বাংলা হান্ট ডেস্ক: রাতারাতি উধাও ৩০০ টির বেশি প্রাণী আলিপুর চিড়িয়াখানায় থেকে (Alipore Zoo)। এই প্রসঙ্গে আলিপুর চিড়িয়াখানার বিরুদ্ধে বেআইনি বাণিজ্য ও জমি বেচার অভিযোগ তুলে হাইকোর্টে মামলা (Calcutta High Court) করেছে শহরের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। এমনকি বাস্তবে কী হয়েছে তার উত্তর নেই কার কাছে। সবটাই তো খাতায়-কলমে। তবে ভারতের বিভিন্ন চিড়িয়াখানাগুলোর মধ্যে কোন চিড়িয়াখানায় কোন প্রজাতির কতগুলো করে প্রাণী রয়েছে, তার রিপোর্ট প্রতি বছর প্রকাশ করে সেন্ট্রাল জ়ু অথরিটি। এবার সেই ‘অ্যানুয়াল ইনভেন্টরি অফ অ্যানিম্যালসে’ রয়েছে চাঞ্চল্যকর হিসেব।
আলিপুর চিড়িয়াখানায় থেকে উধাও বিপন্ন প্রজাতির ৩০০টির বেশি প্রাণী, ৩০বছরের হিসেবে গড়মিল (Calcutta High Court)
কলকাতার আলিপুর চিড়িয়াখানায় নিখোঁজ ৩২১ প্রাণী। পাশাপাশি ৩০ বছরের হিসেবেও রয়েছে গোলমাল। এই প্রসঙ্গে হাইকোর্টে মামলা করেছে এনজিও। এছাড়াও আলিপুর চিড়িয়াখানার (Alipore Zoo) বিরুদ্ধে উঠছে বেআইনি বাণিজ্য ও জমি বেচার অভিযোগও। আর এমনই অভিযোগ তুলে হাইকোর্টে মামলা করেছে ‘স্বজন’ (Swazon) নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। তাদের দাবি, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের শেষে চিড়িয়াখানায় ৬৭২টি প্রাণী ছিল, কিন্তু ঠিক পরের দিন অর্থাৎ ২০২৪-২৫ অর্থবছরের শুরুতে এই সংখ্যা নেমে আসে ৩৫১-এ। মাত্র একরাতেই গায়েব ৩২১টি প্রাণী।
সূত্রের খবর, এই বিপুল পরিমাণ গরমিল ধরা পড়েছে কেন্দ্রীয় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ (CZA)-এর বার্ষিক ‘Annual Inventory of Animals in Zoos’ রিপোর্ট থেকে। এই রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে ১ জুলাই কলকাতা হাইকোর্টে পিটিশন জমা দিয়েছে ওই সংস্থা। জানা যায়, ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের শেষে চিড়িয়াখানায় মোট ৬৭২টি প্রাণী ছিল। কিন্তু পরে অর্থাৎ ২০২৪-২৫ অর্থবছরের শুরুতে এই সংখ্যা নেমে আসে ৩৫১-এ। এই সংখ্যা নেমে যাওয়ায় চাঞ্চল্য তৈরি হয়।
উল্লেখ্য, সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘দ্য প্রিন্ট’-এর একটি বিশ্লেষণে উঠে এসেছে, ১৯৯৫-৯৬ অর্থবছর থেকে শুরু করে ২০২৫ পর্যন্ত প্রায় প্রতি বছরই চিড়িয়াখানার প্রাণী সংখ্যার বার্ষিক রিপোর্টে গরমিল দেখা গেছে। কখনও ৫টা, কখনও ১০টা, আবার কখনও ২০০-৩০০টি প্রাণী কখনো বেড়েছে আবার কখনো কমেছে অজানা কারণে। আর এই প্রাণিসংখ্যা কমার হিসেব লক্ষ্য করা যাচ্ছে প্রতি বছরে। এই বিষয়ে বিশ্ব অ্যানিমাল প্রোটেকশন ইন্ডিয়ার ওয়াইল্ডলাইফ রিসার্চ ম্যানেজার শুভব্রত ঘোষ বলেছেন, এই অস্বাভাবিক সংখ্যায় প্রাণী গায়েব হওয়া শুধু প্রশাসনিক গাফিলতির নয়, বরং অবৈধ বন্যপ্রাণী পাচারের ইঙ্গিতও দিতে পারে।
আরও পড়ুন: ভাঁপা বা পাতুরি নয়, পাবদা মাছ দিয়ে বানিয়ে ফেলুন ভিন্নস্বাদের এই পদ, রইল সহজ রেসিপি
প্রসঙ্গত, দেশের সবকটি চিড়িয়াখানার শীর্ষ নিয়ামক সংস্থা হল ‘সেন্ট্রাল জু অথরিটি’। তাদের অ্যানুয়াল ইনভেন্টরি অফ অ্যানিম্যালস ইন ইন্ডিয়ান জ়ুজ়, ২০২৪–২৫’–এর যে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে, তাতে আলিপুর চিড়িয়াখানার তালিকায় বাঘ, সিংহ, সাদা বাঘ, গন্ডার, হাতির মতো অন্য অনেক প্রাণীরই নাম নেই। প্রসঙ্গত, উত্তরবঙ্গের বেঙ্গল সাফারিকে জনপ্রিয় করতে আলিপুর চিড়িয়াখানা থেকে কিছুদিন আগে গ্রিন করিডরের মাধ্যমে রাজ্যের উত্তরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ১৮টি প্রাণীকে। এই ১৮টি প্রাণীর মধ্যে ছিল দু’টি ঘড়িয়াল, দু’টি হিমালয়ান ব্ল্যাক বেয়ার, দু’টো ইন্ডিয়ান ওয়াইল্ড ডগ বা ঢোলও।