২৫ টাকার ধার মেটাতে আমেরিকা থেকে ভারতে এল ভাই-বোন, খুঁজে খুঁজে বের করল বাদামওয়ালাকে

বাংলা হান্ট ডেস্ক: কিছু কিছু সময়ে এমন সব ঘটনা ঘটে যা আর পাঁচটা ঘটনার থেকে সম্পূর্ণ আলাদা হয়। তাই, খুব সহজেই সেগুলো গেঁথে যায় মনের গভীরে। সম্প্রতি ঠিক এইরকমই এক ঘটনা ঘটেছে, যা ইতিমধ্যেই সাড়া ফেলেছে দেশজুড়ে।

এক চিনেবাদাম বিক্রেতার কাছে থাকা ২৫ টাকার ধার মেটাতে সুদূর আমেরিকা থেকে এসে ২৫ হাজার টাকা দিয়ে সেই ধার মিটিয়ে দিয়ে গেলেন বিদেশে বসবাসকারী ভাই-বোন। আর এই ঘটনা সামনে আসতেই তাঁদের প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছেন নেটিজেনরা।

জানা গিয়েছে যে, ২০১০ সালে বাবা মোহনের সঙ্গে অন্ধ্রপ্রদেশের ইউ কোথাপল্লি সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে আসেন আমেরিকায় বসবাসকারী ভাই-বোন নেমানি প্রণব ও সুচিতা। সেখানে তাঁরা সাত্তায়া নামের একজন চিনেবাদাম বিক্রেতাকে দেখতে পেয়ে তাঁর কাছ থেকে চিনেবাদাম কিনে খেতে শুরু করেন। তারপর যখন মোহন টাকা দিতে যান তখন তিনি বুঝতে পারেন যে, মানিব্যাগটি তিনি ভুলে রেখে এসেছেন, এবং তাঁর কাছে চিনাবাদাম বিক্রেতাকে দেওয়ার মতো টাকা নেই। সেই কথা সাত্তায়াকে জানালে তিনি কোনো টাকা না নিয়েই চিনেবাদাম দিয়েছিলেন।

এদিকে, মোহন সাত্তায়াকে তাঁর এই ঋণ শীঘ্রই শোধ করার কথা দেন এবং সাত্তায়াকে শনাক্ত করার জন্য একটি ছবিও তুলেছিলেন তিনি। যদিও, দ্রুত ঋণ পরিশোধের প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে পারেননি মোহন। কারণ, কিছুদিনের মধ্যেই কর্মসূত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যেতে হয়েছিল তাঁকে।

তবে, দীর্ঘদিন হয়ে গেলেও সেই ঋণের কথা মনে রেখেছিলেন মোহন। যে কারণে ১১ বছর পর যখন মোহনের ছেলে নেমানি এবং মেয়ে সুচিতা ভারতে ফিরে আসেন, তখন তাঁরা সাত্তায়ার খোঁজ শুরু করে তাঁর ঋণ পরিশোধ করার সিদ্ধান্ত নেন। এর জন্য তাঁরা কাকিনাড়ার বিধায়ক চন্দ্রশেখর রেড্ডির সাথে যোগাযোগ করে সাত্তায়াকে খুঁজে বের করার জন্য অনুরোধ করেন।

IMG 20220105 141804

পাশাপাশি, ওই চিনেবাদাম বিক্রেতার দ্রুত খোঁজ পেতে সাহায্য নেওয়া হয় সোশ্যাল মিডিয়ারও। সেখান থেকেই জানতে পারা যায় যে, বর্তমানে আর বেঁচে নেই সাত্তায়া! এদিকে, এই ঘটনার পরে শোকাহত হয়ে পড়েন মোহন সহ তাঁর ছেলে-মেয়েরাও। তারপরই মোহন ওই ঋণ মেটাতে এবং এবং সাত্তায়ার পরিবারকে সাহায্য করতে ২৫ হাজার টাকা তুলে দেন। আর এই ঘটনাই সোশ্যাল মিডিয়ার সৌজন্যে বর্তমানে ভাইরাল হয়েছে দেশজুড়ে। পাশাপাশি, তাঁদের এই কর্মকান্ডের প্রশংসাও করেছেন সকলেই!

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর