কলকাতা পুরসভার ওপর চরম ক্ষুব্ধ! শেষমেষ জনস্বার্থ মামলায় কী রায় দিলেন প্রধান বিচাপতি?

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ জোকা–বিবাদী বাগ মেট্রো রেল সম্প্রসারণ করার জন্য নির্বিচারে গাছ কাটা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করে এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। সবুজকে বাঁচাতে গাছ কাটা বন্ধ করার দাবি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের দায়ের হয় জনস্বার্থ মামলা। সেই মামলাতেই কলকাতা পুরসভার রিপোর্ট না পেয়ে বিরক্তি প্রকাশ করেছিল উচ্চ আদালত (Calcutta High Court)।

আগের শুনানিতে রাজ্য সরকার, সেনাবাহিনী, কেন্দ্রীয় সরকার, রেল বিকাশ নিগম, বন দফতর ও কলকাতা পুরসভার কাছ থেকে হলফনামা দিয়ে তাদের বক্তব্য তলব করেছিল প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ। সব পক্ষ থেকেই সম্প্রতি হলফনামা জমা পড়ে হাইকোর্টে। তবে কলকাতা পুরসভা হলফনামা জমা দেয়নি।

গুরুত্বপূর্ণ এক মামলায় পুরসভা কর্তৃপক্ষের এই গা-ছাড়া মনোভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করেন প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। আদালতে হলফনামা জমা দেওয়ার জন্য আরও কিছুটা সময় চায় পুরসভা। তবে আদালত সেই আর্জিতে সায় দেয়নি। হাইকোর্ট জানিয়ে দেয়, ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকার তাদের বক্তব্য জানিয়ে দিয়েছে। তাই কলকাতা পুরসভার জন্য তারা আর অপেক্ষা করবে না। গত মঙ্গলবার সেই মামলার শুনানি ছিল কলকাতা হাইকোর্টে। সর্বশেষ শুনানি শেষে মামলায় রায়দান স্থগিত রাখল উচ্চ আদালত।

এদিন শুনানিতে মামলাকারী বলেন, উন্নয়নের নামে বড় বড় গাছ কেটে তার পরিবর্তে চারাগাছ লাগিয়ে ময়দানের চরিত্রে বদল আনা হচ্ছে। ওদিকে পুরসভার আইনজীবী বলেন, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল চত্ত্বরে ২৯টি গাছ লাগানো হয়েছে। আর গোটা প্রকল্পের জন্য কাটা হয়েছে ৮০০টি গাছ। উচ্চ আদালতে রাজ্য সরকার জানিয়েছে, বিশেষ প্রযুক্তির সহযোগিতা নিয়ে বিশেষ সংস্থা দিয়ে ট্রান্সপ্লান্টেশন করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন: চোখ রাঙাচ্ছে ঘূর্ণিঝড়, রবিবারই কলকাতায় আঘাত হানতে পারে রেমাল? আবহাওয়ার খবর

প্রসঙ্গত, মোমিনপুর থেকে ধর্মতলা—মেট্রো রেলপথ নির্মাণের জন্য ময়দান এলাকায় নির্বিচারে গাছ কাটা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় ‘পিপল ইউনাইটেড ফর বেটার লিভিং ইন ক্যালকাটা’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। রেল বিকাশ নিগম লিমিটেডের বিরুদ্ধে গাছ কাটার অভিযোগ তুলে দায়ের হয় মামলা।

Calcutta High Court

স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের বক্তব্য, এই এলাকাজুড়ে মোট ৭০০ গাছ মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ কাটবে এমন তথ্য মিলেছে। সংবাদমাধ্যম থেকেই এই তথ্য পেয়েছেন তারা। প্রায় ২০০ গাছ কাটা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তারা। এর বিরুদ্ধেই আদালতের দ্বারস্থ হয় সেই সংগঠন। জানা গিয়েছে প্রথমে এই কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দিলেও পরে তা ফের করার অনুমতি দেয় আদালত। পাশাপাশি গাছ কাটার বিকল্প কেমন করে পূরণ করা হবে সেই বিষয়ে জানতে কলকাতা হাইকোর্ট সব সংস্থার থেকে হলফনামা চায়।

আদালতে মেট্রো সম্প্রসারণের জন্য ময়দান চত্বরের যে গাছ কাটা হবে তা পুনরায় প্রতিস্থাপন করা হবে দাবি করে মেট্রো কর্তৃপক্ষ। তারা আরও জানায় বনদফতরের কাছে অনুমতিও মিলেছে। তবে মামলাকারী সংস্থার দাবি, এই পদ্ধতিতে গাছ বাঁচে না। আইনেও এর কোনও সংস্থান নেই বলেই সওয়াল করা হয়। সবশেষে আপাতত রায়দান স্থগিত রেখেছে কলকাতা হাইকোর্ট।

ad

Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর