বাংলা হান্ট ডেস্কঃ পূর্ব মেদিনীপুরের খেজুরিতে জলসা দেখতে গিয়ে উদ্ধার হয়েছিল দুই বিজেপি কর্মী সুজিত দাস ও সুধীর পাইকের দেহ। প্রথম থেকেই পরিবার খুনের অভিযোগ তুলেছিল। তবে পুলিশের দাবি ছিল, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়েই মৃত্যু হয়েছে তাঁদের। কিন্তু দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের রিপোর্টে ভিন্ন তথ্য উঠে আসায় মঙ্গলবার কলকাতা হাই কোর্টে (Calcutta High Court) বিস্ময় প্রকাশ করেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ।
দুই ময়নাতদন্তের রিপোর্টে দু’রকম আলাদা তথ্যে বিরক্ত হাই কোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি
প্রথম ময়নাতদন্তে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ জানিয়েছিল, মৃত্যু হয়েছে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে। কিন্তু কলকাতার SSKM হাসপাতালে হওয়া ময়নাতদন্তের দ্বিতীয় রিপোর্টে উঠে আসে দেহে আঘাতের চিহ্নের কথা। বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ এদিন স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “এই মামলা নিয়ে আমি খুব বিরক্ত।” তাঁর প্রশ্ন, দুই রিপোর্টে এরকম তফাৎ কেন?
এদিন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ বলেন, “মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের রিপোর্টের সঙ্গে SSKM-এর রিপোর্টের বিস্তর পার্থক্য রয়েছে। এরকম কেন হবে? জেলার ফরেন্সিক আধিকারিকরা কি অভিজ্ঞ নন? নাকি তাদের স্থানীয় ব্যক্তিদের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে?” বিচারপতি এও জানান, “আগে আপনারা বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়েছে ধরে নিয়ে তদন্ত করছিলেন, কিন্তু এখন তো খুনের ধারায় মামলা হবে। পুরো তদন্তের গতিপথ পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে।”
এই পরিস্থিতিতে ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক ও তদন্তকারী আধিকারিকদের ভূমিকা নিয়েও আদালতে (Calcutta High Court) প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি। এদিন বিচারপতি স্পষ্ট বলেন, “তদন্তকারী সংস্থায় পরিবর্তন করতে হবে। উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্তাদের নিযুক্ত করতে হবে।” বিচারপতির এই মন্তব্যের পর আদালতের পর্যবেক্ষণ ঘিরে নতুন করে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ টানা একমাস ‘বন্দি’ থাকলেই সরতে হবে পদ থেকে, প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রীদের জন্য আসছে ‘বিতর্কিত’ বিল
উল্লেখ্য, জুলাই মাসে খেজুরিতে বিজেপি কর্মী সুজিত দাস ও সুধীর পাইকের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। পরিবার খুনের অভিযোগ তুললেও পুলিশ দাবি করে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়েই মৃত্যু। দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের আবেদন শেষ পর্যন্ত অনুমোদন করে হাই কোর্টের (Calcutta High Court) ডিভিশন বেঞ্চ। সেই রিপোর্টেই উঠে আসে নতুন তথ্য, যা এখন তদন্তের গতিপথ বদলে দিয়েছে। জানা যাচ্ছে, এই ঘটনার তদন্ত এখন আদালতের নির্দেশেই এগোবে।