বাংলা হান্ট ডেস্কঃ নিয়োগ মামলায় (Recruitment Scam) ট্রায়াল শুরু হয়নি, এবার এই নিয়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইকে ভর্ৎসনা করল কলকাতা হাই কোর্ট! বিচারপ্রক্রিয়া যদি দ্রুত না হয়, তাহলে দোষীরা শাস্তি পাবে না। যে কারণে সার্বিকভাবে অর্থহীন হয়ে পড়বে বিচারব্যবস্থা। সোমবার নিয়োগ মামলার শুনানিতে এমনই পর্যবেক্ষণ হাই কোর্টের (Calcutta High Court)।
আজ নিয়োগ মামলায় ধৃত নীলাদ্রি সাহা (Niladri Saha) এবং কুন্তল ঘোষের (Kuntal Ghosh) জামিল মামলার শুনানি ছিল হাই কোর্টে। সেখানে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইকে (CBI) দ্রুত দুই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে তদন্তের বিশদ রিপোর্ট পেশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। পাশাপাশি দুই অভিযুক্তের জামিনের আর্জিও খারিজ করে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি ও বিচারপতি অজয়কুমার গুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চ।
নিয়োগ মামলায় কুন্তল ঘোষ এবং নীলাদ্রি সাহাকে গ্রেফতার করে সিবিআই। আজ হাই কোর্টে তাঁদের জামিন মামলারই শুনানি ছিল। সেই শুনানি চলাকালীন বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি বলেন, যদি দুর্নীতির অভিযোগ আছে তাহলে শীঘ্রই তদন্ত শেষ করে বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। যদি এমনটা না হয় তাহলে দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়ে তোলা কখনওই সম্ভব হবে না। নিয়োগ মামলায় ইতিমধ্যেই সিবিআই চার্জশিট পেশ করেছে। তবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবী জানায়, এখনও তদন্তের কিছু কাজ বাকি রয়েছে। একথা শুনে উষ্মা প্রকাশ করেন হাই কোর্টের বিচারপতি। সিবিআইকে ভর্ৎসনার পাশাপাশি নিয়োগ মামলায় দ্রুত বিচার প্রক্রিয়া শুরুর নির্দেশও দেওয়া হয়।
আরও পড়ুনঃ ফের মুখ পুড়ল রাজ্যের! শাহজাহান মামলায় বিরাট নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের, হাসছে CBI
এই মামলার অন্যতম অভিযুক্ত কুন্তল ঘোষের আইনজীবী বলেন, বিগত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে জেলবন্দি কুন্তল। সিবিআই তদন্ত প্রক্রিয়া এগোচ্ছে না। পাশাপাশি কুন্তলের বিরুদ্ধে পর্যাপ্ত প্রমাণের অভাব রয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। অন্যদিকে নীলাদ্রির আইনজীবী আবার বলেন, নীলাদ্রির বিরুদ্ধে কোনও গুরুতর অভিযোগ নেই। সেই কারণে তাঁকে যেন জামিন দেওয়া হয়। এরপর নিয়োগ মামলায় তদন্ত কতদূর এগিয়েছে সেটা জানতে চায় হাই কোর্ট।
সিবিআইয়ের আইনজীবী জানান, চাকরি দেওয়ার নামে নিয়োগ দুর্নীতিতে প্রায় ৪ কোটি টাকা তোলা হয়েছে। এর মধ্যে স্বল্প পরিমাণ টাকা ফেরত দেওয়া হলেও বাকি অর্থ এখনও অবধি ফেরত হয়নি। এছাড়া আরও টাকা তোলা হয়েছে কিনা তা তদন্তসাপেক্ষ বলে জানান তিনি। এমতাবস্থায় অভিযুক্তদের জামিন হলে তদন্তের লোকসান হতে পারে বলে দাবি করেন তিনি।
এরপর কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবীর উদ্দেশে জাস্টিস বাগচি বলেন, ‘আমি যদি কোনও জনপ্রতিনিধির নাম করে কোনও ব্যক্তির থেকে অর্থ সংগ্রহ করি তাহলে সেটাই অপরাধ। সেই জনপ্রতিনিধির সঙ্গে আমার যোগাযোগ রয়েছে কিনা সেটা ধর্তব্যের বিষয় নয়। এখনও ট্রায়াল শুরু হয়নি। দুর্নীতি দমন আইনের ধারা যুক্ত করার বিষয়ে হয় তদন্তকারীরা অজ্ঞতা দেখিয়েছেন, নাহলে অভিযুক্তদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে তাঁরা কাজ করছেন’। এরপর নিয়োগ মামলায় সিবিআইয়ের থেকে বিস্তারিত রিপোর্ট তলব করে হাই কোর্ট। আগামী ১ এপ্রিল মামলার পরবর্তী শুনানি। সেদিনই রিপোর্ট জমা দিতে হবে।