বাংলাহান্ট ডেস্ক : প্রায় প্রতিদিন সংবাদমাধ্যমে নজর রাখলেই চোখে আসে নারী নির্যাতনের খবর। যত দিন যাচ্ছে ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে ধর্ষণ, শ্লীলতাহানি, নারী নির্যাতন সংক্রান্ত ঘটনা। পুলিশ প্রশাসন প্রতিনিয়তই নারী নির্যাতন রোধে নানারকম পন্থা অবলম্বন করার ভাবনা চিন্তা করছে। বেশকিছু গেজেট তৈরি করা হয়েছে যা একটি মহিলাকে এই ধরনের অবাঞ্চিত ঘটনার হাত থেকে রক্ষা করবে। এবার সেই পথেই হাঁটলেন বর্ধমানের এক কলেজ ছাত্র। তার আবিস্কৃত যন্ত্রটি এতটাই আধুনিক ও সুবিধা যুক্ত যে সেটি নাম তুলে নিয়েছে ইন্ডিয়া বুক অব রেকর্ডসে। ইন্ডিয়া বুক অব রেকর্ডসের ‘ইনভেটিভ ওমেন সেফটি ব্যাণ্ড ডিভাইস ডিজাইন বাই এ টিন’-এ আবিরের তৈরি যন্ত্রটিকে বাছাই করে নেওয়া হয়েছে।
জানা গিয়েছে, পূর্ব বর্ধমানের বড়শুলের বাসিন্দা আবির ঘোষ। আবির দুর্গাপুরের ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে বিটেকের প্রথম বর্ষের ছাত্র। দিল্লিতে এক মহিলার উপর নির্যাতনের খবর পড়ে তার মাথায় এই যন্ত্রটি তৈরীর ধারণা আসে। মহিলাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে তার এই যন্ত্রটি কাজে দেবে। তার আবিষ্কৃত যন্ত্রটির সাহায্যে কেউ বিপদে পড়লে সেই যন্ত্রটি সংকেত পাঠাবে। অপরাধীর চোখের লেজার আলো ফিরে ঝাপসা করে দেবে চোখের দৃষ্টি। এছাড়াও এই যন্ত্রের রয়েছে এমন একটি সুবিধা যার সাহায্যে পুলিশ সেই মহিলাটি অবস্থান সম্পর্কে জানতে পারবেন। এর পাশাপাশি এই যন্ত্রটিতে অটোমেটিক কল ও ভিডিও রেকর্ডিং এর সুবিধাও আছে।
এই যন্ত্রটি কিভাবে কাজ করবে তার বিষয়ে বুঝিয়েছেন আবির। তিনি বলেন, এই যন্ত্রটি হাতে পড়তে হবে। কেউ যদি টানাটানি করে বা জোর করে তুলে নিয়ে যেতে চায় তাহলে এই যন্ত্রের সেন্সার গুলি অ্যাকটিভ হয়ে যাবে। বিপদের সময় এই সেন্সর কাজে লাগিয়ে স্থানীয় পুলিশ ও আত্মীয়র সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন সেই মহিলা। ৭৭৭ লিখে পুলিশ যদি পাল্টা এসএমএস করে তাহলে যন্ত্রটি পুলিশকে মহিলাটির অবস্থান সম্পর্কে অবগত করবে। বিপদের আঁচ করলে যন্ত্রটির একটি বিশেষ বোতামের সাহায্যে দুষ্কৃতীকে ২০০০ ভোল্টের ইলেকট্রিক শক দেওয়া যাবে। এছাড়াও কেউ যদি মহিলাকে বিরক্ত করে তাহলে হাই সেন্সর লাইট দিয়ে অপরাধীর চোখ ৩০ সেকেন্ডের জন্য ঝাপসা করে দেওয়া যাবে।
আবিরের এই আবিষ্কারে রীতিমতো সাড়া পড়ে গেছে পূর্ব বর্ধমান জেলা জুড়ে। তার এই আবিষ্কৃত যন্ত্রের ভূয়শী প্রশংসা করে স্থানীয় বিধায়ক নিশীথ মালিক তাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।