বাংলা হান্ট ডেস্কঃ দয়া করে মানুষদের কাজ করতে দিন! এবার এমনটাই বলল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। বিচারপতি অমৃতা সিনহার (Justice Amrita Sinha) এজলাসে একটি মামলার শুনানি ছিল। সেই শুনানি চলাকালীনই একথা বলেন তিনি। সেই সঙ্গেই রাজ্যকেও বড় নির্দেশ দেন জাস্টিস সিনহা।
কোন মামলায় এই মন্তব্য কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court)?
সম্প্রতি পরিচালক বিদুলা ভট্টাচার্য উচ্চ আদালতে একটি মামলা করেন। সেই মামলায় সবাইকে স্বাধীনভাবে কাজের সুযোগ দেওয়ার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। কিন্তু তা সত্ত্বেও কোনও কারণ ছাড়া কাজে আসেননি প্রোডাকশনের কেউ। যার জেরে আটকে যায় পরিচালক অভিজিৎ গুহ ও সুদেষ্ণা রায়ের আগামী ছবি ‘স্বপ্ন হলেও সত্যি’র কাজ।
গত ১৮ এপ্রিল থেকে শ্যুটিং শুরু হওয়ার কথা থাকলেও শ্যুট শুরু হয়নি। পরিচালক দাবি করেন, শ্যুট শুরু হওয়ার মাত্র ৬ দিন আগে প্রোডাকশন ম্যানেজার এই প্রোজেক্ট ছেড়ে দেন। কোনও কারণ না বলেই কাজ ছেড়ে বেরিয়ে যান তিনি। আদালতের তরফ থেকে নির্দেশ দেওয়া হলেও কেন কেউ শ্যুটিংয়ে আসেননি? প্রশ্ন তোলেন সুদেষ্ণা। এরপর সোজা ফেডারেশনের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে আদালত অবমাননার মামলা করেন টলিউডের এই জনপ্রিয় পরিচালক।
আরও পড়ুনঃ ‘দু’টো বিষয়ে বলার আছে…’! WAQF মামলায় কী নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট?
সেই মামলায় বিচারপতির প্রশ্ন, একজন নয়, একাধিক ব্যক্তি কেন ফেডারেশনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনছে? বারবার কেন কাজে বাধা সৃষ্টি করার অভিযোগ উঠছে? রাজ্যকে নোটিশ দেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি। সেই সঙ্গেই রাজ্যকে মামলার কপি সার্ভ করারও নির্দেশ দেন জাস্টিস সিনহা।
মামলাকারীর আইনজীবী সাগর বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন আদালতে বলেন, ‘স্বপ্ন হলেও সত্যির শ্যুটিং শুরুর জন্য সেট সহ সব ঠিক হয়ে গিয়েছিল। আচমকা শ্যুটিংয়ের সঙ্গে যুক্ত কর্মীরা কাজ করবেন না বলে জানিয়ে চলে যান। আগে থেকে কোনও নোটিশও দেওয়া হয়নি। যেদিন থেকে শ্যুট শুরুর কথা, সেদিন কেউ আসেননি। ফেডারেশন চাপ তৈরি করেছে’।
সেকথা শুনে ফেডারেশনের আইনজীবী পাল্টা বলেন, ‘কে কার সঙ্গে কাজ করবে সেটা ফেডারেশন ঠিক করে না। আমরা কাউকে দিয়ে জোর করে কাজও করাই না। সহকারী পরিচালকের ছেলে মারা গিয়েছে, পরিচালক সেটা জানেন না’। গিল্ডের আইনজীবী বলেন, ‘গিল্ডের তরফ থেকে কাউকে বাধা দেওয়া হচ্ছে না। যারা কাজে যোগ দেননি, তাঁদের কয়েকজনের ব্যক্তিগত অসুবিধা ছিল। পরিচালককে চিঠি দিয়ে সেটা জানানো হয়। কাউকে জোর করে কিছু করা যায় না’।
একথা শুনে বিচারপতি সিনহা বলেন, ‘একজনের ব্যক্তিগত অসুবিধা হতে পারে। কিন্তু কেউ আসবে না! হতে পারে আপনি ওদের পছন্দের কেউ। নিশ্চিত কিছু হয়েছে, নাহলে এত অসুবিধা কেন হবে? দয়া করে লোকেদের কাজ করতে দিন’।
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক অতীতে ফেডারেশনের বিরুদ্ধে একাধিকবার অভিযোগ উঠতে দেখা গিয়েছে। এবার অভিজিৎ-সুদেষ্ণার ছবির কাজ আটকাতেই ফের একবার কাঠগড়ায় ফেডারেশন। একাধিক ব্যক্তি কেন অভিযোগ আনছে? এদিন প্রশ্ন করেন হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি। সেই সঙ্গেই বড় নির্দেশ দেন জাস্টিস সিনহা।