বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রাষ্ট্রপতি ও রাজ্যপালের বিলে সম্মতি সংক্রান্ত সময়সীমা নিয়ে তীব্র বিতর্কের মাঝে সরাসরি কড়া বার্তা দিলেন দেশের প্রধানবিচারপতি বিআর গবাই (BR Gavai)। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, কেউ যতই উচ্চপদে থাকুন না কেন, তাঁরা আইনের ঊর্ধ্বে নন। বৃহস্পতিবার শীর্ষ আদালতে কেন্দ্রের হলফনামা জমা দেওয়ার পরই বিচারপতির মন্তব্য ঘিরে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টে শুনানির সময় সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা জানালেন, কোনও রাজ্যপাল তিন-চার বছর ধরে একটি বিল নিজের কাছে স্থগিত রাখতে পারেন না। তাঁকে অনুমোদন বা খারিজের সিদ্ধান্ত নিতেই হবে। তবে সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার ক্ষমতা কারও নেই। হলফনামায় আবারও অনুচ্ছেদ ২০০-এর উল্লেখ করে কেন্দ্র দাবি করেছে, রাজ্যপালকে যত দ্রুত সম্ভব পদক্ষেপ নিতে হবে, কিন্তু তিনি সেটা ও কবে করবেন, সেটা শুধু মাত্র তাঁর এক্তিয়ারেরই অন্তর্ভুক্ত।
সলিসিটর জেনারেল আদালতে জানান, গত ৫৫ বছরে মাত্র ২০টি বিলে সম্মতি স্থগিত রাখা হয়েছে। ৯০ শতাংশ বিল এক মাসের মধ্যেই অনুমোদন পেয়েছে। তবে কিছু বিল জটিলতার কারণে দীর্ঘসময় স্থগিত থেকেছে। এই তথ্য তুলে ধরে কেন্দ্রের বক্তব্য, শীর্ষ আদালতের পক্ষে রাজ্যপাল বা রাষ্ট্রপতিকে নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেওয়া কার্যত ‘এক্তিয়ার বহির্ভূত’।
প্রধান বিচারপতির (BR Gavai) মন্তব্য
এই যুক্তির পরিপ্রেক্ষিতেই প্রধানবিচারপতি বিআর গবাই (BR Gavai) বলেন, “কেউ যত বড় পদে বসেই থাকুন না কেন, তিনি আইনের নীচেই। ক্ষমতার পার্থক্য থাকা প্রয়োজন। বিচারবিভাগীয় পর্যবেক্ষণ থাকাও জরুরি। তবে বিচারবিভাগীয় সন্ত্রাস তৈরি হওয়া উচিত নয়।” তিনি প্রশ্ন তোলেন, যদি কোনও সাংবিধানিক পদাধিকারী নিজের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন না করেন, তাহলে সংবিধানের রক্ষকরা কি হাত গুটিয়ে বসে থাকবেন?
আরও পড়ুনঃ ফের খারিজ রাজ্যের দাবি! বাংলার SIR নথি হিসাবে স্বাস্থ্যসাথী নয়, আধারই ভরসা, জানাল কমিশন
রাষ্ট্রপতি ও রাজ্যপালের হাতে বিল অনুমোদনের সময়সীমা নিয়ে যে তর্কাতর্কি শুরু হয়েছে, প্রধান বিচারপতির (BR Gavai) মন্তব্য তার মোড় ঘুরিয়ে দিল। বিচারবিভাগ ও কেন্দ্রের এই দ্বন্দ্ব সংবিধানিক কাঠামোর ভেতরে ক্ষমতার ভারসাম্য নিয়েই নতুন আলোচনার সূচনা করল।