নীতীশ-মোদীতেই রইল ভরসা! কোন জাদুবলে বিহারে ঝড় তুলল NDA?

Published on:

Published on:

By what magic power did NDA win in Bihar?
Follow

বাংলাহান্ট ডেস্ক: বিহারের (Bihar) ভোটে এ বার যে ছবি স্পষ্ট হচ্ছে, তাতে পরিষ্কার—এনডিএ-র ঝড়ের সামনে কোনও রাজনৈতিক শক্তিই টেকেনি। পাঁচ ঘণ্টা গণনা চলার পরই স্পষ্ট হয়ে যায় যে নীতীশ কুমার ও বিজেপির জোটই রাজ্যে সরকার গঠন করতে চলেছে। এই জয় শুধুমাত্র ‘মোদী ম্যাজিক’-এর অর্জন নয়, বরং নিটোল ভাবে কাজ করেছে এনডিএ-র সমন্বিত প্রচার, সুনির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতি এবং লক্ষ্যভিত্তিক কল্যাণনীতি। বিহারের মানুষ উন্নয়নের জোয়ারে শরিক হতে চাইছে—এই মনোভাবই ভোটের অঙ্কে প্রতিফলিত হয়েছে।

কি কি কারণে বিহারে (Bihar) ঝড় তুলতে সক্ষম হল এনডিএ?

বিহারে (Bihar) এনডিএ-র জয়ের সবচেয়ে বড় কারণ হিসেবে উঠে আসছে নীতীশ কুমারের সেই বহু আলোচিত ঘোষণা, যার প্রভাব সরাসরি পৌঁছেছে রাজ্যের ১.৩ কোটি মহিলার ঘরে। প্রতিটি মহিলা ভোটারকে ১০ হাজার টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি ভোটের মাঠে খেল ঘুরিয়ে দিয়েছে। প্রতিদ্বন্দ্বী তেজস্বী যাদব যেখানে ২৫০০ টাকার প্রতিশ্রুতি দিয়ে লড়াইয়ের চেষ্টা করেছিলেন, সেখানে নীতীশের ১০ হাজার টাকার স্কিম যেন বহু গৃহস্থের অর্থনৈতিক স্বস্তির প্রতিচ্ছবি হয়ে দাঁড়ায়। তারই প্রভাব দেখা গেল মহিলা ভোটের উপস্থিতিতে—এ বছরে রেকর্ড ভেঙে ৭১ শতাংশেরও বেশি মহিলা ভোট দিয়েছেন। ভোটের অঙ্কে এই বিপুল মহিলা অংশগ্রহণই এনডিএ-কে বড় সুবিধা এনে দিয়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।

আরও পড়ুন:বিহার জয়ে শাহ-ম্যাজিক! সাত দফার মাস্টারপ্ল্যানেই কি বদলে গেল সমীকরণ?

তবে শুধু এই স্কিমই নয়, বিহার (Bihar) ভোটের ময়দানে আরও একটি বড় অস্ত্র হয়ে উঠেছে এনডিএ সরকারের বিদ্যুৎ নীতি। ১২৫ ইউনিট পর্যন্ত বিনামূল্যে বিদ্যুৎ দেওয়ার ঘোষণা প্রত্যন্ত এলাকার মানুষের জীবনে প্রত্যক্ষ প্রভাব ফেলেছে। বিদ্যুৎই যেখানে জীবনের অপরিহার্য অংশ, সেখানে কোনও আর্থিক বোঝা ছাড়াই এই সুবিধা পাওয়া জনগণের কাছে অত্যন্ত বড় বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। গ্রামের অসংখ্য পরিবারে এই স্কিমের ইতিবাচক প্রতিফলন পড়ে, যা সরাসরি ভোটের বাক্সে যুক্ত হয়েছে এনডিএ-র পক্ষে।

এই উন্নয়নমূলক প্রতিশ্রুতির পাশাপাশি বিহারে (Bihar) প্রচারের ময়দানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের উপস্থিতি এনডিএ-র শক্তিকে বহুগুণ বাড়িয়েছে। তাঁদের বারবারের প্রচারসভায় তুলে ধরা হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের উন্নয়ন কাজ এবং রাজ্যকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি। একই সঙ্গে আরজেডি আমলের ‘জঙ্গলরাজ’ নিয়ে ভোটারদের মনে আবারও স্মৃতি জাগানো হয়েছে। মোদীর ভাষণে ‘কাট্টা’ শব্দের উল্লেখ কিংবা আইনশৃঙ্খলার দুরবস্থার নানা উদাহরণ জনসভায় বারবার উঠে এসেছে। এর উদ্দেশ্য ছিল একটাই—ভোটারদের মনে নিরাপত্তা-হীনতার স্মৃতি জাগিয়ে এনডিএ-র স্থিতিশীলতার বার্তা পৌঁছে দেওয়া।

By what magic power did NDA win in Bihar.যে

আরও পড়ুন:জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী থেকে বিহারের সর্বকনিষ্ঠ বিধায়ক হওয়ার দৌড়! মৈথিলী ঠাকুরের সফর চমকে দেবে

অন্যদিকে, ভোটার তালিকার নির্ভুলকরণ বা SIR বিষয়টি যে বড় ভূমিকা নেবে বলে ধরে নেওয়া হয়েছিল, বাস্তবে তা ততটা প্রভাব ফেলেনি। বরং প্রভাব ফেলেছে সুনির্দিষ্ট আর্থিক সুবিধা, উন্নয়ন প্রকল্পের ছাপ এবং মোদী-নীতীশ নেতৃত্বের বিশ্বাসযোগ্যতা। এই সব কিছুর মিলিত প্রভাবে বিহারের (Bihar) মানুষ উন্নয়নের দিকেই ঝুঁকেছে, যা এনডিএ-র পক্ষে তৈরি করেছে বিশাল ব্যবধান।

মোটের উপর, এবারের বিহার (Bihar) নির্বাচন দেখিয়ে দিল যে সংগঠিত প্রচার, স্পষ্ট প্রতিশ্রুতি এবং লক্ষ্যভিত্তিক কল্যাণনীতি মিললে ভোটারদের মন জয় করা কঠিন নয়। উন্নয়নের এই স্রোতে ভেসেই রাজ্যে আবারও ক্ষমতার আসনে ফিরে আসছে এনডিএ।