বাংলা হান্ট ডেস্কঃ কখনও কর্মবিরতি কখনও অনুপস্থিত অফিসার! এবার এই সমস্ত ইস্যু নিয়ে ক্ষুব্ধ হাইকোর্টের (Calcutta High Court) দুই বিচারপতির বেঞ্চ। কলকাতা হাইকোর্টে কর্মসংস্কৃতি নিয়েই এবার প্রশ্ন তুললেন বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি সব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ। ভরা এজলাসে বসে জাস্টিস বসকের মন্তব্য, ‘প্র্যাকটিস থেকে দেখছি আমাদের মান পড়ে যাচ্ছে। কলকাতা হাইকোর্ট মণিমাণিক্যে ভরা। একদিকে সাড়ে ১০টায় কর্মবিরতি করে দেওয়া, আবার আইনজীবী, বিচারপতি, কোর্ট অফিসার সকলেরই সময়–জ্ঞানের অভাব। শৃঙ্খলা মেনে চলুন সকলে।’
ভরা এজলাসে ক্ষোভে ফেটে পড়লেন হাইকোর্টের দুই বিচারপতি (Calcutta High Court)
ঠিক কী ঘটেছিল? শুক্রবার ইষ্টার্ন কোলফিল্ডস লিমিটেডের (ইসিএল) একটি মামলায় সংস্থার সিএমডি সকাল সাড়ে ১০টায় ওথ কমিশনারের অফিসে যান। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশেই সেখানে যান সিএমডি। তবে গিয়েও কোনো সুরাহা হয়নি। হলফনামা জমা দিয়ে সই করতে গেলে তিনি দেখেন কাজের সময়ে কোনও অফিসারই সেখানে নেই। যা শুনেই বিস্মিত বিচারপতি বসাক। তার মন্তব্য, ‘এটা কী করে সম্ভব!’
এই ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন দুই বিচারপতি। বলেন, বিচারপতিরা যদি সকাল সাড়ে ১০টায় এসে এজলাসে বসতে পারেন, তাহলে অফিসারদের অসুবিধা কোথায়? কেন অফিসারেরা সময় মেনে হাজির হবেন না? কেন একজন উচ্চপদস্থ অফিসার সময় মতো এসেও সই করতে পারবেন না? প্রশ্ন বিচারপতিদের।
প্রসঙ্গত, সকাল পৌনে ১১টা নাগাদ শুনানিতে ইসিএলের সিএমডি’র হলফনামা কেন নথিবদ্ধ করা হয়নি? আইনজীবী তথা কলকাতা হাইকোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদককে সেই প্রশ্ন করা হতেই সামনে চলে আসে সত্যিটা। তিনি বলেন, তার মক্কেল সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ ওথ কমিশনারের ঘরের সামনে যান। কিন্তু কেউ সেখানে উপস্থিত না থাকায় তিনি সই করে হলফনামা জমা দিতে পারেননি।
আরও পড়ুন: কাঙ্খিত DA মেলেনি! এরই মাঝে হঠাৎ বদলে গেল প্রভিডেন্ট ফান্ডের নিয়ম, বিজ্ঞপ্তি জারি করল রাজ্য
এরপরই রেজিস্ট্রার অ্যাডমিনিস্ট্রেশনকে তলব করেন বিচারপতি। আসেন ওথ কমিশনাররাও। তবে তাদের দাবি, সকলে ছিলেন না ঠিকই কিন্তু দু’জন ওথ কমিশনার হাজির ছিলেন। হয়তো তাদেরকে ওই অফিসার দেখতে পাননি। যা শুনে ক্ষোভে ফেটে পড়েন জাস্টিস বসাক। বলেন, ‘উপস্থিত যে ছিলেন তার কোনও প্রমাণ আছে? সিসিটিভির ফুটেজ দেখান।’ তবে সেখানে সিসিটিভি ক্যামেরা নেই বলে জানানো হয়। বিচারপতি আরও বলেন, ‘একজন চেয়ারম্যান মিথ্যে বলছেন এটা ভাবার কোনও কারণ নেই।’
গোটা ঘটনায় এইসব অফিসারদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার আশ্বাস দেন রেজিস্ট্রার অ্যাডমিনিস্ট্রেশন। একথা শুনে বিচারপতিদের নির্দেশ, কী পদক্ষেপ করা হয়েছে সেটা পরবর্তী শুনানিতে আদালতে জানাতে হবে। ৬ অগাস্ট মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে।