বাংলা হান্ট ডেস্কঃ টানাপোড়েনের জেরে দীর্ঘদিন আটকে ছিল অবসরপ্রাপ্ত কর্মীর প্রাপ্য। অবশেষে হাইকোর্টের (Calcutta High Court) গুঁতো খেয়ে মাত্র ৫ দিনে কাটল ১৪ বছরের পুরোনো জট। পুরদপ্তরের দুই শীর্ষ আমলার বেতন বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি সিনহা (Justice Amrita Sinha)। আর তাতেই হল কাজ।
১৯৮৬ সালে রিষড়া পুরসভায় মজদুরের চাকরিতে যোগ দেন অমল চক্রবর্তী। ১৪ বছর অস্থায়ী কর্মী হিসাবে চাকরি করার পর ২০০০ সালের ২০ এপ্রিল স্থায়ী কর্মীর পদ পান। ২০১০ সালের ৩১ ডিসেম্বর স্থায়ী কর্মী হিসেবে অবসর নেন। এরপর পেনশন ও অবসরকালীন প্রাপ্যের জন্য যথারীতি আবেদন করেন। কিন্তু পুর কর্তৃপক্ষ তার আবেদন খারিজ করে। সুরাহা পেতে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন অমলবাবু।
এরপর দীর্ঘ চার বছর পর হাইকোর্টের বিচারপতি শম্পা সরকারের সিঙ্গেল বেঞ্চ পুর ও নগরোরন্নয়ন দপ্তরের প্রধান সচিবকে অমলবাবুর বিষয়টি বিবেচনা করে যথাযত পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেন। সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে যায় রাজ্য। ডিভিশন বেঞ্চ সিঙ্গেল বেঞ্চের রায়েই শীলমোহর দেয়। তবে তারপরও কাটেনি জট।
২০২১ সালে পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তরের প্রধান সচিব জানিয়ে দেন, স্থায়ী কর্মী হিসাবে কাজে ২ মাস ১৮ দিনের ঘাটতি রয়েছে অমলবাবুর তাই তিনি পেনশন ও অবসরকালীন ভাতা পাবেন না। এরপর ফের হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ওই কর্মী। মামলা ওঠে বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে। বিচারপতি সিনহা পর্যবেক্ষণে জানান, মামলাকারী ২৪ বছর ধরে কাজ করেছেন। হাইকোর্টের নির্দেশকে গুরুত্ব না দিয়েই মামলাকারীকে বঞ্চিত করেছেন প্রধান সচিব। তাই আর দেরি না করে মামলাকারীর প্রাপ্য মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারপতি।
তবে তারপরও লাভ হয়নি। আদালতের নির্দেশে কান না দেওয়ায় অবমাননার মামলা দায়ের হয়। দীর্ঘ এই টানাপোড়েনের মাঝেই মৃত্যু হয় অমলবাবুর। পরে এই মামলায় পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তরের তৎকালীন প্রধান সচিব ও বর্তমান সচিব বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করে তাদের সশরীরে হাজিরার নির্দেশ দেন জাস্টিস সিনহা। গোটা ঘটনায় তীব্র ক্ষোভপ্রকাশ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: ‘অনেকখানি ডিএ..,’ নয়া বছরের শুরুর দিনই DA মামলা নিয়ে বড় আপডেট
নিজের পদক্ষেপের স্বপক্ষে উপযুক্ত কারণ ব্যাখ্যা না দিতে পারায় বিচারপতি সিনহা বিরাট নির্দেশ দেন। বলেন যতদিন না পর্যন্ত মামলাকারীর বকেয়া মেটানো হচ্ছে ততদিন ওই দুই শীর্ষ পদের আমলার বেতন বন্ধ থাকবে। এরপরই মাত্র ৫ দিনে ওই বৃদ্ধার স্ত্রীর অ্যাকাউন্টে প্রাপ্য বাবদ যাবতীয় সমস্ত অর্থ মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে।