একা হাতেই বাজি কারখানা গড়ে তুলেছিলেন বিধবা বৃদ্ধা, জেনে নিন বুড়িমার বাজির ইতিহাস

এগিয়ে আসছে কালীপূজা (kalipujo) ও আলোর উৎসব দীপাবলি (diwali)। কালী পূজা এবং দিওয়ালিতে বাজি ফাটিয়েছে অথচ বুড়িমার নাম শোনেনি এমন মানুষ হয়তো নেই। বুড়িমার আতশবাজি হাওড়ার নিজস্ব ঘরোয়া ব্র্যান্ড। জানেন কি এই ব্র‍্যান্ডের পিছনের কাহিনীটি, তা নিয়েই আজকের এই প্রতিবেদন।

images 2020 11 08T172453.047

বুড়িমার আসল নাম অন্নপূর্ণা দাস, তিনি ফরিদপুরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। স্বাধীনতার পরেই ফরিদপুরের নিজের গ্রাম ছেড়ে ভারতে চলে আসতে হয়েছিল তাকে। দেশভাগের কারনে দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরে শরণার্থী শিবিরে তার ছয় বছরের ছেলের সাথে আশ্রয় নিতে হয়েছিল। ১৯৪৮ সালে, দাঙ্গার শিকার অন্নপূর্ণা তার তিন সন্তানকে নিয়ে পূর্ব পাকিস্তান থেকে শহর কলকাতায় পৌঁছেছিল। পেট চালাতে তিনি বাজারে সবজি বিক্রি শুরু করেন। নিজের উপার্জনের অর্থ দিয়ে খোলেন একটি বিড়ির কারখানাও।

১৯৫২ সালে, তিনি বেলুড়ে চলে আসেন। সেখানে তিনি একটি ছোট দোকান কিনেছিলেন। এই দোকানে তিনি খেলনা এবং খেলনা বিক্রি করা শুরু করেছিলেন। এর সাথে কিছু বিশেষ অনুষ্ঠানে সরস্বতী পুজোর জন্য প্রতিমা, বিশ্বকর্মা পুজোর জন্য ঘুড়ি এবং কালী পুজোর জন্য বাজিও বিক্রি শুরু করেন তিনি। এই সময়েই তিনি বাঁকড়ার এক কারিগরের কাছ থেকে আতশবাজি তৈরি করতে শিখেছিলেন।

এরপরে বুড়িমার তৈরি চকলেট বোম এতটাই বিখ্যাত হয়ে যায় যে তাকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয় নি। কয়েকদিনের ডানকুনি, তালবান্ধা এবং শিবকাসিতে কারখানা স্থাপন করেন। কয়েক বছর আগে শব্দ দূষণের কারনে শব্দবাজি নিশিদ্ধ হয়েছে। ফলে বুড়িমার চকলেট বোম এখন আর পাওয়াই যায় না। তবে তার কোম্পানি এতটাই বড় হয়ে গিয়েছে যে এই মুহুর্তে বাজির দুনিয়ায় রাজত্ব করছেন তিনি। প্রতিবছরই সারা বাংলার হাজার হাজার ব্যবসায়ী তার সংস্থার থেকে বাজি কেনেন। এমনকি বাংলার বাইরেও তা রপ্তানি হয়৷

 

 

সম্পর্কিত খবর