বাংলা হান্ট ডেস্কঃ এসএসসি থেকে প্রাথমিক টেট, সাম্প্রতিক সময়ে নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলায় একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে উঠে এসেছে। এরপরই সিবিআইকে (CBI) তদন্তের দায়ভার দেওয়ার পাশাপাশি অন্যান্য একাধিক কঠোর নির্দেশ জারি করেন কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Abhijit Ganguly) সিঙ্গেল বেঞ্চ। এদিন সেই রায়গুলি নিয়ে মামলার শুনানি চলাকালীন সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশই বহাল রাখল ডিভিশন বেঞ্চ।
বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের ৮৫ পাতার রায় পড়ার পাশাপাশি এদিন তাঁর সকল নির্দেশই একপ্রকার বহাল রাখলেন ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং লপিতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিবিআইকে দিয়েই দুর্নীতি মামলার তদন্ত করানোর পাশাপাশি প্রাক্তন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যকে পদ থেকে বরখাস্ত করার রায়ও বহাল রাখলো ডিভিশন বেঞ্চ। একই সঙ্গে এদিন টেট মামলায় ২৬৯ জন চাকরি প্রার্থীর নিয়োগ বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। এক্ষেত্রে অভিজিৎবাবুর নির্দেশই বহাল রাখল হাইকোর্ট। অর্থাৎ যতক্ষণ না তদন্ত শেষ হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত ওই চাকরিপ্রার্থীদের পুনরায় বহাল করা যাবে না বলেই জানিয়ে দিল তারা।
এদিন ডিভিশন বেঞ্চে মামলার শুনানি চলাকালীন বিচারপতি সুব্রত তালুকদার বলেন, নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলায় সিবিআইয়ের কাছ থেকে রিপোর্ট চাওয়ার অধিকার থাকবে সিঙ্গেল বেঞ্চের নিকট। এছাড়াও আর্থিক দিক বিবেচনা করার পাশাপাশি টেট মামলায় যে সকল বিচার প্রক্রিয়া হতে চলেছে, সেগুলিও নিয়ন্ত্রণ করবেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
উল্লেখ্য, গত জুন মাসে তৎকালীন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যকে বরখাস্ত করেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। এদিন সেই রায় বহাল রাখল ডিভিশন বেঞ্চ। একই সঙ্গে পর্ষদের জমা করা নথির বিষয়ে অভিজিৎবাবুর সন্দেহে একপ্রকার সিলমোহর দিলেন সুব্রত তালুকদার এবং লপিতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলে রাখা ভালো, সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টের তরফ থেকে পর্ষদের কাছে নিয়োগ সম্পর্কিত নথি চাওয়া হয়। পরবর্তীতে সেই নথি জমা দেওয়া হলেও তার মধ্যে বেশ কিছু অসঙ্গতি লক্ষ্য করেন বিচারপতি। পরবর্তীতে সেটি দিল্লির ফরেন্সিক দফতরে পাঠানোর নির্দেশ দেন তিনি। এদিন তাঁর সেই রায় পুনর্বহাল রাখলেন সুব্রত তালুকদার।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি প্রাথমিক টেট মামলায় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের রায়গুলিকে চ্যালেঞ্জ জানানোর মাধ্যমে ডিভিশন বেঞ্চে উপস্থিত হয় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ, রাজ্য সরকার এবং পর্ষদ থেকে অপসারিত বেশ কয়েকজন আধিকারিক। গত জুলাই মাসে এই মামলার শুনানি হলেও অবশেষে এদিন তার রায় ঘোষণা করল আদালত। এক্ষেত্রে মানিক ভট্টাচার্যকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্তে সিলমোহর দেওয়ার পাশাপাশি ২৬৯ জন চাকরি প্রার্থীর ভবিষ্যৎ নিয়েও এদিন মত প্রকাশ করে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। আদালত সূত্রে খবর, যতক্ষণ পর্যন্ত তদন্ত শেষ না হচ্ছে, সেই মুহূর্ত অব্দি উক্ত সকল চাকরিপ্রার্থীদের তাদের পদে পুনঃনিয়োগ করা যাবে না বলেই এদিন জানিয়েছে আদালত।