বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ফের অ্যাকশনে কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Calcutta High Court Justice Abhijit Ganguly)। ভুয়ো ডিরেক্টর মামলায় হেয়ার স্ট্রিট থানার ওসিকে আবারও তলব করলেন বিচারপতি। এর জন্য ওসিকে ৪৫ মিনিটের সময়ও দেন জাস্টিস গাঙ্গুলি। শুধু তাই নয়, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ওসি না হাজির হলে তাকে না সরাসরি তাকে গ্রেফতার করারও নির্দেশ দেবেন বলেও এজলাসে বসে মন্তব্য করেন বিচারপতি।
প্রাপ্য প্রভিডেন্ট ফান্ডের (PF Fraud Case) টাকা দেওয়া হচ্ছে না, এই অভিযোগ জানিয়ে ডেল্টা লিমিটেড এবং ওলিসা রিয়্যালিটি প্রাইভেট লিমিটেড নামক দুই সংস্থার বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন সংস্থারই কয়েক জন অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী। শুক্রবার এই মামলার শুনানিতেই হেয়ার স্ট্রিট থানার ওসিকে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন বিচারপতি। তবে জানা যায়, শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি আসতে পারেননি।
যদিও এরপর তদন্ত প্রক্রিয়া কতদূর এগিয়েছে তা জানতে তদন্তকারী অফিসার তলব করেন বিচারপতি। তদন্তকারী অফিসার রফিকুল হোসেনকে তলব করেন বিচারপতি। এর আগে এই মামলায় দুই সংস্থার পাঁচ জন ডিরেক্টরকে তলব করেছিলেন বিচারপতি। এসএফআইও তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল।
পাশাপাশি সিরিয়াস ফ্রড ইনভেস্টিগেশন অফিস (এসএফআইও)-কেও পাঁচ ডিরেক্টরকে জিজ্ঞাসাবাদ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি। এদিন এসএফআইও আদালতে বলেন, জুটমিলের দুই আধিকারিককে দুটি নোটিস দিতে হেয়ার স্ট্রিট থানার ওসি নির্দেশ দিয়েছিলেন। শুনে সরকারি আইনজীবীদের উদ্দেশে বিচারপতি বলেন, অবিলম্বে ওসিকে তলব করে বিকেল সাড়ে ৪টের মধ্যে আদালতে হাজির হতে বলুন।
আরও পড়ুন: লোকসভার আগেই বড় সিদ্ধান্ত! রাজ্যকে ৪ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ কেন্দ্রের, কোন খাতে এল অর্থ?
এরপর সরকারি আইনজীবীরা বিচারপতিকে জানান, যে ওসি অসুস্থ রয়েছেন। এরপর এজলাসে উপস্থিত এসএফআইওকে বিচারপতি প্রশ্ন করেন, “আপনাকে যদি ওসি না বলতেন তাহলে কি আপনি দুই আধিকারিককে নোটিস দিতেন?” এ কথা শুনে এসএফআইও চুপ করে থাকলে বেজায় ক্ষুব্ধ হন বিচারপতি। বলেন, “ যদি মিথ্যা বলেন তাহলে আজ আপনার উর্দি খুলে নেব যদি। সত্যি বলুন।”
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “যদিও হেয়ার স্ট্রিট থানার অফিসার ইনচার্জ আজ কোর্টে উপস্থিত না হয়, তাহলে আমি ওসিকে গ্রেফতার করে নিয়ে আসার নির্দেশ দেব।” এরপরই হেয়ার স্ট্রিট থানার পুলিশের ইস্যু করা দুটি নোটিস খারিজ করে দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। পাশাপাশি স্পষ্ট করে তিনি জানান এই মামলায় শুধুমাত্র এসএফআইও ও ইডি যৌথভাবে তদন্ত করবে।
এসএফআইও জানিয়েছিল, দুই সংস্থার পাঁচ ডিরেক্টরকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জুট মিলের মালিক সুনীল ঝুনঝুনওয়ালা ও তার ঘনিষ্ঠ আরও কিছু নাম উঠে এসেছে। আদালতের নির্দেশ মতই তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তারা জানিয়েছেন, মাসিক ২০ হাজার টাকা বেতনের বিনিময়ে কোম্পানি তাদের ডিরেক্টর নিযুক্ত করেছিল। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের কাগজপত্রে সই করতে পারতেন না তারা।
এর আগে, শ্রমিকদের পিএফের টাকা প্রতারণা মামলায় গত মঙ্গলবার সকাল থেকে একাধিক জায়গায় ম্যারাথন তল্লাশি চালিয়েছে ইডি। জুট মিলে ভুয়ো ডিরেক্টর নিয়োগ মামলায় একযোগে তিন জায়গায় হানা দেয় ইডি। ২/১ ব্রাইট স্ট্রিট, বালিগঞ্জে সুনীল ঝুনঝুনওয়ালার বাড়িতে ইডির অভিযান চলে। ওদিকে হাওড়ার সাঁকরাইলের ডেল্টা জুটমিল, বালিগঞ্জে জুটমিল মালিকের বাড়ি এবং কলকাতার কাউন্সিল হাউস স্ট্রিটে ‘ডেল্টা’ সংস্থার অফিসে কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে তল্লাশি চালায় ইডি।