঠ বলেন, ‘বনগাঁর মানুষ হিসেবে লজ্জিত বোধ করছি। একজন জাল সার্টিফিকেট নিয়ে শিক্ষিত হতে চাইছেন। এটা একমাত্র বিজেপিতেই সম্ভব। এই নিয়ে মামলা করা হয়েছে। কীভাবে উনি উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার অ্যাডমিট কার্ড পেলেন? আমি মধ্যশিক্ষা পর্ষদের বিরুদ্ধে তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।’