প্রয়াত ‘জওহরলাল নেহরুর স্ত্রী’! ৮৫ বছর বয়সে জীবনাবসান, চেনেন এই মহিলাকে?

বাংলা হান্ট ডেস্ক: প্রয়াত জওহরলাল নেহরুর ‘স্ত্রী’ (Jawaharlal Nehru)! মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর। ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী ‘জওহরলাল নেহরুর স্ত্রী’ কথাটার মধ্যে অবশ্য একটা অন্য গল্প আছে! যিনি দেহত্যাগ করেছেন তাঁর নাম বুধনি মেঝান (Budhni Mejhan)।

বুধনি মেঝান ‘জওহরলাল নেহরুর বউ’ বলেই পরিচিত হয়ে উঠেছিলেন। শুক্রবার গভীর রাতে মাইথনের পাঞ্চেতে (Panchet) হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর। শনিবার তাঁর শেষকৃত্যও সম্পন্ন হয়। শেষকৃত্য হয় পাঞ্চেত শ্মশানে। তার আগে ডিভিসির (DVC) পক্ষ থেকে তাঁকে সম্মান জানানো হয়েছে। সম্মান জানানো হয় স্থানীয় পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকেও।

আরও পড়ুন: মোদীর বাবা মিথ্যেবাদী! প্রধানমন্ত্রীকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করে ঘোর বিপদে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে

বুধনি মেঝানকে ‘জওহরলাল নেহরুর স্ত্রী’ বলার পিছনে একটা গল্প রয়েছে। ১৯৫৯ সালে ৬ ডিসেম্বর ডিভিসির পাঞ্চেত জলাধারের উদ্বোধন হয়েছিল। সেটি উদ্বোধন করতে এসেছিলেন ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু। পাঞ্চেত জলাধার অঞ্চলটি আদিবাসী-অধ্যুষিত এলাকা হওয়ায় নেহরু সেদিন কোনও একজন আদিবাসী মেয়ের (Tribal Girl) হাত দিয়েই এই বহু আকাঙ্ক্ষিত প্রজেক্টটির উদ্বোধন করাতে চেয়েছিলেন। সেখানে তখন উপস্থিত ছিলেন এই বুধনি মেঝান। তিনি তখন তরুণী। তাঁরই হাত দিয়ে জওহরলাল নেহরু পাঞ্চেত ড্যাম উদ্বোধন করিয়েছিলেন। অনুষ্ঠানস্থলে ডিভিসির পক্ষ থেকে জওহরলাল নেহরুকে মালাও পরিয়েছিলেন বুধনি। আর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নেহাতই মজা করেই সেই মালাটি পরে পরিয়ে দিয়েছিলেন বুধনিরই গলায়। অর্থাৎ, দু’জনে মালাবদল করেন।

আর এরপরেই বুধনির সমাজের লোকজন তাঁকে বহিষ্কার করেন, কারণ প্রধানমন্ত্রী (Prime Minister) তাঁকে মালা পরিয়েছেন। নিছকই মজা করে বুধনির গলায় মালা পরিয়ে বুধনির কত বড় ক্ষতি যে সেদিন নেহরু করেছিলেন, তা ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারেননি তিনি।

budhni mejhan

সমাজ থেকে বিতাড়িত হওয়ার বিষয়টি পরে রাজীব গান্ধীর কানে গিয়েছিল। তিনি নির্দেশ দিয়েছিলেন বুধনিকে খুঁজে তাঁকে যেন চাকরি দেয় ডিভিসি। ডিভিসি কর্তৃপক্ষ তাকে খুঁজে পান অবেশেষে। জানা গিয়েছিল, স্ব-সম্প্রদায় থেকে নির্বাসিত বুধনি সেদিন রঘুনাথপুরের দিকে চলে গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি বিয়ে করে নতুন সংসারও শুরু করেন। একটি কন্যাসন্তানও জন্মায়। তাঁকে খুঁজে পেয়ে আসানসোলে কংগ্রেসের তৎকালীন সাংসদ আনন্দগোপাল মুখোপাধ্যায় রাজীব গান্ধীর সঙ্গে বুধনির দেখা করিয়ে দেন। বুধনিকে চাকরিও দেয় ডিভিসি। পরবর্তীকালে পুরো সময় কাজ করে প্রথামতো অবসর নেন বুধনি। ডিভিসির আবাসনেই থাকতেন তিনি। যদিও পরবর্তী কালেও নিজের গ্রামে ফিরতে পারেননি বুধনি।

Monojit

সম্পর্কিত খবর