বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সম্প্রতি ৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। শুক্রবার ঘোষিত এই রায়ে আদালত জানিয়েছে, বিশেষ যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষকরা আর ‘অপ্রশিক্ষিত’ হিসেবে গণ্য হবেন না। ফলে তাদের চাকরি সুরক্ষিত থাকবে এবং বেতনসহ সমস্ত সুবিধাও পাবেন তাঁরা।
হাই কোর্টের (Calcutta High Court) নজরে মামলার সূচনা
প্রসঙ্গত, এই মামলার সূচনা ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়া থেকে। তখন বহু প্রার্থীকে ডিপ্লোমা ইন এডুকেশন যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও ‘অপ্রশিক্ষিত’ শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ করা হয়। পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ সেই সময় এই বিশেষ যোগ্যতাকে প্রশিক্ষণের সমতুল্য বলে স্বীকৃতি দেয়নি। এর ফলে বহু শিক্ষক বেতন এবং অন্যান্য সুবিধা থেকে বঞ্চিত হন।
এরপর বিষয়টি আদালতে ওঠে এবং ২০১৭ সালের ১লা মার্চ কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta High Court) একক বেঞ্চ রায় দেয় ডিপ্লোমা ইন এডুকেশন যোগ্যতা সম্পন্ন প্রার্থীদের প্রশিক্ষিত হিসেবেই গণ্য করতে হবে। সেই রায় অনুযায়ী, ওই শিক্ষকরা প্রশিক্ষিত শিক্ষকদের মতোই বেতন এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পেতে শুরু করেন। কিন্তু ২০২২ সালের ২৮শে নভেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ নতুন তালিকা প্রকাশ করে, যেখানে এই শিক্ষকদের আবারও ‘অপ্রশিক্ষিত’ হিসেবে দেখানো হয়। এতে চাকরি বাতিলের আশঙ্কা তৈরি হয়, কারণ সেইসময় ৩২,০০০ ‘অপ্রশিক্ষিত’ শিক্ষকের চাকরি বাতিলের প্রক্রিয়া চলছিল।
পরিস্থিতি জটিল হওয়ায় শিক্ষকেরা ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন। শুনানিতে পর্ষদ স্বীকার করে যে ২০২২ সালের তালিকাটি তাড়াহুড়ো করে প্রকাশ করা হয়েছিল এবং তাতে ভুল ছিল। এর পাশাপাশি জানায়, আবেদনকারীদের কোনও ক্ষতি হবে না। এই সময় সমস্ত দিক বিচার বিবেচনা করে আদালত (Calcutta High Court) বিশেষ কিছু নির্দেশ দেয়। সেগুলি হল-
- আবেদনকারীদের প্রশিক্ষিত সহকারী শিক্ষক হিসেবেই গণ্য করতে হবে।
- তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী বেতনক্রম ও বকেয়া মিটিয়ে দিতে হবে।
- পর্ষদের প্রকাশিত তালিকার ভুল সংশোধন করতে হবে।
আরও পড়ুনঃ আধার কার্ড থাকলেই কি মুক্তি মিলবে SIR থেকে? খোলসা করে আদালত বলল….
কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta High Court) এই রায়ে অবশেষে স্বস্তি পেলেন বিশেষ যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষকরা। দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর তাদের মর্যাদা এবং চাকরির নিরাপত্তা নিশ্চিত হল। এই রায় শুধুমাত্র আবেদনকারীদের নয়, সমগ্র শিক্ষক সমাজের জন্যও একটি বড় বার্তা।