এক কোটির বাঁধ কিভাবে কয়েকদিনে ভেঙে গেল? দু’সপ্তাহের মধ্যে রাজ্যের রিপোর্ট তলব করল হাইকোর্ট

Published on:

Published on:

calcutta high court(43)

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বিদায়বেলাতেও খেল দেখাচ্ছে বর্ষা। সমানে বৃষ্টি চলছে। জলমগ্ন হয়ে পড়েছে একাধিক এলাকা। নদীতে হু হু করে বেড়েছে জলস্তর। এরই মধ্যে মালদার ভূতনিতে কাটা বাঁধ ভেঙে বন্যা। যার জেরে ঘরছাড়া বহু। এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা জানতে এবার রাজ্যের রিপোর্ট তলব করল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)।

বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্যের রিপোর্ট চাইল আদালত | Calcutta High Court

বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সুজয় পাল এবং বিচারপতি স্মিতা দাস দে-র ডিভিশন বেঞ্চে এই সংক্রান্ত মামলা উঠলে আদালতের নির্দেশ, বন্যায় মৃতদের পরিবার এবং ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যাপারে রাজ্য কী ভাবছে তা লিখিত আকারে জানাতে হবে।

পাশাপাশি হাইকোর্টের প্রশ্ন, কীভাবে বছরখানেক আগেই তৈরি কোটি টাকার কাটা বাঁধ ভেঙে গেল? এই নিয়ে রাজ্যকে অনুসন্ধান করে দু’সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা আকারে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ডিভিশন বেঞ্চের কথায়, কীভাবে একটি নবনির্মিত বাঁধ এভাবে ভেঙে পড়ল, কোনও তদন্ত করা হয়েছে কী? আপনারা রিপোর্ট দিয়ে দু’সপ্তাহের মধ্যে জানান।

পাশাপাশি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা, প্রয়োজনীয় আশ্রয়, খাদ্যদ্রব্য এবং ওষুধের যাবতীয় ব্যবস্থা করার জন্য রাজ্যকে নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। বন্যা পরিস্থিতি থেকে যাতে কোনও রকম রোগ না ছড়ায় সেই বিষয়েও নজরদারি করার নির্দেশ হাইকোর্টের। অবিলম্বে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়ায় জন্য প্রশাসনকে নির্দেশ বিচারপতির।

আদালতে মামলাকারীর অভিযোগ ছিল, ফুলহর ও গঙ্গা নদী দ্বারা বেষ্টিত মালদার ভূতনি এলাকায় প্রতি বছরই বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। তবে তা রুখতে প্রশাসনের তরফে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়না বলে অভিযোগ। বন্যা ঠেকাতে কাটা বাঁধ তৈরি করলেও অগস্ট মাসে তা বর্ষার জলের চাপে ভেঙে যায়। অভিযোগ, সরকার বলছে ওই বাঁধ প্রায় এক কোটি ৩৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ। কিন্তু বাস্তবে অত্যন্ত নিম্নমানের উপাদান ব্যবহার করার ফলে ওই বাঁধ ভেঙে যায় বলে অভিযোগ।

বন্যা পরিস্থিতিতে কীভাবে সাধারণ মানুষ ঘরছাড়া হয়েছেন, কীভাবে তাঁদের দিন কাটাতে হচ্ছে সেই বিষয় তুলে ধরেন মামলাকারী। তাঁর আরও অভিযোগ, ত্রাণ সামগ্রী দেওয়া হলেও বৈষম্য করা হচ্ছে হচ্ছে। রাজ্য সরকারের ভূমিকায় প্রশ্ন তোলা হয়। মামলাকারীর অভিযোগ, একই ভাবে আরও নদী বাঁধ ও নদীর পাড় বাঁধানোর কাজও অত্যন্ত নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। তিনজনের প্রাণহানির অভিযোগ করা হয় আদালতে।

Calcutta High Court

আরও পড়ুন: দীপাবলির আগেই DA ঢুকে যাবে অ্যাকাউন্টে? সরকারি কর্মীদের জন্য বড় সুখবর আসছে

মামলাকারীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে রাজ্যের এজি বলেন, “বন্যায় গৃহহীনদের ত্রাণ শিবিরে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাদের খাবারের প্যাকেট দেওয়া হচ্ছে। বন্যা কবলিত এলাকার লোকজনকে সুরক্ষিত জায়গায় সরানোর কাজ চলছে। বিদ্যুৎ পরিষেবার জন্য জেনারেটরের পাশাপাশি ২৪ ঘণ্টার অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা রেখেছে রাজ্য। ”

এজি আরও জানান, “বন্যা কবলিত এলাকায় নৌকো নামানো হয়েছে। প্রয়োজনীয় ওষুধপত্রের সরোবরাহ করা হচ্ছে। নলকূপ বসিয়ে পানীয় জল দেওয়া হচ্ছে। যাঁদের সাপে কামড়েছে তাদের প্রয়োজনীয় ওষুধপথ্যও দেওয়া হচ্ছে।”